শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


সুচি তার ভাষণে যেসব মিথ্যা বলেছেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনা দমনপীড়ন নিয়ে মঙ্গলবার ভাষণ দেন স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি। সে ভাষণের অধিকাংশই ছিল মিথ্যাচার এবং অনেক তথ্যই গোপন করেছেন সুচি।

জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি সহিংসতা ও শরণার্থী সংকট নিয়ে কথা বলেন। তবে তিনি যে অনেক কথাই সত্য বলেননি, সে দাবি বিবিসির দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রতিনিধি জনাথন হেডের। এ সংকট শুরুর পর থেকেই বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের দুই দিক থেকেই তিনি রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ-দুর্দশা দেখেছেন।

এরই প্রেক্ষাপটে সু চির বক্তব্যে কী কী অসংগতি আছে, তা তুলে ধরেছেন এই সাংবাদিক।

সু চি তাঁর ভাষণে বলেছেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পর রাখাইনে কোনো ধরনের সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। কোনো অভিযানও চলেনি।

এ বক্তব্যের জবাবে জনাথন বলেন, ‘৭ সেপ্টেম্বর আমি সরকার আয়োজিত গণমাধ্যম প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে আলেল থান কাউয়ে ছিলাম। আমরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলির শব্দ শুনেছি। চার জায়গা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখেছি। এ থেকে বোঝা যায়, গ্রামগুলো পুড়ছে। এরপর বাংলাদেশ অংশ থেকে দেখেছি, নাফ নদীর ওই পাড়ের গ্রাম থেকে ধোঁয়া উড়ছে।’

সু চি বলেছেন, রাষ্ট্রের আইনের বিরুদ্ধে যারা যাবে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে; তাদের ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর প্রেক্ষাপটে বিবিসির সাংবাদিক বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহারের ইতিহাস ৭০ বছরের বেশি। রাখাইন রাজ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোনো সেনা কর্মকর্তা সুশৃঙ্খল আচরণ করেছেন, এমন নজির নেই। আর এখন তো তাদের অভিযানের মুখে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে দেখা আরাকানের চার জায়গায় ধোয়ার কুণ্ডলি

সু চি বলেছেন, রাখাইনে বসবাসকারী সবাই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সমান সুযোগ পায়। কেউ কোনো ধরনের বৈষম্যের শিকার হয় না।

এ ব্যাপারে জনাথনের ভাষ্য, সু চির এ বক্তব্য অসত্য। রোহিঙ্গারা বহু বছর ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তাদের স্বাধীন চলাফেরার ওপর বিধিনিষেধ আছে। অন্য অঞ্চলে বিয়ে করতে গেলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।

২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর এই বিধিনিষেধ আরও কঠোর হয়। এমনকি বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয়শিবিরে মাথা গোঁজা পরিবারের সদস্যরা বিশেষ অনুমতি ছাড়া অন্যত্র যেতে পারে না। সেখানকার শিশুদের পড়াশোনা অন্তত পাঁচ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে।

চার বছর আগে রাথেডাংয়ের একটি গ্রাম পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে এই সাংবাদিক বলেন, সেখানকার রোহিঙ্গারা চিকিৎসার জন্যও অন্য কোথাও যেতে পারেন না।

আর বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি বলেন, ‘সেখানে আবদুল মজিদ নামের একজনের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি গ দু থার ইয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামটি আমি নিজে দেখেছি। সেই আবদুল মজিদ আমাকে জানিয়েছেন যে গত পাঁচ বছরে তিনি তাঁর গ্রামের বাইরে কোথাও কাজের জন্য যেতে পারেননি।’

সুচিকে দেয়া পুরস্কার ফিরিয়ে নিলো যুক্তরাজ্যের ট্রেড ইউনিয়ন

সুচি উট পাখির মতো বালিতে মুখ গুঁজে আছেন: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ