বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

ঈদ বানানে একাডেমির দ্বৈতনীতি ও লুকোচুরি: মানতে পারছেন না কেউ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

এএসএম মাহমুদ হাসান; বিশেষ প্রতিবেদক

চিরাচরিত ‘ঈদ’ বানানে দীর্ঘ-ঈ বাদ দিয়ে হ্রস্ব-ই ব্যবহার করে ‘ইদ’ করার প্রস্তাবে দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলা একাডেমি। এমনকি সাহিত্যিক আলেম ও বাংলা ব্যকরণবীদরাও এর সংস্কারের বিরোধিতা করেন। যা আওয়ার ইসলামের প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল।

রোজার ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে আকস্মিক এই প্রস্তাবে বিতর্কের ঝড় উঠলে বৃহস্পতিবার ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিয়ে একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান লিখেছেন, ‘ঈদ’ বানানটি বাঙালি ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে।

একাডেমির মহাপরিচালক লিখেছেন, ‘বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধানে প্রথম বানান হিসাবে 'ঈদ' এবং বিকল্প বানান 'ইদ' দেয়া আছে। প্রথম বানানটি প্রচলিত; ২য় বানানটি সংস্কারকৃত। কোনো মানুষ দীর্ঘকাল কোনো বানান ব্যবহার করলে তা ঐতিহ্যে পরিণত হয়ে যায়। 'ঈদ' বানানটি তেমনি। অতএব, দুটি বানানই ব্যবহার করা যায়।’

কিন্তু বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের কথায় লুকোচুরির অভিযোগ উঠেছে বোদ্ধা মহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । ঈদকে কেন অসংগত বানান বলে অভিধানে অবিহিত করে ইদকে সংগততর বানান বলা হয়েছে সে প্রশ্নই ঘুরেফিরে উঠে আসছে । কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে, ধীরে ধীরে ঈদকে পরিমার্জন করে ইদে পরিণত করার চক্রান্তেই ইদকে সংগততর বলা হয়েছে। বোদ্ধা মহল চাচ্ছেন, বাংলা একাডেমি ঈদকে সংগততর ঘোষণা করে ইদকে ছাটাই করুক। কারণ ঈদ শব্দটি বানানে ও উচ্চরণে এ দেশের মানুষের আবেগ মিশ্রিত। আর এই আবেগের কারণেই যত সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেহ কেহ বলছেন, এটি নিছক একটি ইসলামি সংস্কৃত শব্দের অপমান। যেটা অনেকের অনুভূতিতেও আঘাত লেগেছে। সুতরাং মতান্ধতা ও আরবী কৃষ্টিকালচারের বিরুদ্ধাচরণে এমন হয়ে থাকলে এটা বাংলা একাডেমির ধৃষ্টতা। তারা বলছেন, ঈদ তো ঈদ ই । এখানে সংগততর ঈদ। ইদ বলতে মুসলমানদের কোনো উৎসব নেই।

দুদিন ধরে দেশের সচেতন মহলে ঈদ বানান পরিবর্তনে বাংলা একাডেমির প্রস্তাবে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে দেশের ভাষা ও সাহিত্য অঙ্গনে। সাহিত্য সমালোচক, কবি ও ভাষাতাত্ত্বিক সাখাওয়াত টিপু তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘'ইদ' নয়, লিখুন 'ঈদ'। 'ইদ' শব্দ ভুল! এক ভাষা থেকে অন্য ভাষার শব্দ তার ভাব ও ধ্বনিগতভাবে শব্দ আত্তীকরণ করে। গায়ের জোরে শব্দ বিকৃতকরণ ভাষার ফ্যাসিবাদ। এটা বল প্রয়োগের সংস্কৃতি!’

সাখাওয়াত টিপু আরেকটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'ঈদ' বানান এভাবে 'ইদ' বললে 'ইঁদুর ইঁদুর' কালচার মনে হয়। আরবি 'ঈদ' মানে 'আনন্দ'। কিন্তু 'ইদ' মানে কি আনন্দ’?

একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল থেকে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষকে জিজ্ঞেস করা হয়, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম দীর্ঘ-ঈ ব্যবহার করতেন। তাহলে কেন ঈদ বানান হ্রস্ব-ই দিয়ে লেখার প্রস্তাব আসল? এর জবাবে তিনি বলেন, ঈদ শব্দটি বাংলার এবং বাঙালির উৎসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কোনো কোনো বানান থাকে যার পরিবর্তন হলে চোখে লাগে। কখনো কখনো আবেগে লাগে, কখনো কখনো বিশ্বাসে লাগে। এর ফলে সমাজে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। ফেসবুকে অনেকেই এর প্রতিবাদ করে লিখছে। আমার মনে হয় কিছু কিছু শব্দ ব্যতিক্রম বানান নিয়ে থাকতে পারে। যেমন ঈদ এর বেলায় এমনটি হতে পারে। ঈদ বানান যেহেতু আমাদের অপটিকস সহ্য করে নিয়েছে, তাই আমার মনে হয় ঈদ বানান অপরিবর্তিত রাখলে অধিকাংশ বাঙালির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে’।

‘ঈদ’কে ইদ করার বিপক্ষে আলেমরা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ