আওয়ার ইসলাম: কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদ সরকারি স্বীকৃতি ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
বিশেষ করে স্বীকৃতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে সুপ্রিমকোর্টের সামনে বসানো গ্রীক দেবীর মূর্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার যে অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন তা নিয়ে বুদ্ধিঝীবীদের মধ্যে বেশ হইচই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন সরকারের অবস্থানের সমালোচনাই করেছেন। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ইসলামপন্থিদের একের পর এক ছাড় দিচ্ছে। হেফাজতের সাথে আপস করছে। তিনি মনে করেন এটা রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে আঘাত করছে ।
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস এর অধ্যাপক রাজনীতি বিশ্লেষক ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান অবশ্য মনে করেন, জামায়াতসহ ইসলামপন্থি কিছু দল নিয়ে বিএনপির জোট যে রাজনীতি করছে তা বিবেচনায় নিয়ে আওয়ামী লীগ এ অবস্থান নিচ্ছে। এটাকে তিনি বিপজ্জনক বা আপস হিসেবে দেখতে রাজি নন
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ‘বিএনপি জোটের রাজনীতি মোকাবিলা করতে হলে আওয়ামী লীগকে ইসলামপন্থিদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত যারা বাংলাদেশকে গ্রহণ করে, তাদের মিত্র করার বিষয়টি স্বাভাবিক। এটাকে ছাড় না বলে আমি উপলব্ধি হিসেবে বলবো। কারণ, মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির একটি ছিল সামাজিক সুবিচার। সেদিক থেকে দেখলে, এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অকারণে আহত করে রাজনৈতিক কোনো লাভ নেই এবং বুদ্ধির দিক থেকেও তা ঠিক নয়।’
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে সরকারের কারো কারো মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতাদের দলের এবং সরকারের অবস্থানের প্রতি সমর্থন রয়েছে। ইনু, মেননদের দিকে ঈঙ্গিত করে তারা মনে করেন, যারা সমালোচনা করছেন ভোটের রাজনীতিতে তাদের কোনো প্রভাব নেই। ভোট তাদের নেই বললেই চলে। অন্যদিকে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হবে। বিএনপি-জামায়াত জোট আওয়ামী লীগের ব্যাপারে যেসব সমালোচনা করে তা যে সঠিক নয়, তাও জনগণ বুঝতে পারবেন।
আপসের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কওমি মাদরাসার উচ্চশিক্ষার স্বীকৃতি দেয়া মানে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে কোনো আপস করা নয়। এটা রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা। জনগণের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
[কওমি স্বীকৃতিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি: অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ]
এসএস/