শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটিকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখার নির্দেশ কেন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : গত ১১ এপ্রিল কওমি মাদরাসার শিক্ষা সনদের মান ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দ্রুত সময়ে ( ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার) কওমি মাদরাসার শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি প্রদান করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনের ৩.৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এ কমিটি দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে থাকবে’।

এখন প্রশ্ন হলো, দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে থাকার ব্যাখ্যা কী?  এর অর্থ কী দলীয় লোকমুক্ত হওয়া? যদি তা-ই হয় তাহলে যারা দলীয় রাজনীতি এবং বেফাক বা অন্য বোর্ডে সক্রীয় তারা কী করবেন? আর যদি দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে থাকার অর্থ হয়, দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা তবে বাস্তবতার আলোকে তা সম্ভব হবে?

আওয়ার ইসলাম টুয়েন্টিফোর ডটকম এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে। উত্তর দিয়েছেন, বেফাকুল মাদসারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসিল কওমিয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা আবদুল হালীম বোখারী ও বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গহরডাঙ্গা বোর্ডের সভাপতি মুফতি রুহুল আমীন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, আতাউর রহমান খসরু

বেফাকের সহ-সভাপতি আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ  ‘এ কমিটি দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে থাকবে।’ -এর ব্যাখ্যায় বলেন,  ‘স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটিকে রাজনীতিতে স্বক্রীয় এমন ব্যক্তি থাকতে পারবেন না। হয়তো তাদের রাজনীতি ছাড়তে হবে অথবা বেফাক ছাড়তে হবে।’

তাহলে যারা রাজনীতি করছেন, তারা কী ৩২ সদস্যের কমিটিতে থাকবেন না? উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখন তো শুনেছি তাদের নাম গেছে। তবে তারা যদি কমিটিতে থাকতে চান তবে তারা রাজনীতিতে থাকতে পারবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার অনেক দীনের দাবী, বেফাককে দলীয় রাজনীতি মুক্ত করা। এখন যেহেতু সম্মিলিত বোর্ড হয়েছে তাই এখন বেফাক দলীয় লোকজন মুক্ত হোক এটাই আমার চিন্তা-ভাবনা। আশা করছি, স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটির আগামীর মিটিংয়ে বিষয়টি আলোচনা হবে।’

একই ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘চট্টগ্রাম ভিত্তিক বোর্ড আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসিল কওমিয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা আবদুল হালীম বোখারী। তিনি বলেন, ‘সরকার কী উদ্দেশ্য নিয়েছে সেটা সরকারই ভালো বুঝবে। আমার মনে হয়, সরকার বোঝাতে চেয়েছে, যারা দলীয় রাজনীতি করছে তারা এ কমিটিতে থাকবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা রাজনীতি করছেন, তারা তাদের ব্যাপারে যদি সরকার আপত্তি না করে তাহলে থাকবেন। আর যদি আপত্তি করেন তাহলে আমাদের বলার কী থাকবে। হাটহাজারির হজরত চেয়ারম্যান হিসেবেও এ ব্যাপারে বিবেচনা করতে পারেন।’

প্রবীণ এই আলেমের ব্যক্তিগত মত হলো, ‘যারা শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বে থাকবেন তারা দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে থাকবেন। কিন্তু অনেকেই রাজনীতি করেন এবং করছেন।’

এ ক্ষেত্রে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গহরডাঙ্গা বোর্ডের সভাপতি মুফতি রুহুল আমীন। তার মতে বাক্যটির ব্যাখ্যা হলো,  ‘স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটি সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত থাকবে। বাইরে রাজনীতি করলেও তার প্রভাব যেনো এ কমিটিতে না পড়ে।’

তিনি জানান, ‘আমি প্রস্তাব রেখেছিলাম, রাজনীতির সাথে জড়িত কোনো ব্যক্তি -সে যে বোর্ডের হোক- সে যেনো গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে না থাকে। এটা দেওবন্দের অষ্টনীতির একটি। আমি সেটাকে কোট করেই বলেছিলাম। আমাদের অনেকেই যারা রাজনীতি করেন, তারা বিষয়টি মেনে নিতে চান নি। তখন বললাম, অন্তত এতোটুকু নিশ্চিত করতে হবে যে, রাজনীতির প্রভাব যেনো তারা বিস্তার না করেন।’

রাজনৈতিক ব্যক্তি থাকলে প্রভাবমুক্ত রাখা কি সম্ভব হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আশা করছি সম্ভব হবে। তাছাড়া এটা যেহেতু রাষ্ট্রীয় নির্দেশ; একটি প্রজ্ঞাপন তাই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে আমরা বাধ্যও।’

-এআরকে

কওমি শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা হবে: ওবায়দুল কাদের


সম্পর্কিত খবর