শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


‘চরমোনাইর দাদা হুজুর রহ.'র চোখে সবসময় পানি দেখতাম’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি হাবিবুর রহমান মিছবাহ
মুহাতামিম, আলোচক

রাত তিনটার দিকে চরমোনাই থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। মাদারীপুরের পাচ্চর পৌর মসজিদে ফজর আদায় করি। কাঠালিয়া ঘাটের ম্যানেজারকে ফোন দেই ফেরী সংক্রান্ত তথ্য জানতে। বললেন- ছোট ফেরীটি ঘাটে আছে। চলে আসুন! আপনার জন্য অপেক্ষা করাবো।

গাড়ি ফেরীতে উঠলো। ফেরীর স্টাফ আমাদের ভিআইপি কেবিনে নিয়ে গেলো। বসে বসে সামনের দু'দিনের রুটিন সাজাচ্ছিলাম। হঠাৎ ড্রাইভার এসে বললো- হুজুর আপনার আব্বা আপনাকে ডাকছেন। কোন হুজুর নাকি আপনাকে একটু দেখবেন। চরমোনাই থেকে বাবাও আমার সাথে যাচ্ছেন।

নিচে নেমে দেখলাম বয়োবৃদ্ধ নূরানী চেহারার একজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন। বাবার সাথে কথা বলছেন। প্রথমে ভেবেছিলাম পরিচিত কেউ হবে। কিন্তু না, এর আগে আমি তাঁকে আর দেখিনি।

সৈয়দ এনামুল হক। ফুরফুরা খান্দানের একজন পীর। ফরিদপুর বাড়ি। থাকেন মিরপুর সাড়ে এগারো। আমাকে দেখেই কাছে টেনে নিলেন। আমার হাত ধরলেন। মনে হলো ভেতরে কি যেনো একটা হচ্ছে। এটি আসলে বোঝার জিনিস, বুঝাবার জিনিস নয়।

বললেন, চরমোনাইর দাদা হুজুর রহ. সৈয়দ মুহাম্মাদ ইসহাকের সাথে আমার খুব সম্পর্ক ছিলো। তাঁর চোখে সবসময় পানি দেখতাম। কথাটা বলেই একটি চিৎকার দিলেন তিনি। মনে হলো পুরো ফেরী কেঁপে উঠেছে!

বললেন, ঐ রকম খাঁটি মানুষ পাওয়া বড় মুশকিল। পীর আছে, দরবার আছে, আলেম আছে, বেশভুষা আছে, কিন্তু খাঁটি মানুষ নেই। এ জমানার মানুষ তাসাউফ/আত্মশুদ্ধি বুঝে না। বুঝতেও চায় না। বাহিরটা কতো সুন্দর! কিন্তু ভেতরটা ফাঁড়লে দেখা যাবে সব নাপাকিতে ভরপুর।

সৈয়দ ইসহাক রহ.কে মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখি। তাঁকে আমি ভুলতে পারি না। এখন দুর্বল/মাজুর হয়ে গেছি। তিনি বড় মাকবুল মানুষ ছিলেন।

বললেন সৈয়দ এনামুল হক সাহেব। কথা বলার সময় তিনি কাঁদছিলেন এবং কথার ফাঁকে ফাঁকে রুমী রহ.-এর সমর্থবোধক ফার্সী শেরও বলতেছিলেন। তিনি আওলাদের রাসূল স. সৈয়দ আবদুল কাহহার রহ. এর সাথী।

দু'জন একই পীরের মুরীদ ও এজাজতপ্রাপ্ত। বিদায়বেলা তিনি বার বার তাঁর বাসায় একবার হলেও যাবার অনুরোধ করে গেছেন।

টেকনাফের রোহিঙ্গাসেবক বাহরুল উলুমের প্রিন্সিপাল মাওলানা হোছাইন আর নেই


সম্পর্কিত খবর