শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ইসরাইল না ফিলিস্তিন : জেরুজালেম কার?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ১৯৮০ সন থেকে ইসরাইল দখল করে রেখেছে জেরুজালেম নামে ঐতিহাসিক ‘বাইতুল মাকদিস।’  ইসরাইলের দাবী বাইতুল মাকদিস তাদের প্রাপ্য।

এটি ইসরাইলের অবৈধ দাবীগুলোর মধ্যে অন্যতম। যেখানে ইসরাইল রাষ্ট্রই অবৈধ সেখানে ইসরাইলের দাবীটা কতটা গ্রহণযোগ্য পাঠক বিবেচনা করবেন!

বাইতুল মাকদিস বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের তৃতীয় শীর্ষ তীর্থস্থান। খৃস্টান ও ইহুদীরাও এটিকে পবিত্রস্থান হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। মুসলিম, খৃস্টান, ইহুদী তিন সম্প্রদায় ধর্মীয় বিবেচনায় বাইতুল মাকদিসকে হৃদয়ে লালন করে । কারণ, এ ত্রিজাতিগোষ্ঠির ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত স্থান বাইতুল মাকদিস।

ইতিহাস বলে, খৃস্টপূর্ব সময়ে বহুবছর বাইতুল মাকদিস ইহুদীদের অধিকারে ছিল। ইহুদীদের নবী হযরত মূসা আ. এর পূর্বপুরুষদের আদিবাস ছিল ফিলিস্তিন। সময়ের বিবর্তনে তারা মিশরে পাড়ি জমান। অতপর আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে হযরত মূসা আ.  তার অনুসারীদের নিয়ে বাইতুল মাকদিস অধিকার করেন।

তখন থেকে হিজরীপূর্ব সময় পর্যন্ত বাইতুল মাকদিস ইহুদীদের অধিকারে থাকে। খৃস্টানদের নবী হযরত ঈসা আ. আগমন করেন ইহুদী সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে ফলে তিনিও জন্মসূত্রে বাইতুল মাকদিসের অধিবাসি ছিলেন।এভাবে তাঁর অনুসারীবর্গ বাইতুল মাকদিসেই বেড়ে ওঠেন।

কালচক্রে তারা আবার ইউরুপের দিকে স্থানান্তর হতে থাকে এবং গরিষ্টসংখ্যক খৃস্টান ইউরুপে পাড়ি জমান। হযরত মুহাম্মদ সা. আগমন পরবর্তি  আরব জুড়ে খেলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

৭০০ খৃস্টাব্দের দিকে ততকালিন বাইতুল মাকদিসের অধিবাসি ইহুদী সম্প্রদায় হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব রা. এর নিকট বাইতুল মাকদিস হস্তান্তর করেন এবং হস্তান্তর পত্রে সাক্ষর করে তারা সানন্দে প্রক্রিয়াটি উদযাপন করেন। হযরত ওমর রা. আল্লাহর নামে বাইতুল মাকদিসকে খেলাফতের অধিকারভুক্ত করেন। তখন থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায়  ১৩০০ বছর বাইতুল মাকদিস মুসলমানদের অধিকারে থাকে।

১৯৪৭ সালে বৃটেন অন্যায়ভাবে বর্তমান তেলআবিবসহ ইসরাইলের অবৈধ দখলভুক্ত ফিলিস্তিনের এ অংশ অভিশপ্ত ইহুদীদের অধিবাস গড়তে সুযোগ করে দেয়। তখন থেকে ইহুদীরা বাইতুল মাকদিসের দখল নেয় এবং বাইতুল মাকদিসের নাম পরিবর্তন করে জেরুজালেম নামকরণ করে।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলের মার্কিন দুতাবাস তেলাবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করার ঘোষণা দেন। ফলে বিশ্বমুসলিমদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এবং ৬ ডিসেম্বর ট্রাম্প কর্তৃক মার্কিন দুতাবাস স্থানান্তরের কার্যকরী প্রদক্ষেপ ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাই আজকে সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে বাইতুল মাকদিস-জেরুজালেমের দিকে। আমরাও অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ট্রাম্প আজকে কী ঘটাতে যাচ্ছেন! তেলাবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দুতাবাস স্থানান্তর করার অর্থ হলো ইসরাইলের রাজধানী তেলাবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তরের জন্য সর্বপ্রথম আমেরিকার সমর্থন ব্যক্ত করা।

যা হবে ফিলিস্তিনসহ বিশ্ব মুসলিমদের উপর এক প্রবল আঘাত! এ দিকে ফিলিস্তিন চায় বাইতুল মাকদিসকে তাদের রাজধানী বানাতে। এ নিয়ে দীর্ঘ বাকবিতণ্ডার পর এখনও বিষয়টি অমিমাংসিত রয়েগেছে।

ট্রাম্প যদি আজ দুতাবাস স্থানান্তরের ঘোষণা দেয় তাহলে ফিলিস্তিন এবার জেরুজালেমের অধিকারও হারাবে। আল্লাহ না করুন, এমনটি যেন না হয়।

 

মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ