শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


আমেরিকায় একাধিক মক্কা-মদীনা ও এক টুকরো বিস্ময়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুসা আল হাফিজ : আমেরিকার Ohio সিটির বিখ্যাত এক উপশহর Madina, ১৮১৮ সালে এখানে শহুরেজীবনের সূচনা, ১৯৫২ সালে শহরটি সিটির মর্যাদা পায়। Washington এর বিখ্যাত এক শহর Madina, ১৮৯১ সালে শহুরে জীবন সূচিত হয় এখানে। ১৯১৪ সালে পৌরসভার উদ্বোধন হয়। Minnesota এর একটি শহরের নাম Madina. ১৯৫৮ সালের ১১ মে এখানে নগরজীবনের সূচনা। Texas এ রয়েছে Madina county নামে উপশহর।

আরেকটি উপশহর হচ্ছে Madina Texas (প্রতিষ্ঠা : ১৭৭৪ খ্রি.) Tennessee অঙ্গরাজ্যে রয়েছে Madina শহর। শহরটির অবস্থান Gibson county তে। winter প্রদেশে রয়েছে Madina county. New York এর একটি বিখ্যাত গ্রামের নাম Madina . এছাড়া আমেরিকা, কানাডা, জ্যামাইকা, ম্যাক্সিকো ইত্যাদিতে রয়েছে মদিনা নামে বহু গ্রাম-শহর ও জনপদ।

মক্কা নামে আমেরিকায় রয়েছে বহু শহর। যেমন- Callifornia Gi Riverside county তে বিখ্যাত এক শহর হচ্ছে Mecca. প্রায় দুইশ বছর পুরনো এ শহর। আমেরিকার Indiana রাজ্যের Parke county র প্রাচীন এক শহর হচ্ছে Mecca, ১৯৮০ এর ৭ আগস্ট শহরটির গোড়াপত্তন হয়।'

'আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার' বইটি থেকে এই প্যারাটি পড়ুয়াদের একটি সাইটে শেয়ার করলেন অনলাইন এক্টিভিস্ট abul kalam azad। তাতে শিক্ষিত মুসলিম তরুণদের প্রতিক্রিয়া অবাক হবার মতো।আমাকে প্রতিক্রিয়াগুলো ইনবক্স করলেন একজন।তাকে ধন্যবাদ। লক্ষ্য করলাম,তথ্যগুলোকে ভুতুড়ে গল্প হিসেবে ভাবছেন মুসলিম তরুণেরাও। হতবাক একজন কমেন্ট করেছেন " বইটা দ্রুত ইংরেজীতে অনুবাদ করে আমেরিকার বাজারে ছেড়ে দিয়ে দেখেন এক সপ্তাহেই মিলিয়ন মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে যাবে ।

আরো কত কি দেখুম .... Like · Report · Yesterday at 11:34am জবাবে Abul Kalam Azad লিখেছেন হ্যাঁ, ইংরেজি অনুবাদ হবে। আমেরিকার বাজারেও যাবে। অপেক্ষা করুন। তবে বইটি আপনিও একবার পড়ে দেখতে পারেন।" Like · Report · Yesterday at 11:47 প্রশ্ন যেটা জাগলো, তা হচ্ছে, আমরা ধরেই নিয়েছি,মক্কা- মদীনা আমেরিকায় থাকতেই পারে না। আমেরিকায় কীভাবে তা সম্ভব? এই যে ভাবনা,এটাই হচ্ছে নিজেদের অতীতকে ছোট করে দেখা এবং গৌরবকে বিশ্বাস করতে না পারা। অথচ আমেরিকায় মুসলিমদের সমৃদ্ধ সভ্যতা গড়ে উঠেছিলো। কলম্বাসের হাতে তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়? এবং সবার আগে মুসলিমদের বৃহৎ একটি অংশ একে অবাস্তব ধরে নিয়েছেন।কারণ তারা বিশ্বাস করতে শিখেছেন ক্রুসেডিয় মনের সাজানো ইতিহাসকে।তারা ধরে নিয়েছেন এর বাইরে আর কোনো সত্য থাকা অস্বাভাবিক। ফলে তারা কানকে প্রস্তুত রাখেন না নতুন সত্য শুনার জন্য।

আমেরিকা মুসলিমদের আবিষ্কার বইটি নতুন বিতর্কে ফেলবে বুঝতেই পারছি।কারণ কলম্বাসপূর্ব আমেরিকায় তাইনো জাতিকে নিয়ে ইউরোপীয় ইতিহাস যা বলেছে,তাকে আমরা শেষ কথা হিসেবে মেনে নেইনি।যে বাহামায় কলম্বাস প্রথমে পা রাখেন,তার অধিবাসিদের ধর্মপরিচয় অামরা তালাশ করেছি ।

আমরা খুজেছি,মানডিনকানদের ইতিবৃত্ত। কলম্বাসকে আমরা দেখেছি অনুসন্ধানী নজরে।আমাদের চোখে তিনি যেমম সফল নেভিগেটর,তেমনি ভয়ানক গণহত্যার নায়ক। স্পেনিশ - পর্তুগিজ ফরাসী ও ইতালিয় নৌ- বিপ্লব সম্পর্কে ইউরোপীয় বিচারের বাইরে আমরা ভিন্ন বিচার খুঁজেছি।প্রেরণা ও পরিণতির দিক বিচারে কলম্বাস,ভাস্কো, আলবুকার্কদের ক্রুসেডিয় চেহারা ধরা পড়েছে আমাদের আয়নায়। ইতিহাসের এমন বিচার কানে তুলতে আগ্রহী শিক্ষতজন আমাদের দুনিয়ায় খুবই কম। অথচ বিজ্ঞান কামনা করে বিচার ও পূণর্বিচার।আধুনিক মন যে কোন ধারণাকে নতুনভাবে যাচাই করার জন্য প্রস্তুত থাকারই কথা।

বিশেষ কোনো ভাষ্যকে জগদ্দল পাথরের মতো মনের দরোজায় বসিয়ে রেখে বাইরের আলো বাতাস থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখা আধুনিক মনের কাজ হতে পারে না। অতএব প্রগতিশীল মন শ্রবনের জন্য প্রস্তুত থাকবে ইতিহাস বিচারের নতুন যে কোন সংগত আওয়াজকে। যদি তাই হয়,তাহলে আমরা যখন দেখাই,কলম্বাসের বহু আগে স্পেন থেকে,আফ্রিকা থেকে,চীন থেকে মুসলিম অভিযাত্রিরা কীভাবে একের পর এক পা রাখছেন আমেরিকায়,তখন সেই দেখানোকে প্রগতির দাবি হিসেবেই ভাবার মন কি প্রগতিশীলদের আছে? নিশ্চয়, প্রতিষ্ঠিত ভাষ্য বরাবরই আসন হারাতে চায় না।

কিন্তু তার অসংগতি যে জায়গায় সুস্পষ্ট, সেখানে ইতিহাসের যে কোন সৎ গবেষকের প্রথম দায় হলো অসংগতির পর্দা উন্মোচন করা এবং সঠিকতার অনুসন্ধানে অভিযান পরিচালনা। মুসলিম সভ্যতার হারিয়ে যাওয়া সাম্রাজ্য শুধু স্পেন- ভারত নয়,নিজেদের গরিয়ান ইতিহাসও। কোনো জাতি আপন ইতিহাসের মহিমাকে হারিয়ে বলীয়ান হতে পেরেছে অাত্মশক্তিতে? সেই জাতির শিক্ষিত তরুণ যখন জাতীয় অতীতের উজ্জ্বল অধ্যায় সমূহকে স্বীকার করতে পারেন না, তখন একেবারে হতাশ হই না।কারণ আরেকটি জায়গা থেকে তার প্রতি আন্তরিক আহবান করা হচ্ছে ' একবার পড়ে দেখতে পারেন।'

লেখক : আলেম লেখক ও কবি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ