হামিম আরিফ: তরুণ আলেমদের ফেসবুক গ্রুপ ‘আসহাবে কাহাফের’ উদ্যোগে কুড়িগ্রাম জেলার বন্যার্তদের মধ্যে প্রায় দুই লক্ষ নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। বন্যায় ঘরবাড়ি হারানো অসহায় মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব অর্থ বিতরণ করা হয়।
গত ২৫ আগস্ট রাতে ৪ সদস্যের একটি টিম ত্রাণের অর্থ নিয়ে রওনা দেয় কুড়িগ্রামের দিকে। জেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে দুইদিন অবস্থান করে সেখানকার বেশ কয়েকটি এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যবেক্ষণের পর এসব অর্থ তুলে দেয় তারা। ৬০-৭০ টি পরিবারের মধ্যে এসব অর্থ বিতরণ করা হয়।
চার সদস্যের টিমের মধ্যে ছিলেন আলেম ও সাংবাদিক রোকন রাইয়ান, জুবায়ের মুহিউদ্দীন, নেসার উদ্দিন রুম্মান ও আনাস বিন ইউসুফ।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ করেই বানের পানিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা পুরোপুরি ডুবে যায়। এসবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫০ লাখেরও বেশি পরিবার। নদীর পাড়ষেঁষা হাজারও বাড়ি ঘর বিলীন হয়ে যায় বানের পানিতে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মসজিদ, মাদরাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী জরুরি হয়ে পড়েছিল। সেই প্রয়োজন উপলব্ধি করেই ত্রাণ সংগ্রহের কাজে লেগে যায় কওমি আলেমদের গ্রুপ ‘আসহাবে কাহাফ’।
এই মহিলা গর্ভবতী, কয়েকদিন পরই তার ঘর আলো করে আসবে একটি সন্তান। তার আগে এক মহা বিপর্যয় বয়ে গেছে তার পরিবারে। আমরা যেখানে দাঁড়ানো ঠিক তার সামনেই ছিল তাদের দুটি ঘর। এখন সেখানে এক বিশাল গর্ত। থৈ থৈ করছে পানি। দেখলে বুঝাই যাবে না এখানে কোনো বাড়ি ছিল।
ত্রাণ সংগ্রহের কাজ পরিচালনা করেন আলেম ও প্রকৌশলী সাকিব মুস্তানসির। তিনি বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে হাঠাৎ করে বন্যা সবার মধ্যেই একটা ঝড় তুলে যায়। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই এ সময় ত্রাণ সংগ্রহ জরুরি হয়ে পড়ে। আমরা এ বিষয়ে গ্রুপে প্রাথমিক ঘোষণা দিলে সবাই বেশ সাড়া দেন। শেষ পর্যন্ত আমরা প্রায় ২ লক্ষ টাকা তুলতে সক্ষম হই।
আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করে তিনি বলেন, আমাদের আহ্বানে মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষক, কর্মজীবি ও প্রবাসীরা ব্যাপকভাবে সাড়া দিয়েছেন। এই স্বতস্ফূর্ত সাড়া যেন সব সময় সব প্রয়োজনে থাকে সেই কামনা করছি।
বন্যায় ভেসে গেছে বাড়ি, নতুন করে ঘর তোলার সংগ্রামে ব্যস্ত কয়েকজন নারী, এমন পরিবারগুলোকে ঘর তুলতে সহায়তা করেছে আসহাবে কাহাফ।
ত্রাণ বিতরণ কমিটির জিম্মাদার রোকন রাইয়ান বলেন, এবারের বন্যা দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষকে এতটাই ক্ষতির সম্মুখিন করেছে যা ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। তবে একটা বড় ব্যাপার, দেশের সামর্থবান অধিকাংশ মানুষই স্বতষ্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছেন ত্রাণ কাজে। দেশের অধিকাংশ মসজিদ মাদরাসা ও আলেম ওলামা এবার যথেষ্ট সচেতন ছিলেন যাতে বন্যার্ত অসহায় মানুষ খাদ্যাভাবে না ভোগেন।
আসহাবে কাহাফের ত্রাণ কাজে সহযোগিতায় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের আলেমদের সংস্থা মীর ফাউন্ডেশন ও মাদরাসায়ে খাদীজা। মিডিয়া সহায়তায় ছিল ourislam24.com