বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


বাংলাদেশের অতিথিপরায়ণ মানুষ ও মিয়ানমার সেনাপ্রধানের ঔদ্ধত্য

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

এইচ এম মাহমুদ হাসান সিরাজী
প্রিন্সিপাল, জামিয়া ওসমান ইবনে আফফান রা.

এদেশের মানুষ জাতি হিসাবে একটা মায়াবী জাতি। এদেশের মানুষ জানে কেও মুহাজির হলে আনসারের ভূমিকা কিভাবে রাখতে হয়। এ দেশের মানুষ বুঝে মেহমান আসলে কিভাবে মেহমানদারী করতে হয়। এদেশের মানুষ উপলব্ধি করতে পারে কেউ নির্যাতিত হলে কিভাবে তার পাশে এসে দাঁড়াতে হয়। এ দেশের মানুষ আক্রান্ত প্রতিবেশীকে কিভাবে সাহস দিতে হয় তাও ভালভাবে জানে।

এ একবিংশ শতাব্ধির বর্বচিত, নির্মম, নিষ্ঠুর ও ভয়াবহ হামলার স্বীকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের পাশে এসে যেভাবে দাঁড়িয়েছে তা সত্যিই প্রসংশনীয় ও অনুকরনীয়।

তবে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হয়াং এর আজকের ভাষ্য অনুযায়ী এ দেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের বাঙ্গালি হিসাবে আশ্রয় দেয় নি। জাতিগতভাবে এদেশের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

তারা মিয়ানমারের নাগরিক। তারা মিয়ানমারের শতশত বছরের অধিবাসী। মিয়ানমারের আরাকান অংশ তাদের বাপ দাদাদের শতশত বছরের পৈত্রিক ভিটা। মিয়ানমারে তাদের আলাদা ইতিহাস রয়েছে। ঐখানে তাদের ভিন্ন ঐতিহ্য রয়েছে।

তারা মিয়ানমারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তারা সেখানে পার্লামেন্টের সদস্য হয়ে পার্লামেন্টে বক্তব্যও রেখেছে। সে রেকর্ডও তাদের পার্লামেন্টে রয়েছে।

তো তারা ঐদেশের নাগরিক না হলে তারা এসেম্বেলিতে গেল কী করে? এম পি নির্বাচিত হল কী করে? জনগণের হয়ে পার্লামেন্টে কথা বলল কিভাবে?

মগরা কি দুনিয়ার সবকিছুই মগের মুল্লুক মনে করে?

বাংলাদেশ অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে এর অর্থ এই নয়, সেনাপ্রধান মিন অং হয়াং এর ভাষ্য অনুযায়ী রোহিঙ্গারা বাঙ্গালি ইস্যু।

এদেশ এবং এদেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের মুহাজির হিসাবে আশ্রয় দিয়েছে। তাদেরকে মেহমান হিসাবে আপ্যায়ন করে যাচ্ছে।

এদেশের মানুষ মনুষত্ববোধ, মানবতাবোধ, দায়িত্ববোধ ও বিবেকবোধ থেকে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা বার্মার মতো ইতর, গোয়ার ও খুনি নয়। তারা মানুষকে ভালোবাসতে জানে। তাই আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু সুযোগ বুঝে তাদের ওপরই রোহিঙ্গাদের চাপিয়ে দেয়া অন্যায়। কুকুরি স্বভাব।

কতদিন তাদের পাশে থাকবে?
যতদিন তারা নিজেদের অধিকার আদায় না করবে।
যতদিন তাদের ছিনিয়ে নেওয়া নাগরিকত্ব ফিরিয়ে না পাবে।
যতদিন বাপ দাদার ভিটে মাটি ফেরত না পাবে।
যতদিন তাদের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস- ঐতিহ্য উদ্ধার না হবে।
যতদিন তারা স্বাধিন আকাশভূমির নীচে অবস্থান করতে না পারবে।

এ জন্য ওয়াইসি, জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শক্তিকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশের পাশে থেকে রোহিঙ্গাদের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সেনাপ্রধান মিন অং হয়াং এর ঐদ্ধ্যত্বের বিষদাত উপড়ে ফেলতে হবে।

বিশ্ববিবেককে মনে রাখতে হবে রোহিঙ্গারাও মানুষ। তাদেরও স্বাধিনভাবে বেচে থাকার অধিকার রয়েছে। তাদেরও নিজস্ব ইতিহাস - ঐতিহ্য রয়েছে।

মিয়ানমার সেনাপ্রধানের ঔদ্ধত্য

তাদেরকে তাদেরমত করে বাঁচতে দিতে হবে। তাদের অধিকার আদায়ে তাদের সহযোগী হতে হবে। তাদের পাশে এসে দাড়াতে হবে। তাদের থেকে নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে।

এদেশের ১৬ কোটি মানুষ জান মাল নিয়ে তাদের পাশে আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। মানবতার সার্থে বিশ্বকেও তাদের ইস্যুতে এক হতে হবে। এ দেশের মানুষের সুরে কথা বলতে হবে।

আর আমাদের সংবাদ মাধ্যমকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। সব কিছু বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো হিসাবেই দেখাতে হবে।

তারা অসহায়। তারা মুহাজির হয়ে মেহমান হিসাবে আমাদের নিকট এসেছে। আমরা মায়াবী বলেই তারা আমাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে। কঠিন বিপদের সম্মুখীন না হলে কেউ বাপ দাদার ভিটে মাটি ছেড়ে চলে আসে না।

তারা থাকার কষ্ট পায়। খাবারের কষ্ট পায়। ফলে ক্যাম্পে জায়গা না পেয়ে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে।

তাদের নিরাপত্বার সার্থে আইনশৃংখলা বাহিনী তাদের তদারকি করে থাকে। তাদেরকে আটক না বলে তাদের সন্ধান পাওয়া গেছে বলুন। এতজন আটক হয়েছে না বলে এতজনের সন্ধান পাওয়া গেছে বলুন।

এটিও পড়ুন: গরিবের সুন্দরী বউ!


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ