বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে ইমাম মাহদি দাবিদার শাকিলি ফেৎনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাওলাদার জহিরুল ইসলাম
সাব এডিটর

ভারতে জন্ম নেয়া ইমাম মাহদি হওয়ার দাবিদার শাকিল বিন হানিফের ফেৎনা দিন দিন বেড়েই চলছে৷ এ পর্যন্ত ভারতে ১০হাজারেরও অধিক মুসলমান সে ফেৎনার শিকার হয়ে মুরতাদ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বিশেষত ভারতের বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে এই ফেৎনা তরিৎ ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছে ভারতের উর্দু দৈনিক মিল্লাত টাইমস।

দৈনিকটি বলছে, শাকিল বিন হাফিনের নব্য ফেতনার শিকার হওয়া ৮০ ভাগই সাধারণ মানুষ এবং তাবলিগ জামাতের সাথে সম্পৃক্ত। অত্যন্ত সুকৌশলে সাধারণ মানুষদের কাছে নতুন সে আদর্শের বীজ ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।

শাকিলি ফেৎনার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই কাজ করছেন ইঞ্জিনিয়ার জিশান আহমদ। তিনি বলেন, ভারতের বিহার প্রদেশের দরভঙ্গ এলাকার অধিবাসী শাকিল বিন হানিফ নিজেকে ইমাম মাহদি বলে দাবি করে আসছে৷ বর্তমানে সে আওরঙ্গবাদে নিজের হেড কোয়ার্টার বানিয়ে সাধারণ মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে চলছে৷

বিভিন্ন শহরে তার অনুসারীরা কাজ করছে৷ কয়েক শহরে সে খলিফাও নিযুক্ত করেছে৷

তিনি জানান, বিহারের পাটনা, চম্পারন ও শিমানচল জেলায় তার প্রায় ৪ হাজার অনুসারী রয়েছে৷ এর মধ্যে কয়েক শ’ পরিবার এমন রয়েছে যাদের সবাই এক সাথে মুরতাদ হয়ে শাকিলের অনুসারী হয়৷

শাকিলের সর্বাধিক অনুসারী রয়েছে মধ্য প্রদেশের ভোপাল শহরে৷ এখানে তার প্রায় ৩ হাজার অনুসারী আছে বলে জানা যায়৷ আর উত্তর প্রদেশের বাদাইউন, রামপুর, গৌরখপুর, সিদ্ধার্ত নগর ও জৈনপুর এলাকায় তার দুই হাজারের মতো মুসলমান মুরতাদ হয়ে গেছে৷

এ ছাড়া মহারাষ্ট্র, করনাটক, অন্ধ্র ও গোয়া প্রদেশসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় এই শাকিলি ফেৎনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে৷

জিশান আহমদ পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার৷ গ্রামের বাড়ি বিহারে হলেও থাকেন দিল্লি শহরে৷ তিনি বর্তমানে দারুল উলুম দেওবন্দের তাহাফফুজে খতমে নবুওতে’র তত্ববধানে শাকিলি ফেৎনা বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন৷

তিনি বলেন, দেওবন্দ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পেলেও বিহারের এমারতে শরইয়্যাহ’র কাছে বিষয়টি বার বার উপস্থাপন করা হলেও তাদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি৷ বরং তারা বলেছেন, এ বিষয়ে নীরবতা অবলম্বনই শ্রেয়৷ যতো আলোচনা করবে ফেৎনা ততোই ছড়িয়ে পড়বে৷ তবে পাটনা আইম্মা পরিষদ তার কাজে উৎসাহ দিয়েছে৷

জিশান বলেন, আমি প্রকাশ্যে শাকিলি ফেৎনার বিরুদ্ধে যেসব কাজ করছি তা সরাসরি দারুল উলুম দেওবন্দের পরামর্শেই করছি৷ এ ব্যাপারে ভারতের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি যথেষ্ট ফিকিরমান্দ রয়েছেন এবং নানা সহযোগিতাও করছেন৷

মিল্লাত টাইমসে দেয়া সাক্ষাৎকারে জিশান আহমদ বলেন, শাকিলি ফেৎনার ক্ষেত্রে ভয়ংকর বিষয় হলো তার অনুসারীদের শতকরা আশি ভাগ মানুষের ব্যাকগ্রাউন্ডই তাবলিগ জামাতের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত পাওয়া যায়৷

কতক শিক্ষিত মানুষও এ ফেৎনার শিকার৷ দাঁড়ি-টুপিওয়ালার সংখ্যাও কম নয়৷ শাকিল তার কার্যক্রম চালিয়ে থাকে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রমের সাথে মিল রেখে। যে কারণে সহজে ধোকা দিতে পারে মানুষকে।

কোনো অনুসারীকে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলে, আমরা কোনো দলিল প্রামাণ ছাড়াই শাকিল বিন হানিফকে ইমাম মাহদি হিসেবে মেনে নিয়েছি৷

শাকিলি ফেৎনা উম্মতে মুসলিমার জন্য খুবই ক্ষতিকর ও বিপদজনক৷ শাকিলকে দ্বিতীয় কাদিয়ানীও বলা চলে৷ এ ব্যাপারে জিশানের পরিচালনায় একটি ওয়েবসাইট রয়েছে৷ যেখানে নিয়মিত দেশের বিভিন্ন আলেম লেখগণ শাকিলি ফেৎনা সম্পর্কে লিখে থাকেন৷

ফেসবুক টুইটারেও রয়েছে সরব প্রতিবাদ৷ শাকিলি ফেৎনা দূরীকরণে সোশ্যাল মিডিয়ায় তরুণ আলেমদের ভূমিকা চোখে পড়ার মতো৷ তাদের সার্বিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যেই শাকিলের ৪% অনুসারী সঠিক পথে ফিরে এসেছে৷

মিল্লাত টাইমসের পক্ষ থেকে শাকিল বিন হানিফের কয়েকজন খলিফার সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তারা কথা না বলেই ফোন রেখ দেয়৷

জিশান আহমদ বলেন, তারা বাইরের কারো সাথে ফোনে কথা বলে না৷ বরং তারা নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে টার্গেট করে কাজ করে৷ যখনই ব্যক্তির ব্যাপারে আস্থা অর্জন করতে পারে তখন তাকে শাকিল বিন হানিফের সঙ্গে সাক্ষাত করিয়ে দেয়৷

মিল্লাত টাইমস থেকে অনুবাদ

যা জানতে আরজাবাদ মাদরাসায় এসেছিলো ব্রিটিশ প্রতিনিধি দল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ