রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া মিয়ানমার সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির ভাষণের তীব্র সমালোচনা করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
তার বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক জেমস গোমেজ। তিনি সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক।
মি. গোমেজ বলেন, ‘অং সান সু চি তার বক্তব্যের মাধ্যমে আবারও দেখিয়েছেন যে তিনি ও তার সরকার রাখাইন রাজ্যের ভয়াবহ পরিস্থিতির বিষয়ে বালিতে তাদের মাথা গুঁজে রেখেছেন।’
রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়ে চুপ থাকায় বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার মধ্যেই আজ মঙ্গলবার এই প্রথম মুখ খোলেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এই নেত্রী।
টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে অং সান সু চি বলেছেন, রাখাইন থেকে মুসলমানরা কেন পালাচ্ছে সেটা তিনি জানেন না। তার সরকারকে এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপ-পরিচালক ফিল রবার্টসন মিজ সু চি-র কিছু বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, ‘৫ই সেপ্টেম্বরের পর থেকে যদি রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধ হয়ে যাওয়ার বক্তব্য সত্য হয়, তাহলে গত দু'সপ্তাহে আমরা সেখানে যেসব গ্রাম পুড়ে যেতে যেতে দেখেছি, সেগুলোতে কারা আগুন দিচ্ছে?’
জাতিসংঘের একটি সংস্থা ইউনিসেফের একজন কর্মকর্তা পল এডওয়ার্ডস মিজ সু চি-র বক্তব্যে সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমাদের কেউই আসলে জানি না রাখাইনে কি ঘটছে। কারণ আমরা সেখানে যেতে পারছি না।’
মাত্র তিন সপ্তাহে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন।
মিজ সু চি অবশ্য তার ভাষণে সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করেছেন।
এর আগে গত মার্চ মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ এবিষয়ে তদন্ত শুরু করেছিলো। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তদন্তকারীদেরকে সেদেশে যেতে দেয়নি।
রাখাইন রাজ্য সরকারের সেক্রেটারি তিন মঙ সোয়ে মিজ সু চি-র ভাষণকে অত্যন্ত 'স্বচ্ছ' উল্লেখ করে এর প্রশংসা করেছেন। তবে রাখাইনে মুসলমান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তিনি যেসব অঙ্গীকার করেছেন সে ব্যাপারে তিনি খুব একটা আশাবাদী নন।
সূত্র : বিবিসি