আবিদ আনজুম: মিয়ামানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মম গণহত্যার মাধ্যমে জাতিগত নিধন বন্ধের দাবীতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গতকাল ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে।
গতকাল সকাল ১১টায় বাইতুল মুকাররম উত্তর গেট সড়কে স্মরণকালের বিশাল সমাবেশ শেষে মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও ও স্মারকলিপি প্রদানের লক্ষ্যে এক দীর্ঘ গণমিছিল শান্তিনগর পৌঁছলে পুলিশ মিছিলের গতিরোধ করে।
এ সময় আল্লামা কাসেমীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার দূতাবাসে গিয়ে প্রটোকল অফিসারের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন।
এরপর প্রতিনিধিদল ঢাকাস্থ জাতিসংঘের কার্যালয়ে গিয়ে আরেকটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা মুজীবুর রহমান পেশোয়ারী, মাওলানা হাকীম আব্দুল করীম, মাওলানা আজীজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা নাজমুল হাসান, মাওলানা মুনীর হোসাইন কাসেমী ও মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী।
গণমিছিলপূর্ব বিশাল সমাবেশ শুরুর পূর্বেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় বাইতুল মুকাররম উত্তর গেটের সামনের সড়কসহ আশপাশের এলাকা।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরীহ রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর যে নির্মম গণহত্যা চলছে তা ইতিহাসের সকল বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই গণহত্যার ধিক্কারের পরেও মিয়ানমারের সামরিক জান্তা তাদের নিষ্ঠুরতা বন্ধ করেনি, তাই রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষায় সরকারকে কুটনৈতিকভাবে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, কুটনৈতিক পথে সফলতা না আসলে আরাকান স্বাধীন করার জন্য সামরিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে দেশের মানুষ সরকারের পাশে থাকবে।
মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মম গণহত্যা বন্ধ না হলে আরাকান স্বাধীন করতে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে।
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=507963462873715&set=pcb.507963626207032&type=3
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা আজীজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মুজীবুর রহমান পেশোয়ারী, মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা হাকীম আব্দুল করীম, মাওলানা নাজমুল হাসান, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা মুজীবুর রহমান হামিদী ও মাওলানা আজীজুর রহমান হেলাল প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনায় ছিলেন মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন ও মাওলানা সুলতান মুহিউদ্দী।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, সরকারকে এই রকম গণহত্যার প্রতিবাদে মায়ানমার দূতাবাস বন্ধ করে দিতে হবে। তিনি বলেন মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা মুসলমানদের সাহায্যে বাংলাদেশী মুসলমানদের আনসারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে এবং সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়, খাদ্য, ঔষধ ও পানিসহ যাবতীয় বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী বলেন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ করতে না পারলে সরকার আমাদের অনুমতি দিক। আমরা এদেশের গণমানুষ দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে আরাকান স্বাধীন করতে যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত আছি।
মাওলানা আজীজুল হক ইসলামাবাদী বলেন মিয়ানমারের সামরিক জান্তারা এ যাবত ৩৫ বারেরও অধিক বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘন করেছে। সরকার এ বিষয়ে তেমন কোন পদক্ষেপ না নিয়ে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি প্রদর্শন করেছে।
https://www.facebook.com/otvbd/videos/2018037945099613/
মাওলানা মুজীবুর রহমান পেশোয়ারী সরকারপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি রাশিয়া চীন ও ভারতকে ভয় করবেন না। রোহিঙ্গা ইস্যূতে এদেশের জনগণ আপনার সাথে আছেন।
মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার ঈমানী দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে আমরা যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, সন্ত্রাসী পিতার সন্ত্রাসী মেয়েই হচ্ছে অংসান সূ চী, তার পিতাও রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলা খেলে গেছে। অংসান সূ চীর এই হোলি খেলা বন্ধ না হলে আরাকান স্বাধীন করতে এদেশে মুসলমানেরা মিয়ানমার যেতে প্রস্তুত রয়েছে।
দূতাবাসা ঘেরাও কর্মসূচির আরও নিউজ
হেফাজতের মিছিলে পুলিশের বাধা; দূতাবাসে যাচ্ছেন ১০ নেতা
মিয়ানমার দূতাবাসে স্মারকলিপি দিয়েছেন হেফাজত নেতৃবৃন্দ
মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চ করবে হেফাজত
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=2059198960975257&set=pcb.2059199187641901&type=3