শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


আয়করের শরয়ি বিধান, যা বললেন দেশের শীর্ষ ৩ মুফতি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু
বার্তা সম্পাদক

গত ১ নভেম্বর সারা দেশে শুরু হয়েছে আয়কর মেলা। রাজধানীসহ জেলা শহরগুলোতে আয়কর মেলার আয়োজন করেছে সরকার। আয়কর দাতা সেখানে কর প্রদানে বিশেষ সুযোগ লাভ করছে।

আজ ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।

কিন্তু আয়কর প্রদানের বিধান কি? ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে আয়করের কোনো গ্রহণ যোগ্যতা আছে কী?

দেশের শীর্ষ কয়েকজন মুফতির কাছে জানতে চেয়েছিলাম আয়করের বিধান। শরিয়তের আলোকে তাদের মতামত তুলে ধরেন আওয়ার ইসলামের কাছে।

দেশের শীর্ষ মুফতি ও মসজিদে আকবর কমপ্লেক্স-এর মহাপরিচালক মুফতি দেলোয়ার হুসাইন মতামত হলো,  ‘সরকার প্রয়োজন মনে করলে আয়কর নিতে পারে। তবে তা যেনো জুলুমের পর্যায়ে না পৌঁছায়। জনগণের সাধ্যের উপরের কর নির্ধারণ করলে জনগণ তা দিতে বাধ্য থাকবে না।’

বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মুফতি ইনামুল হক অবশ্য মনে করেন ইসলামি শরিয়াহ-এর সঙ্গে আয়করের ধারণা সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইসলামি শরিয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হলেও ইসলাম আয়কর আরোপ সমর্থন করে না। সুতরাং আয়কর না দিলে শাস্তি প্রদান করাও যৌক্তিক নয়।

কিন্তু কেনো ইসলামের সঙ্গে আয়করের ধারণা সঙ্গতিপূর্ণ নয়? মুফতি ইনামুল হক বলেন, ‘ইসলামের বিধান হলো, সরকার সেবার বিনিময়ে কর গ্রহণ করবে। কিন্তু আয়করের বিনিময়ে প্রত্যক্ষ কোনো সেবা সরকার জনগণকে দেয় না।’

‘তাছাড়া জনগণ কোনো কিছুর মাধ্যমে আয় পর্যন্ত পৌঁছাতে কয়েক ধাপে সে কর দিয়ে এসেছে। সুতরাং এ পর্যায়ে নতুন কর না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।’ বলেন মুফতি ইনামুল হক।

দেশের অন্যতম শীর্ষ মুফতি ও শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সা্ঈদ বলেন, ‘কোনো দেশের সরকার যদি মনে করে তার নিজস্ব আয় দিয়ে দেশের উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে তারা করারোপ করতে পারে। জনগণের উপর সে কর দেয়া ওয়াজিব। সে হিসেবে আয়করও সরকার আরোপ করতে পারে এবং জনগণ তা প্রদানে বাধ্য থাকবে।’

তিনি আরও বলেন,  ‘তবে তা অবশ্যই জুলুমের পর্যায়ে হতে পারবে না। জুলুমের মাত্রায় করারোপ করলে জনগণ তা ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করবে। যেমন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা করছে। তাদের হিসেবের খাতা থাকে দুইটা। একটা নিজের, অন্যটা সরকারকে দেখানোর জন্য।’

কর ফাঁকির জন্য শাস্তি বিধান করা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ন্যায়সঙ্গত আয়কর নির্ধারণ করা হলে তা ফাঁকি দিলে শাস্তি দেয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে যে ফাঁকি দিবে সেও গুনাহগার হবে।’

‘এ অধিকার নিঃশর্ত নয়। কর যদি জুলুমের মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তবে করদাতার জন্য করের যতোটুকু ন্যায়সঙ্গত ততোটুকু প্রদান করা ওয়াজিব আর জুলুম পরিমাণ ফাঁকি দেয়ার অবকাশ আছে। তবে উত্তম হলো পুরো করই প্রদান করা। কেননা জুলুমের প্রতিদান সে পাবে।’ যোগ করেন মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ।


সম্পর্কিত খবর