বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


দারুল উলূম দেওবন্দে যারা পড়তে যাচ্ছেন তাদের করণীয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হামিম আরিফ: উপমহাদেশের সর্বোচ্চ দীনি বিদ্যাপীঠ হিসেবে খ্যাত, কওমি মাদরাসার সূতিকাগার ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের পড়ার স্বপ্ন প্রতিটি কওমি পড়ুয়া তরুণের। কিন্তু আজকাল ভিসা বা এ সংক্রন্ত জটিলতায় অনেকেই তাদের স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত হন। আবার অনেকে পথ ঘাট পেলেও দেওবন্দে পৌঁছতে নানা রকম ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। এখানে যারা দেওবন্দে পড়তে যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য কিছু করণীয় তুলে ধরা হলো। কাজগুলো এভাবে করলে সহজ হবে।

যেভাবে যেতে হবে

১. ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা হতে পারে। স্টুডেন্ট ভিসা নাও মিলতে পারে। সে জন্য ১ বছর মেয়াদি একটা টুরিস্ট ভিসা নিয়ে নিন।

এক্ষেত্রে মিথ্যা, ধোকা বা কারচুপির আশ্রয় নেয়া ঠিক হবে না। আহলে ইলম ও ওয়ারিছীনে নবীর জন্য এরূপ করা অন্যায় হবে। মনে রাখবেন, দারুল উলূম দেওবন্দে পড়া বা ভর্তি হওয়া শরীয়তের ফেকহী দৃষ্টিতে মুস্তাহাবও নয়। আবার এমনও নয় যে, সেখানের জ্ঞান এ দেশে হাছিল করা যায় না। সেখানে যাওয়া ও ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হওয়া মানে হলো ব্যক্তির একটি আবেগ ও তামান্না পূরণ হওয়া। অতএব এর জন্য মিথ্যা, ধোকা বা কারচুপির আশ্রয় নেওয়া আদৌ জায়েয হবে না।

২. আসার ক্ষেত্রে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকলে প্লেনে আসাই ভালো। এক্ষেত্রে স্মরণ করে ভিসায় ‘বাই-এয়া’ অপশন দিতে ভুলবেন না। আর ট্রেনে আসলে কলকাতা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস দিয়ে দিল্লী পর্যন্ত আসতে পারেন। পরে দিল্লী থেকে অন্য ট্রেনে দেওবন্দ। অথবা কলকাতা থেকে অন্য ট্রেন আছে সাহারানপুরের, যেমন আমৃতসর এক্সপ্রেস৷

স্মরণ রাখবেন! সাহারানপুর থেকে দেওবন্দ বাস আছে৷ আবার দিল্লী মারকাজ মসজিদ টু সরাসরি দেওবন্দ বাস আছে৷

৩. আসার ক্ষেত্রে কলকাতায় এসে ট্রেনের টিকিট কাটতে UP যাবো না বলাই ভাল৷ পরিস্কার বলবেন উত্তর প্রদেশ “সাহারানপুর” যাবো।

৪. আসার সময় যতটুকু সম্ভব সামান কম আনুন। যাতে ইমেগ্রেশনে ঝামেলা পোহাতে না হয়।

৫. আসার সময় স্মরণ করে কলকাতায় এসে একটা সিম কিনে নিন। অন্যথায় বিপদাপদে সাথী ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না আর দেওবন্দ আসার আগ পর্যন্ত সিমও কিনা সম্ভব হবে না।

কখন আসবেন?
সম্ভব হলে শা’বানের ভেতরেই আসা ভালো। যেহেতু আসার পর বাংলাদেশী ছাত্রদের কিছুটা ভেতরগত ঝামেলা পোহাতে হয়। তাছাড়া থাকার (পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়) জন্য সিটের সুবিধারও একটা ব্যাপার আছে।

ভর্তি পরিক্ষার্থীর সংখ্যা

পাঁচহাজারেরও অনেক বেশি। পর্যায়ক্রমে প্রতিবছর তা বাড়ে।

নতুন ছাত্র কতজন

নতুন ১০০০ জন ভর্তি নেয়া হয়। (এর মধ্যেও আবার দেশ ও স্টেইটভিত্তিক কোটা এবং তাকাবুল তো আছেই)

পরীক্ষা

কি কি কিতাব পরীক্ষা নেয়া হয়?
১. মিশকাত ২. হেদায়া ৩-৪ ৩. শরহু নুখবাতিল ফিকার ৪. শরহুল আকাঈদ ৫. সিরাজি। (সব লিখিত)

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে

১. উত্তরপত্র ফুল আরাবিতে দিন।
২. উর্দূ এবং আরাবি সুন্দর খতে লিখুন।
আর বেশি করে শেষ রাত্রিতে তাহাজ্জুদ পড়ে মাওলার দরবারে অশ্রু বিসর্জন দিন। স্মরণ রাখবেন! যোগ্যতা বলে কখনো কিচ্ছু হয় না যদি মাওলার রেজা না থাকে। আর দেওবন্দ’র ইতিহাস তো জানা আছেই।

পরীক্ষা শুরু

১৩ শাওয়াল। প্রতি পরীক্ষার আগে একদিন খালি আছে।

দাখেলা না পেলে

এই নিয়ত এখনি বাদ দিন। কেনো হবে না? মাওলা তো আছেন ই। আর একান্তই যদি দাখেলা না পান তাহলে ভিন্ন ব্যবস্থা আপনি নিজেই সেখানে করে নিতে পারবেন।

ছাত্রের জন্য দেওবন্দ কর্তৃক সুবিধাদি!

১. ভর্তি, কিতাব, থাকা-খাওয়া সম্পূর্ণ ফ্রি।
২. মাসে ২০০ রুপি বৃত্তি।
৩. শীতে কম্বল। পুরাতন ছাত্রদের জন্য আদিকালের ঐতিহ্য ধরে রাখতে লেমটন’র জ্বালানি তৈল এবং ঝাড়ু’র টাকা।
৪. একটা সিট।একটা আলমারি।

এরশাদ ও বি চৌধুরীকে ইসলামের জন্য কাজের অঙ্গীকার করালেন আল্লামা মাহমুদুল হাসান


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ