শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


হেফাজতের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে: সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : হেফাজতে ইসলামের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন, ভাস্কর্য অপসারণ করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। তাদের অভিযোগ এসব মেনে সরকার প্রকারান্তে হেফাজতকে পুষছে।

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি সংস্কৃতিবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সংস্কৃতিকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। অবস্থান কর্মসূচি ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘সরকার এখন হেফাজতকে একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে জুজুর ভয় দেখাতে চায়। আমার মনে হয়, এটাই এখন বর্তমান সরকারের সাফল্য।’ তাঁর ভাষ্য, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজ থেকে ভাস্কর্য প্রসঙ্গে বলার পরই এ নিয়ে তো জল ঘোলা হলো।’

রামেন্দু বলেন, আজকাল তো কিছু বলা যায় না। জুজু হয়ে গেছে, কেউ কিছু বললে তা ধর্মের বিরুদ্ধে বলা হয়। এভাবে এদের প্রশ্রয় দিলে, এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করা না গেলে নিজেদের কবর আমরা নিজেরাই খুঁড়ব।

হেফাজত নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে হিজাব পরিয়ে ছাড়বে

তিনি ভাস্কর্য অপসারণ, পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন ও সর্বশেষ রাঙামাটির লংগদুতে পাহাড়িদের বাড়িঘর পোড়ানোর ঘটনায় বামধারার রাজনৈতিক দলগুলোর নিস্ক্রিয়তায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী আশরাফুল আলম বলেন, ‘হেফাজতের কথা বলছে? তারা তো দৃশ্যমান। তাদের কর্ম সবই পত্রিকায় আসে। এরা ছাড়া অনেক ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী এ চিন্তা ধারণ করে। এদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের মধ্যে কারা এসব প্রতিবাদে আসছে না, তাদের বিষয়েও নজর রাখুন। কারণ এই ধরনের সমাবেশে এই পরিমাণ জনসমাগমে সবাই সন্তুষ্ট হতে পারেন, আমি না।’

নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন,  ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুজনকে পুষছেন একজন হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আর আরেকজন তেঁতুল হুজুর। তাঁকে (অর্থমন্ত্রীকে) সংস্কৃতিবান্ধব মানুষ হিসেবে জানতাম কিন্তু তিনি জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, ব্যাংক বন্ধের ব্যবস্থা করছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী তিন বছরের মধ্যে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। তেঁতুল হুজুরকে পুষতে গিয়ে আজ দেশের মুক্তিযুদ্ধ, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বাঙালি সংস্কৃতি জব্দ হবার উপক্রম হলো।’

সভাপতির বক্তব্যে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়ে, আমাদের কর্ম দিয়ে যাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি, কথা বলছি তাদের সঙ্গে সরকারের কোনো সুসম্পর্ক চাই না।’

অবস্থান কর্মসূচিতে আরো অংশ নেন বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সহসভাপতি ড. নিগার চৌধুরী, পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা, চারুশিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী।

আলোচনার পাশাপাশি অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে চারুশিল্পীরা তুলির মাধ্যমে তাঁদের প্রতিবাদের ভাষা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দেশের প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীরা আবৃত্তি পরিবেশন করেন।

-এআরকে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ