ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে খালেদা জিয়ার সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ওই চুক্তিকে ‘দেশ বিক্রি’ বলছে, তারা ‘অর্বাচীন’। বিডিনিউজ
চার দিনের ভারত সফরের শেষদিন সোমবার ভারত-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
নয়া দিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসে এ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বলেন, “যারা বলে দেশ বিক্রি করে দিয়েছি, তারা অর্বাচীন।”
গত শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এর মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক রয়েছে, যার বিরোধিতা করে আসছে বিএনপি।
ওই সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে ইংগিত করে রোববার রাতে আইনজীবীদের এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, আরও পাঁচ বছর ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য’ বর্তমান সরকার ‘দেশ বিক্রির চুক্তি’ করেছে।
“দেশে বর্তমানে সরকার যাদেরকে বলা হয়, তারা আসলে জনগণের সরকার নয়, তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। ভবিষ্যতেও তারা একই পরিকল্পনা করছে কীভাবে আবার ক্ষমতায় আসবে। আজকে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে। সেজন্য পাঁচ বছরের জন্য এটা একটা চুক্তি করেছে। কী? পাঁচ বছর তাকে থাকতে দিতে হবে। এই চুক্তি তো তিনি সেজন্য করলেন।”
এর প্রতিক্রিয়ায় ব্যবসায়ীদের অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারাই দেখে গেলেন, দেশ বেঁচে দিলাম, না অর্জন করলাম।”
বাংলাদেশে ব্যবসার বিস্তৃত সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা ভারতের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র এবং উন্নয়নের সঠিক পথেই অগ্রসর হচ্ছে। যৌথ সমৃদ্ধির দর্শন নিয়ে চলা বাংলাদেশ ও ভারতেরও সম্পর্কও এখন চমৎকার।
“আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই, বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে আসুন এবং সুযোগগুলো কাজে লাগান।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার এমন একটি বাস্তবঘনিষ্ঠ উদ্ভাবনমুখী অর্থনীতি গড়ে তুলতে চায়, যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ এবং কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে।
“আমি নিশ্চিত, একসঙ্গে কাজ করলে এ অঞ্চলের মানুষ ও তাদের জীবন আমরা বদলে দিতে পারব।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন গোদরেজ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি আদি গোদরেজ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের জ্বালানি ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রতিমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
অন্যদের মধ্যে ভারতের অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বারস অব কমার্স অ্যন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (অ্যাসোচ্যাম) প্রেসিডেন্ট সন্দীপ জাযোদিয়া, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এফআইসিসিআই এর সাবেক প্রেসিডেন্ট হর্ষ মারিওয়ালা।
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা অনেক ধনী ব্যবসায়ী। আপনারা আসুন। বিদেশিদের জন্য ১০০ ইপিজেড করছি। আপনাদের বিনিয়োগ সফল করতে সব রকম ব্যবস্থা নেব। আপনারা আসুন।”
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী মন্ত্রিসভার সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রাণলয় ও বিভাগের সচিব এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।