শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


খতিবকে অপমান করায় সেক্রেটারিকে চরম শিক্ষা মুসল্লিদের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রোকন রাইয়ান
আওয়ার ইসলাম

মসিজেদের খতিবের এক বক্তব্য পছন্দ না হওয়ায় তাকে জোর করে অব্যাহতি দিয়েছিলেন সেক্রেটারি আবদুল মতিন। তবে খতিবভক্ত মুসল্লিগণ বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। ফলে এক অন্যরকম ঘটনার সাক্ষি হয়েছে মসজিদটি।

জানা যায়, মুসল্লিরা খতিবকে অব্যহতি দেয়ায় আন্দোলন করে সেক্রেটারিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ ওই খতিবকে সেক্রেটারি করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে।

ঘটনাটি ঢাকার মিরপুর ১২’র (মারকাযুদ দাওয়া সংলগ্ন) পল্লবী ঝিলপাড় মসজিদের। এখানে খতিব হিসেবে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত দায়িত্ব পালন করে আসছেন মুফতি আবু সালেহ মুহাম্মদুল্লাহ। স্বভাবগতই তিনি আপোসহীন। মিথ্যা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনলবর্ষী। কমিটির লোকদের তোষামোদ আদতেই নেই। এজন্য সাধারণ মুসল্লীদের সাথে তার সম্পর্ক ছিল হৃদয়ের।

গত ২৫ নভেম্বর তার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি তাকে অব্যহতি দেয়।অার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রটানো হয়, তিনি সেচ্ছায় চলে গেছেন। ফলে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দলে দলে লোক তার কাছে আসতে থাকে।

মুসল্লিদের তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বলেন। একই সঙ্গে সবাইকে শান্ত হওয়ারও নির্দেশ দেন। কিন্তু খতিবকে অব্যহতির বিষয়টি জানার পর তারা তা মেনে নিতে পারেননি। তাদের বাঁধভাঙা আবেগ পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে তোলে। ধীরে ধীরে আন্দোলনে রুপ নেয়।

জানা যায়, প্রায় সহস্রাধিক লোকের এক বিশাল কাফেলা স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব গিয়াসউদ্দিন মোল্লার কাছে সমাবেত হয়ে মসজিদ কমিটি অপসারণের জোরালো দাবি জানান।

তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করে বাধ্য হয়ে কমিটি বাতিল করেন।

খবরটা স্থানীয় এমপি পর্যন্ত গড়ানোর ফলে খতিব মুফতি আবু সালেহ মুহাম্মদুল্লাহর নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়ে তিনি তাকেই সেক্রেটারি করে নতুন কমিটির ঘোষণা দেন। ফলে এলাকাবাসী ফুলেল সুভেচ্ছা দিয়ে খতিবকে নতুনভাবে বরণ করেন।

জানা যায়, এর আগেও একাধিক ইমাম খতিব বদল হয়েছে এ মসজিদে। কমিটির সঙ্গে সামান্য মত পার্থক্য হলেও বের করে দেয়া হতো খতিবকে। কিন্তু মুফতি আবু সালেহ মুহাম্মদুল্লাহর ক্ষেত্রে ঘটল বিপরীত ঘটনা। এক্ষেত্রে তার বিপুল জনপ্রিয়তার কথাই বলছেন মুসল্লিরা।

মোবাইলে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথোপকথনে খতিব মুফতি আবু সালেহ মুহাম্মদুল্লাহ বলেন, অনেক অসৎ কমিটির আহলে হক আলেমদের মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার ইতিহাস সচরাচর পাওয়া গেলেও খতিব কর্তৃক কমিটিকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার ইতিহাস বিরল। আসলে ভালবাসার কাছে সব কিছুই হার মানে।

তিনি বলেন, আমি যখন এ মসজিদের খতিব হয়ে আসি মুফতি আবদুল মালেক সাহেব আমাকে বলেছিলেন কতদিন এখানে থাকতে পারবেন জানি। এখানে অনেক খতিব বদলেছে। আল্লাহ পাকের মেহেরবানী যে সেই কমিটি এখন আর ইমাম-খতিবকে চো খ রাঙানোর দুঃসাহস দেখাতে পারবে না।

মুফতি আবু সালেহ মুহাম্মদুল্লাহ মিরপুর ৭ নম্বর জামিয়া মুহাম্মাদিয়ার নাজেমে তালিমাত। দরস দেন হাদিসের কিতাবসহ অনেক কিতাবের। ছাত্রদের কাছেও তিনি অত্যন্ত প্রিয় একজন উস্তাজ। এছাড়াও তিনি মিরপুরে নিজে একটি মাদরাসার প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাদরাসার মারকাজুস সুন্নাহ নামের মাদরাসাটি আরবি প্রথম বর্ষ পর্যন্ত পাঠ দান করছে শিক্ষার্থীদের।

মুফতি আবু সালেহ অন্য খতিব ইমামদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, নিজের সততা, ব্যবহার ও কথার মধুর্য দিয়ে মুসল্লিদের আপন করে নিতে হবে। তাহলে মসজিদের চাকরিতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে আশা করি আল্লাহ বাঁচাবেন।

বাংলাদেশের বিপদে সর্বোচ্চ দানকারী যে ব্যক্তি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ