কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীরবিক্রম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যখন কোনো মতামত দেন বা অনুভূতি প্রকাশ করেন তার ওপরে পাল্টা ব্যাখ্যা দেওয়া সেই মতামতকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজত নেতাদের সাক্ষাৎ করাটাকে বলা হচ্ছে আপস করা হয়েছে। এটা এক ধরনের গুরুতর অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
মন্ত্রীদের এমন বক্তব্য কোনোভাবেই আশাব্যঞ্জক নয়। মন্ত্রী হিসেবে এটা শোভা পায় না। তারা শপথে আবদ্ধ রয়েছেন। মন্ত্রীদের এসব বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এতে জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতা আরও আশকারা পেতে পারে।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন সাবেক এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, এক মন্ত্রী বলেছেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। তাদের ব্যাখ্যাটা কিন্তু স্পষ্ট নয়। সরকার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে রয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র পুরোপুরিভাবে অ্যাকশনে রয়েছে। সেখানে যদি সব আলেম-ওলামাকে ইঙ্গিত করে আমরা সাম্প্রদায়িতকার কথা বলি, তাহলে এটা ইসলামের সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে বলা হয়।
ইসলামী সেন্টিমেন্ট আর মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ ভিন্ন জিনিস। মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতি এক রয়েছে। সেখানে মন্ত্রী বা সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা যদি বলেন, ভাস্কর্য যদি হাই কোর্টের সামনে থেকে সরিয়ে ফেলা হয়, তাহলে তারা সারা দেশের সব ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার দাবি করবে। এ ধরনের বক্তব্য কাম্য নয়।
জাফর ইমাম বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু এখন অসাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞা ভিন্নভাবে করা হচ্ছে। আমাদের জাতীয় ঐক্যটাকে নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। এই বিভেদ জাতিকে কষ্ট দেবে। আমরা যদি ইসলামের সেন্টিমেন্টে আঘাত করি, তা ঠিক হবে না। এতে জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ আরও প্রশ্রয় পাবে। যারা রোজা রাখেন না, নামাজ পড়েন না তারাও নামাজ রোজার প্রতি সম্মান জানায়। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যেসব মন্ত্রী বা নেতারা বিভেদমূলক কথা বলেন, তারা সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞাকে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এ জন্য বলি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। বাংলাদেশে আমরা মিলেমিশে ধর্ম পালন করি।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
প্রসঙ্গ কওমি স্বীকৃতি ও মূর্তি; আপস নাকি উপলব্ধি!