বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

১৭ তারিখের পর হজে যাওয়ার সৌদি ভিসা মিলবে না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সৌদি দূতাবাসের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এ মাসের ১৭ তারিখের পর হজে যাওয়ার জন্য আর ভিসার সুযোগ নেই। তাই এই সময়ের মধ্যেই হজে যাওয়ার টাকা যারা জমা দিয়েছেন এমন বাদবাকি সবার ভিসা সম্পন্ন করতে এজেন্সিগুলোকে তাগিদ দিয়েছে সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়।

কিন্তু এখনো পর্যন্ত ৬২ হাজার হজ যাত্রীর ভিসা হয়নি। মাত্র ১২ দিনে বাকি সবার ভিসা ও অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা কতটা সম্ভব হবে?

হজ এজেন্সিগুলো বলছে এবছর মূল সমস্যা ভিসা পেতে দেরি হওয়ার পেছনে রয়েছে তিনটি কারণ।

বাংলাদেশের হজ এজেন্সিগুলোর সমিতি হাবের সাবেক একজন সভাপতি জামাল উদ্দিন আহমেদ বলছেন, মিনা ও আরাফাতে তাঁবু, আবাসন ও যাতায়াত ব্যবস্থা বুকিং এ সহায়তা করেন এমন একজন যাকে সৌদি ভাষায় বলা হয় মোয়াল্লেম। তার ফি নিয়ে তৈরি জটিলতা ভিসায় দেরি হওয়ার অন্যতম কারণ।

তিনি বলছেন, মিনা ও আরাফাতে মোয়াল্লেমের জন্য নানা ধরনের ফি আছে। যত বেশি ফি হজ যাত্রীর সুবিধা তত বিলাসবহুল। বাংলাদেশি হাজিরা সাধারণত সর্বনিম্ন ফি ৭২০ রিয়ালে মোয়াল্লেম ভাড়া করতেন। কিন্তু এবছর এত কম খরচের মোয়াল্লেম যথেষ্ট সংখ্যায় ছিলো না। যার ফলে মোয়াল্লেম খরচ বাবদ বেশি অর্থ দিতে হচ্ছিলো হাজিদের। যাতে অনেকেই রাজি ছিলেন না।

এ কারণে ৯১ টি এজেন্সি ভিসার কাজ সময়মত করতে পারেনি। জামালউদ্দীন আহমেদ বলছেন, "মোয়াল্লেম ফি দিলে তারপরেই সবকিছু ভাড়া হবে। সব ভাড়া হলে এর পরে আমরা ছাড়পত্র পাবো ও একটা বারকোড পাবো। সেই বারকোড ও ছাড়পত্র আসার পরই ভিসার প্রক্রিয়া করবে দূতাবাস। কিন্তু এবছর বেশি ফিতে মোয়াল্লেম ভাড়া করতে হচ্ছিলো কারণ ৭২০ রিয়ালে আর মোয়াল্লেম পাওয়া যাচ্ছিলো না। এখন হাজিদের সাথে তো আমাদের প্যাকেজ কন্টাক্ট হয়। সে আমাদের বলতেই পারে যে আপনিতো এত বাড়তি খরচের কথা আগে বলেন নাই"

অন্যদিকে এবছরই প্রথম ই-ভিসা চালু করেছে সৌদি আরব। হাবের বর্তমান মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলছেন, "সৌদি দূতাবাস এবার পাসপোর্টে কোন স্ট্যাম্প দিচ্ছে না। ভিসার নতুন প্রক্রিয়াটি সময় নিচ্ছে। দূতাবাস পাসপোর্টগুলো মেশিনে পড়ে পাঠিয়ে দিচ্ছে এজেন্সিগুলোকে। যাদের কাছে একটি পাসওয়ার্ড সহ ই ভিসা চলে যাচ্ছে। এজেন্সি আলাদা কাগজে সেই ভিসা প্রিন্ট করছে। এখানে পাসপোর্ট একবার দূতাবাসে তারপর আবার এজেন্সিতে ফেরত যাওয়া আসার বিষয়টি রয়েছে। সেটি একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়েছে এবার।"

এর অর্থ হলো হজের ভিসা প্রক্রিয়ার বড় দায়িত্ব এবার সৌদি দূতাবাস ছাড়াও রয়েছে এজেন্সিগুলোর হাতেও। অন্যদিকে মি তসলিম আরও বলছেন, একের অধিকবার হজে যাচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য অতিরিক্ত দুহাজার রিয়াল দিতে হচ্ছে সেটিও এবার একটি সমস্যা।

কিন্তু প্রায় ৬২ হাজার হজ যাত্রীর ভিসার কাজতো এখনো সম্পন্ন হয়নি। ১৭ তারিখের মধ্যে সেটি সম্পন্ন করার কতটা সম্ভব হবে?

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলছেন, "আমরা গত দশ দিনে ৬৫ হাজার ভিসা করিয়েছি। আমাদের আগের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বলতে পারি যে আমাদের হাতে এখনো সময় আছে। এর মধ্যেই বাকিগুলোর কাজ সম্পন্ন হবে। সৌদি দূতাবাসের কর্মীরাও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।"

এজেন্সিগুলোর তথ্যমতে আজ একদিনে প্রায় ৯ হাজার হজ যাত্রীর ভিসার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এজেন্সিগুলো মনে করছে এ সময়ের মধ্যে তারা কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। কিন্তু এসব কিছুর মধ্যে অনিশ্চয়তা আর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ