মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


উইঘুরকে ইসলামমুক্ত করতে চীনের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : চীনের মুসলিমদের যেনো দুঃসময় আর কাটছে না। ইসলাম পালনে বাধা প্রদানে সরকারের মনোভব দিন দিন কঠোর হচ্ছে। এতে ইসলাম বিমুখ হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের অনেকে।
 চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে দাঁড়ির ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং প্রকাশ্যে নামাজ পরার অনুমতি নেই। অঞ্চলটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নামাজের সময় কাশগার মসজিদের বাইরেও মুসুল্লিতে পূর্ণ হয়ে যেত। মুসুল্লির তুলনায় স্থান অনেক কম হওয়ায় তাদের গাদাগাদি করে ঈদের নামাজ পড়তে হত।
তবে এ বছর এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে। ঈদুল ফিতরের নামাজে সবচেয়ে কম মুসুল্লি জড়ো হয় এখানে। দেশটির কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেন, সরকার নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঈদ উপলক্ষে কয়েকটি চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছে। একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘অঞ্চলটি ধর্মকর্ম করার জন্য উপযুক্ত নয়। এখানে এতে বাধা দেয়া হয়।’
বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঠেকাতেই এই বাধা ও ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, জিনজিয়াং একটি উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছে।
আঞ্চলিক রাজধানী উরুমকিতে একের পর এক দাঙ্গায় প্রায় ২শ লোকের প্রাণহানির পর ২০০৯ সালে চীন সরকার জিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা শুরু করে।৫০ বছরের কম বয়সী কেউ এখানে প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে পারে না। এমনকি ৫০ বছরের নীচের কাউকে দাঁড়িও রাখতে দেয়া হয়না। এছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রমজান মাসের রোজা রাখারও অনুমতি নেই।
পাকিস্তান সীমান্তবর্তী তাশুকুরগানে রমজানের ছুটিতে খাবার পরিবেশনে অস্বীকার করায় শাস্তি হিসেবে একটি হালাল রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তা বলেন, স্কুলগুলোতে আসাসালামু আলাইকুম না বলতে জন্য শিশুদের নিরুৎসাহিত করা হয়। তিনি বলেন, ‘সরকার মনে করে এই সব ইসলামিক শব্দ বিচ্ছিন্নতাবাদের নামান্তর।’
হোতানের একটি মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে ঢোকার সময় মুসুল্লিদেরকে পুলিশের ব্যারিক্যাডের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ সময় দুটি চেকপয়েন্টে তাদেরকে পরিচয়পত্র দেখাতে হয়। চীনের কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে উইঘুর মুসলিমদের ওপর দমনপীড়নের পক্ষে সাফাই গাইতে এই মুসলিমদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সম্পৃক্ততার কথা বলে আসছে। তারা দাবি করছে, আল-কায়েদার মতো বিদেশী চরমপন্থীদের সঙ্গে এরা যোগ দিচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উইঘুররা ভিড়ের মধ্যে নির্বিচারে ছুরিকাঘাত ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। ছাড়াও দাঙ্গা ও সরকারি বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েকশ লোক প্রাণ হারিয়েছে। দোকানী তাশকুরগান আশপাশের দেশ থেকে সহিংসতার ঢেউ চীনেও আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আরেকটি পাকিস্তান বা আফগানিস্তান হতে চাই না।’ তিনি আরো বলেন, ‘তবে মুসলিমদের মধ্যে অল্প কয়েকজন লোকই চরমপন্থী।’


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ