শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


ভাস্কর্য সরানোয় প্রধানমন্ত্রীকে হেফাজতের ধন্যবাদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।

সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সরকারকে ধন্যবাদ জানাবে।’

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর ভাস্কর মৃণাল হকের নেতৃত্বে ১৩ জন কর্মীসহ মোট ২০ শ্রমিক সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেন।

ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্টের সামন থেকে অপসারণের পর এদিন ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকা মেট্রো ন-১৬-১৫০৪ নম্বরের পিকআপ ভ্যানে করে হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের ভেতর পানির পাম্পের পাশে ভাস্কর্যটি রাখা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে থেমিস দেবীর মূর্তি (ভাস্কর্য) বসিয়ে দেওয়া মানে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সাথে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া এবং দেবীর মূর্তি স্থাপন সংবিধান বিরোধী, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বোধ-বিশ্বাসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ, নির্বাহী বিভাগের আওতাধীন এলাকায় এককভাবে থেমিস দেবীর মূর্তি স্থাপন করা মানে অনধিকার চর্চা, মূর্তিকে সার্বজনীনতা দেওয়ার অপচেষ্টা, যা নৈতিকতা ও আইনবিরোধী , মূর্তি স্থাপন গণতন্ত্রের প্রতি চরম কুঠারাঘাত,দেবীর স্থাপন সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক,এই মূর্তি দেশ, জাতি ও গণমানুষের চেতনার পরিপন্থী।’

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ওলামা কেরামকে আস্থা ও ভরসা রাখতে বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কথা প্রতিফলন ঘটেছে, সেজন্য তাকে ধন্যবাদ। দেশের মানুষের ধর্মীয় চেতনা বোধকে মূল্য দিয়ে মূর্তি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সরকারে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। মূর্তি নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করেছে সরকার।’

[caption id="" align="alignnone" width="604"] রাতে ১২টার দিকে শুরু হয় ভাস্কর্য সরানোর কাজ[/caption]

এদিকে, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আমাকে ডেকেছিলেন। এসময় ড. কামাল হোসেন, খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ সুপ্রিম কোর্টের বারের বর্তমান ও সাবেক দায়িত্বশীলরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনের ভাস্কর্যকে কেন্দ্র করে আমি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা চাই না। এটি সরিয়ে নেওয়া হোক। এবং এমন জায়গায় স্থাপন করা হোক যেন প্রশ্ন না ওঠে ।’’

১১ এপ্রিল গণভবনে  হেফাজতে ইসলামের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপন করা ভাস্কর্য সরিয়ে নিতে দাবি জানান। সে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে সম্প্রতি স্থাপন করা থেমিসের মূর্তি আমিও পছন্দ করিনি। থেমিসের মূর্তিতে আবার শাড়ি পরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের সামনে গত ডিসেম্বর মাসে এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছেন ভাস্কর মৃণাল হক। ডান হাতে নিচের দিকে ধরা একটি তলোয়ার আর বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা নিয়ে দাঁড়ানো নারী। এই ভাস্কর্য স্থাপনের পর থেকেই বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন তা অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছে।

বৃহস্পতিবার সকালেও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন রমজানের আগেই ভাস্কর্য সরাতে আহ্বান জানায়। এর আগে ইসলামী ঐক্যজোট হরতালের ঘোষণা দেয়-যে রমজানের আগে গ্রিক দেবী না সরালে তারা কঠোর কর্মসূচি দেবে। অব্যাহত প্রতিবাদ আসে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনৈতিক দল, আওয়ামী ওলামা লীগসহ সুন্নীপন্থী একাধিক সংগঠনের তরফে। এছাড়া গত ২১ মে ভাস্কর্য অপসারনের দাবিতে ঢাকায় মহা সমাবেশ করে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

এসএস/


সম্পর্কিত খবর