এম ওমর ফারুক আজাদ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
দেশে এই প্রথম আবিষ্কৃত হচ্ছে উভচর যান। তাও আবার একজন আলেম বিজ্ঞানীরে হাতে। শুনতে অবাক মনে হলেও ঘটনা সত্যি। আর সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারিতেই বাস্তবে দেখতে পারবে দেশের মানুষ।
বাংলাদেশে এই প্রথম উভচর যান তৈরিতে সফল হওয়া আলেম বিজ্ঞানী হলেন সাড়া জাগানো ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী আসহাব উদ্দীন আল আজাদ।
বহুধা মেধার অধিকারী এই আলেম সঙ্গীত শিল্পীর পাশাপাশি একাধারে নাট্যকার, ফিল্ম মেকার ও অভিনেতাও। ওয়াজের মাঠেও তার খ্যাতি রয়েছে। এবার উন্মোচিত হবার অপেক্ষায় তার আরেক গৌরবদীপ্ত পরিচয়ের। আর সেই পরিচয়টি একজন আলেম বিজ্ঞানী হিসেবে।
তিনি আবিষ্কার করছেন বাংলাদেশে এই প্রথম কোন উভচর যান। যানটির ধরণ প্রাইভেটকার, নাম রাখা হয়েছে M570।
অর্থাৎ তার আবিষ্কৃত যানটি সমানতালে জলে ও স্থলে চলবে। তার জন্য দিনরাত পিরশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এখন পর্যন্ত ৭০% এগিয়েছে।
প্রকল্প অফিসে কাজ করছেন মাওলানা আসহাব উদ্দীন আল আজাদ
তবে তিনি জাতীয় গৌরবের এই কাজ শেষ করতে সরকারি-বেসরকারি, সেচ্ছাসেবি সংস্থা ও বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন।
এ বিষয়ে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আজাদ বলেন, ‘দেশের জন্য এটাই প্রথম আবিষ্কার, চার চাকা বিশিষ্ট যান, তবে উভযান। দেখলেই প্রমাণ হবে যা আগে সত্যিই হয়নি। যেমন বলা যেতে পারে, জলের মাঝখানে গাড়ির ভেতর থেকে ডুব দিয়ে বের হয়ে আবারো গাড়িতে উঠে একই জায়গা দিয়ে তাপর ড্রাইভ করা সম্ভব আল্লাহর রহমতে। এই সিস্টেমটা সেট করতে দীর্ঘ সময় লেগে গেছে।
এমন একটা প্রাইভেট কার ভাসমান প্রযুক্তিসহ আবিষ্কার করেই, নিজের প্রচেষ্টায় বানালাম! সাথে মিস্ত্রী ও হেলপার যারা তাদের সহযোগিতা কৃতজ্ঞচিত্ত। আবিস্কৃত গাড়িটি রাস্তায়ও চলবে, পানিতেও চলবে, ইনশাআল্লাহ।
ওয়ার্কশপ ও ফিটনেস ভিল্ডার মিস্ত্রীসহ সব মিলিয়ে বিশাল একটা বিল পরিশোধ এখনো বাকি রয়ে গেছে।
মাওলানা আসহাব উদ্দীন আল আজাদ কুরআন ও বিজ্ঞান গবেষনা কেন্দ্র, বাংলাদেশের অধ্যাপক। আল মিদনা শিল্পীগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান। তিনি জাপান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি (অনলাইন) ডিপার্মেন্ট থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দুই বছর কাজের মাধ্যমে তিনি এটি তৈরি করতে সক্ষম হন বলে জানান। তার প্রকল্প অফিস মুরাদপুর, চট্টগ্রামে।
আসহাব উদ্দীন আল আজাদ ২০০৪ সালে জামিয়া মাদানিয়া ষোলক বহর চট্টগ্রাম থেকে দাওরায়ে হাদিস পাস করেন। এরপর তাফসির বিভাগে পড়েন হাটহাজারী মাদরাসা থেকে। ইংরেজি শেখার জন্য তিনি এফএম মেথডে স্পোকিং কোর্স করেন।
উভচর যান তৈরির ব্যাপারে মাওলানা আসহাব উদ্দীন আল আাজদ আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমার মা থাকে গ্রামে। বাশখালির সরলে। আমি থাকি চট্টগ্রাম শহরে। মা বৃদ্ধ হয়ে গেছে। শহরে আসতে বললে বলেন, গাড়িতে ঝাঁকুনিতে সমস্যা হয়। বেশ কসরতও করতে হয় কারণ মাঝখানে নদী রয়েছে। সেখান থেকে আমার চিন্তা উভচর গাড়ি বানানোর পরিকল্পনা।
একদিন অনলাইনে জাপান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির খোঁজ পাই। সেখানে ভর্তি হয়ে যায়। অনেক টাকা খরচ করতে হয় পুরো কোর্সটি করতে। কোর্স শেষেই আমি উভচর যান তৈরির কাজে হাত দেই।
আসহাব উদ্দীন বলেন, চলতি মাসেই যানটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে। তারপর বুয়েটসহ অন্যান্য বিজ্ঞানীদের পরীক্ষা করতে দেব। চট্টগ্রামের একটি পুকুরে এটির প্রদর্শনী করবো ইনশাল্লাহ। সবকিছু ঠিক থাকলেই জানুয়ারি থেকেই রাস্তায় ও পানিতে চলতে পারবে গাড়িটি।
দেশের আলেম সমাজ যে প্রতিভাবান ও পরিশ্রমী তা মাওলানা আসহাব উদ্দীন আল আজাদ প্রমাণ করলেন তার এ শিল্পের মাধ্যমে। যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কেউ তৈরির কাজে হাত দিতে পারেনি।
তার এ কর্ম দেশের জন্য বয়ে আনুক সুমান ও খ্যাতি। সেই কামনা রইল।
মাওলানা মামুনের অনন্য আবিষ্কার; কৃত্রিম উপায়ে ধান চাষ