মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


হাইআতুল উলয়া’র (খসড়া) গঠনতন্ত্রের অনুমোদন, যা আছে তাতে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু
বার্তা সম্পাদক

ভবিষ্যত কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ ও কার্য পরিচালনার জন্য সম্মিলিত কওমি শিক্ষা বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়াা লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশে একটি খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করেছে।

গত ০২ অক্টোবর সোমবার মতিঝিলের পীরজঙ্গী মাদরাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ গঠনতন্ত্র অনুমোদন পায়।

সরকার স্বীকৃত হাইআতুল উলয়ার ‘সনদের মান বাস্তবায়ন কমিটি’র সদস্যগণ এ গঠনতন্ত্র অনুমোদন করেন।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্রে আওয়ার ইসলাম জানতে পেরছে, এ খসড়া গঠনতন্ত্র পর্যালোচনার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কাছে পাঠানো হবে। তাদের মূল্যায়ন ও পুনঃযাচাইয়ের পর খসড়া গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা হবে।

যা আছে খসড়া গঠনতন্ত্রে

গঠনতন্ত্রের শুরুতেই গত ১৩ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর থেকে এ পর্যন্ত হাইআতুল উলয়ার কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে সুষ্ঠুভাবে দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা সম্পন্ন করার উপরে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

গঠনতন্ত্রের পরিচিতি

এ পর্বে গঠনতন্ত্র ও হাইআতুল উলয়ার আইনী ভিত্তি, প্রতিষ্ঠানের নাম, কর্মপরিধি ও মনোগ্রামের বিবরণ দেয়া হয়েছে।

আইনী ভিত্তি হিসেবে ১৩ এপ্রিল ২০১৭ সরকার কর্তৃক প্রকাশি প্রজ্ঞাপন (স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.১১৮.২০.০০৫.১৭-১২১) কে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মপরিধিতে বহিঃবিশ্বে পরিচালিত কওমি মাদরাসাকে এর আওতাভূক্ত হওয়ার অবকাশের কথা বলা হয়েছে।

মনোগ্রামের বিবরণে বলা হয়েছে, আল-হাইআতুল উলয়ার নাম আরবি ও বাংলায় অর্ধবৃত্তাকারে,  স্থাপিত সন নিচে সমান্তরালে, সাথে বাংলাদেশের মানচিত্র এবং মাঝে ইলম, আমল, তাকওয়ার লেখা থাকবে।

মূলনীতি

হাইআতুল উলয়ার মূলনীতি হিসেবে দারুল উলুম দেওবন্দের উসুলে হাস্তেগানাকে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদর্শ

আদর্শ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ঈমান, তাকওয়া ও আল্লাহর উপর পূর্ণ নিরঙ্কুশ ভরসা; আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসরণ; সকল মাজহাবের প্রতি শ্রদ্ধাপোষণের সাথে হানাফি মাজহাবের অনুসরণ; তাসাউফের সুপরিচিতি চার তরিকা (চিশতিয়া, মুজাদ্দিদিয়া, নকশাবন্দিয়া ও কাদরিয়া)সহ হকপন্থী সব ধারার প্রতি সহনশীল ও উদার মনোভাব পোষণসহ দারুল দেওবন্দের চিন্তা-চেতনার অনুসরণ।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

গঠনতন্ত্রে মোট ৮টি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে। সেগুলোর অন্যতম হলো, কওমি মাদরাসায় ঐক্য প্রতিষ্ঠা, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও যুগোপযোগী করা, সনদ প্রদান, বহিঃবিশ্বের দীনি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ সংযোগ ও উচ্চ শিক্ষা-গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি ও আল-হাইআতুল উলয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপদান ইত্যাদি।

প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো

সরকার অনুমোদিত ৩২ সদস্যের কমিটিকেই অবকাঠামো হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সর্ববৃহৎ শিক্ষাবোর্ড হিসেবে বেফাকের দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিনিধিত্বের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।

কর্মপরিধি/ক্ষমতা ও দায়িত্ব

গঠনতন্ত্রে ১২ ধারায় কমিটির ক্ষমতা ও কর্মপরিধির বিবরণ দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, উপকমিটি গঠন, উপকমিটির প্রস্তাব পযালোচনা ও মঞ্জুরি প্রদান, কর্মী নিয়োগ ও বরখাস্ত, অধিবেশন আহবান, গঠনতন্ত্রের ব্যাখ্যা ও সংশোধন ইত্যাদি।

পদাধীকারীদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব

এ পর্যায়ে চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ও ক্ষমতার বিবরণ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানের দায়িত্বের বিবরণে বলা হয়েছে, তিনি সব বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন, বৈঠকের তারিখ ও আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করে কো-চেয়ারম্যানকে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিবেন, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করবেন এবং সনদে স্বাক্ষর করবেন।

কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্বে বলা হয়েছে, তিনি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন এবং চেয়ারম্যানের অন্যান্য দায়িত্বপালন করবেন।

পরীক্ষা উপকমিটি

পরীক্ষা উপকমিটির সদস্য সংখ্যা, দায়িত্ব ও কাজের পরিধির বর্ণনায় বলা হয়েছে, উপকমিটি হবে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট। পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা, প্রশ্নপত্র তৈরি ও ফলাফল প্রস্তুত, সনদ মুদ্রণ ও বিতরণ করবে এ উপকমিটি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেভাবে কাজ করছেন আলেমরা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ