শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


ফেসবুকের তরুণ আলেম ও দালাল, মুনাফিক, নাস্তিক ট্যাগ (!)

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি আরিফ মাহমুদ হাবীবি
লেখক ও খতিব

মানসিকতা আর মনুষত্ব্য যেন বিকারগ্রস্ত হয়ে বিদায় নিতে চলেছে এ সমাজ থেকে। এ সমাজের মানুষজনের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় হলো আলেম সমাজ। জাতি তাদের মুখপানে চেয়ে থাকে সমাজ পরিবর্তনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে।

কিন্তু! আমাদের তরুণ আলেমদের অভাবনীয় পরিবর্তন জনমনে কঠিন পিড়া দিচ্ছে। যাদের সিফাত থাকবে ধর্য্য, সহিষ্ণু, মমতা, ভালোবাসার মতো মহৎ তারাই চড়ে বসেছে স্বাভাবিক স্রোতের বিপরীতে।

বড়ই অবাক হবেন আপনি যখন দেখবেন অনায়েসে কারো প্রতি দালালি ট্যাগ লাগিয়েছে কেবল তার মতের বিপরীত হওয়ার কারণে। ব্যক্তির নিজস্ব মত স্বাধীনতাতে আপনি যে উলঙ্গ হস্তক্ষেপ করেন একবারও কি ব্যাপারটা নিয়ে একটু ভাবেন?

‘দালাল’ শব্দটা আগে ব্যাবহার হতো আদম ব্যাপারিদের শানে! আর সেটা গ্রামের মুর্খদের মুখেই বেশি মানাতো। কিন্তু তিক্ত হলে ও সত্য যে আজ ব্যাবহারে শোভা পাচ্ছে তরুণ আলেমদের পবিত্র যবানে। তারাই অন্য এক আলেমকে দালাল বলছে, আবার নিজেও অন্যের মুখে দালাল গালি শুনছে। ভাবুন তো, এই করে কী লাভ?

বনিবনায় না মিললে বা প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কাউকে বলে বেড়াচ্ছেন মুনাফিক! আশ্চর্য ব্যাপার(!) আপনি তাকে জাহান্নামের অথৈ গহ্বরে নিমজ্জিত করে দিয়েছেন? কি করে এত সহজে অবলিলায় আমরা এসব বাক্য এলেমের বাহকদের শানে ব্যাবহার করছি, অথচ নিজেরা ও এর বাহক!

নাস্তিকতার আয়োজনটাও যেন আমরাই করে রেখেছি!  কেবল ব্যবহারের অপেক্ষায়, হুটহাট করে যাকে তাকে নাস্তিক বলাটা তরুণ আলেমদের কাছে যেন মামুলি ব্যাপার! একবার কি চিন্তা করার সময় হয়েছে বন্ধু কিসের ধান্ধায় আপনি আপনার স্বজাতিকে নাস্তিক ট্যাগ দিয়ে আত্মগৌরবে ফেটে পড়ছেন?

একজন মুসলমান নিরানব্বইটা কাজ যদি সে খারপও করে একটাও যদি আল্লাহতে বিশ্বাস রেখে করে তবুও তাকে কাফের বলা যায় না, যতক্ষণ না সে নিজেকে মুসলমান আর আল্লাহতে বিশ্বাসি বলে দাবি করে। কিন্তু আপনি যে অবলীলায় কাফের ফতোয়া দিয়ে ইসলাম থেকে খারিজ করে দিলেন একবার কি ভেবেছেন জবাব টা কি দিবেন মহান রবের দরবারে?

সবশেষে বলবো দালাল, মুনাফিক, নাস্তিক, কাফেরের মতো ভয়ংকর ট্যাগ লাগানো থেকে বাঁচুন অন্তত নিজের ঈমানের স্বার্থে। জাতিকে আপনার কর্মের দরুন ভুল মেসেজ দিবেন না, এটা কোনো দাঈর কাজ হতে পারে না।

আসুন পরস্পরে ভালোবাসার সেতু বন্ধন তৈরি করে জাতিকে সু পথের দিশা দেই। আল্লাহ আমাদের সকল কাজকে তাঁর সামনে জবাবদিহির চিন্তায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

খতিব: কেন্দ্রীয় কাশীপুর বড় মসজিদ, নারায়ণগঞ্জ


সম্পর্কিত খবর