শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ইসি আ'লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে চেষ্টা করছে: মওদুদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য সবধরণের কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।শুক্রবার সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে তার নিজ বাসভবনে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি উপলক্ষে সমাবেশে এ মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।

সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি অথর্ব্য নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। তারা দক্ষও নয়। এই নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে তারা (ইসি) আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় ফিরে আনার জন্য সব ধরনের কাজ করে যাচ্ছে।

মওদুদ বলেন, এ নির্বাচন কমিশনার দিয়ে দেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আশা করা যায় না। ব্যর্থতার দায়ে অবিলম্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারের পদত্যাগ করা উচিত।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বর্তমান সরকার তাদের মতে গণতন্ত্রের মহানায়ক হয়ে আছেন, কিন্তু সরকার কোনো বিরোধী দলকে ঘরোয়া বৈঠক, সভা-সমাবেশ করতে দেয় না। এর দুইটি কারণ রয়েছে। একটি হলো, বর্তমান সরকারের এখন মাঠ পর্যায়ে কোনো জনপ্রিয়তা নেই। আর দ্বিতীয়টি হলো, বিএনপি জনগণের কাছে যায়, জনগণ বিএনপিকে চায়, এটা সরকার পছন্দ করছে না। দেশের জনগণের যে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন বিএনপির প্রতি আছে তা আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারছে না। এ দুইটি কারণে সরকার বিএনপিকে একটি ঘরোয়া বৈঠকও করতে দিচ্ছে না। এ জবাব আগামী নির্বাচনে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, সারা দেশের মানুষ গত ৯ বছরে নির্যাতিত হয়েছে, নিষ্পেষিত হয়েছে, জেলে গেছে, জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি দখল হয়েছে। বাড়ি থেকে নারীদেরকে অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়েছে। তারা কেউ এসব ঘটনা ভুলেনি। সরকারের দলীয় লোকেরা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করছে, দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করে নিয়েছে, দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে, তাদেরকে বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব দেবে। এ প্রতিক্রিয়া সরকার অনুভব করতে পাচ্ছে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে তফসিল ঘোষণা করার পর না কি তারা দেখবে সব দলের জন্য সমান সুযোগ আছে কি না। তার মানে হলো, আগামী এক বছর, দেড় বছর বিরোধীদলগুলোর জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার কোনো অধিকার থাকবে না। তবে সরকারি দলের ভোট চাওয়ার অধিকার থাকবে, তারা সরকারের সম্পদ নষ্ট করে, সরকারি অর্থ খরচ করে, প্রশাসন ও পুলিশকে ব্যবহার করে নৌকায় ভোট চাইতে পারবে। কিন্তু বিরোধীদলগুলোকে সে সুযোগ দেয়া হবে না, ভোটও চাইতে পারবে না।

তিনি বলেন, আমরা (বিএনপি) ক্ষমতায় গেলে দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। দেশে রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক চর্চার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবো। এখন দেশে একদলীয় শাসন চলছে। গণতন্ত্রের ন্যূনতম চর্চা নেই। এ সরকারের কাছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বলতে কিছুই নেই।

মওদুদ আহমদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তারা সারা দেশে বড় বড় বক্তব্য দেয়, কিন্তু নিজের এলাকায় বিরোধী দলকে কোনো সভা সমাবেশ করতে দেয় না। এটাই হলো এ সরকার এবং আওয়ামী লীগের আসল মুখোশ।

বসুরহাট পৌর হলে শুক্রবার সকালে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি উপলক্ষে সমাবেশে বাধা প্রদান করায় ভেন্যু পরিবর্তন করে মওদুদের নিজ বাসভবনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তিনি।

এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী আবদুল হাই সেলিমের সভাপতিত্বে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল হক, যুবদলের সভাপতি আবদুল মতিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, পৌর যুবদলের সভাপতি শওকত হোসেন ছগির, সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর, উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুর রহমান রাজন, পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি ওবায়দল হক রাফেল, সাধারণ সম্পাদক সালা উদ্দিন সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল হক আরিফসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো. নাজির আলম বলেন, বসুরহাট পৌরসভা হলে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির অনুষ্ঠানের জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছিল না। প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় বসুরহাট পৌরসভা হলে কর্মসূচি পালন করতে নিষেধ করা হয়েছে।

-এজেড


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ