আওয়ার ইসলাম : বাংলাদেশের প্রবীণ ঔপন্যাসিক কাসেম বিন আবুবাকার। পাঠকদের মাঝে তার রয়েছে গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা। গ্রামীণ বাংলার পাঠক-পাঠিকার নিকট তিনি তুমুল জনপ্রিয়। তার ভক্তদের দাবি কাসেম বিন আবুবাকার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক।
তবে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে বরাবরই আলোচনার বাইরে ছিলেন কাসেম বিন আবুবাকার। ঔপন্যাসিক হিসেবেও সাহিত্য সমাজে 'স্বীকৃতি ও সমাদর' পাননি তিনি।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি কাসেম বিন আবুবাকারকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের তোলপাড় শুরু হয়েছে। এরপর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইয়াহু নিউজ, মধ্যপ্রাচ্যের আরব নিউজ, মালয়েশিয়ার দ্যা স্টার ও মালয়মেইল, পাকিস্তানের দ্য ডন, ফ্রান্সের ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোর ও রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল, হাঙ্গেরির হাঙ্গেরি টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে কাসেমকে নিয়ে ওই প্রতিবেদন ছেপেছে।
এএফপির তথ্য অনুযায়ী কাসেম বিন আবুবাকার ১৯৭০ দশকের শেষের দিকে একজন বই বিক্রেতা হিসেবে প্রায় সব উপন্যাসের মধ্যে শুধু শহুরে অভিজাতদের জীবনযাত্রার কথা দেখতে পেয়ে নিজেই হাতে কলম তুলে নেন।
১৯৭৮ সালে কাসেম তার প্রথম উপন্যাস 'ফুটন্ত গোলাপ' লেখেন। তবে 'মোল্লার উপন্যাস বিক্রি হবে না' বলে এটি প্রকাশ হতে প্রায় এক দশক সময় লাগে। ওই প্রকাশকের কাছে মাত্র এক হাজার টাকায় এটির সত্বও বিক্রিও করে দেন তিনি।
এরপর ইসলামী মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে তিনি লেখেন একাধিক জনপ্রিয় উপন্যাস। এসব উপন্যাস দ্রুতই তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। লাখ লাখ পাঠকের হাতে হাতে ঘুরতে থাকে তার উপন্যাস।
এএফপিকে বাংলাদেশের সাংবাদিক কদরুদ্দিন শিশির বলেছেন, কাসেম বিন আবুবাকার এমন এক নতুন পাঠকগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছেছেন, তার আগে যাদের অস্তিত্বের কথা কেউ ভাবেইনি।
তিনি আরও বলেন, গ্রাম এলাকায় তরুণ প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকাকে সেরা উপহার হিসেবে কাসেমের উপন্যাস দিয়ে থাকে।
যেমন আছে, যেভাবে চলছে পশ্চিমবঙ্গের কওমি মাদরাসা
কাসেমের উপন্যাস মাদ্রাসা বা ধর্মীয় আবাসিক স্কুলের ছাত্রদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় হওয়ার বিষয়টি বিশ্লষণ করেছেন প্রতিবেদক।
তারা কাসেমের গল্পের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারে। আর এসবের কাহিনী বিন্যাস এবং ভাষাও তাদের কাছে আরামদায়ক মনে হয় বলে পারভেজের মত।
এএফপি বলছে, স্যেকুলার লেখকরা এমন এক দুনিয়ার গল্প বলেছে, যেখান থেকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রধান অংশের গ্রামীণ ও ধর্মীয় জীবনের অস্তিত্ব মুছে ফেলা হয়েছে। কাসেম এই শূন্যতার বিষয়টি অনুধাবন করে তার উপন্যাসের বাজার গড়ে তুলেছেন।
এছাড়া কাসেমের এ প্রচেষ্টা থেকে নতুন প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশী লেখক অনুপ্রাণিত হয়ে সমকালীন 'ইসলামী উপন্যাস' লিখে সাফল্যের পথ খুঁজে পেয়েছেন। এদের মধ্যে আবদুস সালাম মিতুল, কাউসার আহমেদ এবং আবদুল আলিমের মতো লেখক উল্লেখযোগ্য।
-এআরকে