শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


‘তাবলীগ নিয়ে দেওবন্দের সঙ্গে বাংলাদেশের আলেমদের অবস্থানকে স্পষ্ট করবে আজকের বৈঠক’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

দাওয়াত ও তাবলীগ জামাতের চলমান সমস্যাকে সামনে রেখে আজ শনিবার বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম একত্রিত হচ্ছেন। উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের আয়েশা রা. মসজিদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব আলেম ও তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিদের দাওয়াত করা হয়েছে। আগামী বিশ্ব ইজতেমা ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিষয়ে বেশ কিছু আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।

আয়োজন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব দারুল আরকামের শিক্ষক, উত্তরা তাকওয়া মসজিদের খতিব ও আল মানহাল কওমি মডেল মাদরাসার পরিচালক মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী। আগামী কালের প্রোগ্রাম বিষয়ে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আওয়ার ইসলামের সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব

আওয়ার ইসলাম : আপনাদের আগামীকালের প্রোগ্রামের লক্ষ উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি...

মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী : আগামীকালের প্রোগ্রাম আমদের পক্ষ থেকে কোনকিছু না। এটা একটা জাতীয় ও আলমি বিষয়। এটি নিয়ে আমাদের দেশের আকাবির ও শীর্ষ মুরুব্বিরা দীর্ঘ এক দেড় বছর ধরে আলোচনা পর্যালোচনা করছেন। তাদের নেতৃত্বেই এই প্রোগ্রাম।

বিশেষ করে শাইখুল ইসলাম  আল্লামা  শাহ আহমদ শফী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা আশরাফ আলী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস সাহেবসহ দেশের শীর্ষ মুরুব্বিদের নিয়ে  আগামীকালের পরামর্শ সভা আহবান করা হয়েছে।

আওয়ার ইসলাম : আলমি বিষয়টা কী? 

মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী : আলমি বিষয়টি হল দাওয়াত ও তাবলীগ এর মেহনত শুরার পদ্ধতিতে চলবে না ইমারতের পদ্ধতি চলবে?  অথবা, একজন আমির হবেন এবং তার নেতৃত্বে এই মেহনত অব্যাহত থাকবে না শুরা পদ্ধতিতে এই মেহনত চলবে?

এই পেরেশানিতে ভুগছে বিশ্বব্যাপী তাবলীগের সব মারকাজে। পাশাপাশি মাওলানা সাদ সাহেব নিজেকে যে বিশ্ব তাবলীগের আমির বলে দাবি করছেন, এই বিষয়টিতে  বিশ্বব্যাপী দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ যারা করছেন তাদের মধ্য থেকে সিংহভাগ আলেম ওলামা ও সাথীদের আপত্তি রয়েছে।

উলামা য়েকরাম বারবার তার বিরুদ্ধে কলম ধরছেন। কারণ তিনি বয়ানে কুরআনের তাফসীরে নিজের মনগড়া ব্যাখ্যা করে চলেছেন এবং সাহাবায়ে কেরাম ও জমহুর উলামায়ে কেরামের বাইরে গিয়ে তিনি মনমত  পেশ করছেন।

আমাদের দাওয়াত ও তাবলীগের সাবেক তিন মুরুব্বি মাওলানা ইলিয়াস, মাওলানা ইউসুফ এবং এনামুল হাসান রহ. উনারা যে নাহাজের ভিত্তিতে দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত চালিয়েছে, বর্তমান মাওলানা সাদ সাহেব দায়িত্ব নেওয়ার পর সেভাবে এই মেহনত চলছে না। এজন্য মূলত পেরাশানিটা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

আওয়ার ইসলাম : আপনার কথায় দুটি জিনিস উঠে এসেছে, একটি দাওয়াত ও তাবলীগ শুরার ভিত্তিতে চলবে না একজন আমিরের নেতৃত্বে চলবে এবং মাওলানা সাদের ভিন্ন মতামত। আপনাদের দাবি কোনটি, শুরা না  আমির? 

মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী : আমি ভুল মতামতের কথা বলিনি। আমি বলেছি, তিনি তার বয়ানে কুরআনে কারীমের তাফসীর করতে গিয়ে অনেক সময় তাফসীর বির রায় বা অপব্যাখ্যা করেন। এটা আমাদের বাংলাদেশের উলামায়ে কেরামের নিজস্ব কোন দাবি না।

সাদ সাহেবের বয়ানের ব্যাপারে দারুল উলুম দেওবন্দ এর ফতোয়া এসেছে, আমরাও বাংলাদেশের আলেম সমাজ আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাই। আগামীকাল দারুল উলুমের অবস্থানের সাথে আমাদের অবস্থানকে স্পষ্ঠ করতে চাই।

আওয়ার ইসলাম : আমার প্রশ্নটা ছিল, তাবলীগ শুরা পদ্ধতিতে চললে ভাল হয় না আমিরের নেতৃত্বে? আপনারা কোন পক্ষে কাজ করছেন? 

মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী : আসলে শুরার পক্ষে না আমিরের পক্ষে এই নিয়ে আমাদের উলামায়ে কেরামের কোন ফিকির নয়। আমাদের ফিকির হল দারুল উলুম দেওবন্দ যে অবস্থান প্রকাশ করেছে সেই অবস্থানটাই উম্মতের সামনে প্রকাশ করা।

আমাদের অবস্থান স্পষ্ঠ হওয়ার পরে মাওলানা সাদ সাহেব এবং নেজামুদ্দিন বিবেচনা করবে তারা কিভাবে মেহনত করলে এই দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ ভালভাবে পরিচালিত হবে।

আওয়ার ইসলাম : আমরা জেনেছি, সম্প্রতি দারুল উলুম দেওবন্দ মাওলানা সাদের ব্যাপারে ইতমিনানে কলব ইজহার করেছেন? 

মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী : দারুল উলুম দেওবন্দ ইতমিনান প্রকাশ করেছে এরকম কিছু কাগজে কলমে আসেনি। আপনি যেটা জানেন, সেটা হলো দারুল উলুম দেওবন্দ জরুরি ওজাহাত পেশ করেছে।

তারা বারবার চেষ্টা করার পরেও যখন মাওলানা সাদ সাহেবের ব্যাপারে সমাধানে আসতে পারে নাই। সেজন্য দারুল উলুম দেওবন্দ নিরাশ এবং হতাশ হয়ে উম্মতের সামনে এটা প্রকাশ করে দিয়েছে যে নিজামুদ্দিনের বিষয় তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এ ব্যাপারে আমাদের কোন বক্তব্য নেই।

আওয়ার ইসলাম: অনেকেই বলছেন, সম্প্রতি তাবলীগ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে যে বৈঠক হয়েছে সেখানে সমস্যা সমাধানের জন্য একটি কমিটি হয়েছে, তারপরও এ পরামর্শ সভা কেন ডাকা হলো?

মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী : এ পরামর্শ সভা ওই কমিটির কাজকে তরান্বিত করার জন্যই। আর সভার আয়োজক যেহেতু বড় আলেমরা, তারা এ বিষয়ে আরও ভালো বলতে পারবেন।

আওয়ার ইসলাম : ইজতেমার মধ্যে মাওলানা সাদ সাহেবের আসার ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী? 

মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী : এটা আমাদের বড়রা বলতে পারবেন।

আওয়ার ইসলাম : আমাদেরকে সময় দেওয়োর জন্য ধন্যবাদ। 

আপনাকেও ধন্যবাদ ।

তাবলীগের সঙ্কট নিরসনে আল্লামা শফীর নেতৃত্বে শীর্ষ আলেমদের বৈঠক ১১ নভেম্বর

 

 


সম্পর্কিত খবর