সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

`নামাজের প্রস্তুতি হিসেবে যেমন অজু; রোজার প্রস্তুতি হিসেবেও কয়েকটি কাজ আছে'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শাহনূর শাহীন: আর মাত্র ১১ দিন পর শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান বা সিয়াম সাধনার মাস। রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তাআলান পক্ষ থেকে বিশেষ এক নেয়ামত। রহমত বরকত ও নাজাতের এই মাস আত্মা-পরিশুদ্ধ করার নিয়ামক। আত্মসংযমী, বিনয়ী, দয়াশীলতা, ধৈর্য্যশীলতা, দানশীলতাসহ যাবতীয় উত্তম গুনাবলী অর্জন ও আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায় হলো মাহে রমজানে রোযা রাখা। রমজানে রোযা রাখার দ্বারা শরীর ও মন দুটোই পবিত্র হয়। রমজানের প্রস্তুতি কখন থেকে কীভাবে নিতে হয়, কী করণীয় কী বর্জনীয়, আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে এ সমস্ত বিষয়ে কথা বলেছিলাম প্রতিথযশা আলেম রাজধানী ঢাকার জামেআ আবু বকর রা. এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল লেখক, ওয়ায়েজ ও শিক্ষাবিদ মুফতি বোরহান উদ্দিন রাব্বানী’র সাথে। আওয়ার ইসলাম পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।

সামনে রমজান মাস, রমজানের প্রস্তুতি কীভাবে নেয়া দরকার?

রমজান মাস আমাদের জন্য রহমত বরকত এবং নাজাতের মাস। এই মাসের প্রস্তুতি মূলত রজব মাস থেকেই শুরু করতে হয়। রাসুল স. রজব মাস এলেই আল্লাহ তাআলার দরবারে দোয়া করে বলতেন, হে আল্লাহ আমাদের রজব এবং শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং রমজান পর্য্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন। বুঝা গেলো রমজানের প্রস্তুতি রজব মাস থেকেই শুরু করতে হবে।

রমজানের প্রস্তুতি নিতে হয় দুইভাবে। জাহিরি ও বাতিনি। জাহিরি প্রস্তুতি হলো বাহ্যিক প্রস্তুতি আর বাতিনি প্রস্তুতি হলো মানসিক প্রস্তুতি। বাহ্যিকভাবে পবিত্র মাস আসার আগে পবিত্র হয়ে প্রবেশ করার প্রস্তুতি নিতে হবে। পূর্বেকার কাযা রোযা, কাযা নামাজ বা ইবাদাতে অপূর্ণতা থাকলে সেটা পূর্ণ করে নিতে হবে। গোনাহ ছেড়ে দিতে হবে।

রমজানে ইবাদাতে যাতে ব্যঘাত না ঘটে সে জন্য অগ্রিম কিছু কাজ করে রাখতে হবে। কোনো কাজ জমিয়ে রাখা যাবে না। যেমন রোযার পর পরই ঈদ আসে। ঈদ উপলক্ষ্যে প্রায় সবাই মার্কেটিং করে থাকে। সেক্ষেত্রে পরামর্শ হলো রোযার আগেই প্রয়োজীয় মার্কেটিং এর কাজ সম্পন্ন করে রাখা। কেননা রোযা রেখে মার্কেটে গিয়ে মার্কেটিং করা শারীরিকভাবে কষ্টকর। তাছাড়া রোযা রেখে মার্কেটিং করা, রোযার হক নষ্ট হওয়ার মাধ্যমে আত্মিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়।

অন্যদিকে রমজান আসার আগেই মানসিকভাবে রোযা রাখার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

রমজানে রোযা রাখার মূখ্য উদ্দেশ্য কী?

রমজানে রোযা রাখার মূখ্য বা প্রধান উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেছেন, ‘লাআল্লাকুম তাত্তাকুন’ যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো। মূল কথা হলো গোনাহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তাকওয়া অর্জন করাই রমজানের মুখ্য উদ্দেশ্য।

রমজান মাস এলে অনেক ব্যবসায়ী ইচ্ছে করেই বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দেয়, এ জন্য কী সে গোনাহগার হবে?

হ্যাঁ, কেউ যদি ইচ্ছে করে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে তাহলে অবশ্যই রোযাদারদের কষ্ট দেয়ার কারণে তাকে গোনাহগার হতে হবে। এক্ষেত্রে উচিত ছিল রোযাদারের সম্মানে দ্রব্যাদির দাম কমিয়ে দেয়া যেমনটা আরব বিশ্বে হয়ে থাকে, কিন্ত সেটা না করে দাম বাড়িয়ে রোযাদারের ভোগান্তি বৃদ্ধি করার ফলে গোনাহগার হতে হবে।

এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?

এর থেকে উত্তরণের দুটি উপায় রয়েছে। ব্যক্তিগত পদ্ধতি এবং সামাজিক পদ্ধতি। ব্যক্তিগত পন্থায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিশেষ করে মসজিদের ইমাম ও খতিবগণ জুমআর খুতবাসহ বিভিন্ন আলোচনায় ব্যবসায়ীদেরকে সচেতন করতে পারেন। এছাড়া সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লোকদেরকে বুঝাতে হবে যাতে তারা অতিরিক্ত ব্যবসা না করে। সরকারিভাবেও প্রতিরোধমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। আগে তো রমজানের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পরিমাণটা বেশি ছিল। সরকারিভাবে কিছুটা সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ায় এখন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে বলা য়ায়। তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরতে হবে।

রমজানে ইবাদাতের জন্য পূর্ব পরিকল্পনা জরুরি কিনা?

যে কোনো কাজেই পূর্বাপর প্রস্তুতি না থাকলে সুষ্ঠুভাবে তা আদায় করা যায় না। প্রত্যেকটা কাজেরই একটা পূর্ব প্রস্তুতি আছে। যেমন, নামাজের আগে অযু আছে। এমনকি নামাজের আগে নামাজ আছে নামাজের পরেও নামাজ আছে। ঠিক তদ্রুপ রোযার আগে রোযা আছে। রজব ও শাবানের রোযা, আইয়্যামে বীজের রোযা। এমনকি রোযার পরেও শাওয়ালের রোযা আছে। মোদ্দা কথা রোযার আগে যেমন প্রস্তুতিমূলক রোযা আছে রোযার পরেও রোযা আছে পূর্ববতী রোযার ফলাফল উবলব্ধি করার জন্য। সর্বোপরি রমজানের আগে ইবাদাতেদর জন্য অবশ্যই পরিকল্কপনা এবং পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে।

আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

আওয়ার ইসলামকেও ধন্যবাদ মূল্যবান ইস্যুতে কথা বলা ও কথাগুলোকে তুলে ধরার জন্য।

শিশুদের কোরআন শেখাতে কাতার টেলিভিশনের বিশেষ উদ্যোগ

জামিয়া উমেদনগরের ছাত্ররা দাওরা পরীক্ষা দিচ্ছে না; নেপথ্যে কী কারণ?


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ