শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


শিক্ষকদের ফেসবুক আইডি পর্যবেক্ষণ করবে শিক্ষাবোর্ড

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

 আওয়ার ইসলাম: পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডি খতিয়ে দেখবে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড

পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ভাইবার ও ইমোসহ সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক মোবাইল ফোনে ব্যবহার হয়ে থাকলে তাও যাচাই করা হবে।  এ লক্ষ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে মোবাইল নম্বর পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অদ্বৈত কুমার রায় বলেন, ‘পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারির মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করা হচ্ছে।  কেউ একাধিক নম্বর ব্যবহার করলে তাও সংগ্রহ করা হবে। প্রশ্নপত্রফাঁসে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কেউ তার ফোন নম্বর ব্যবহার করেছে কিনা তা যাচাই করা হবে।  ফোন থেকে ফেসবুকসহ হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ভাইবার ও ইমোসহ অন্যান্য  সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কও ব্যবহার করা হলে তাও খতিয়ে দেখা হবে।’

শিক্ষা বোর্ডসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি এইচএসসি পরীক্ষার আগে এবং পরীক্ষা শুরুর পর থেকে এ কয়দিন কোনও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মকর্তা যদি ফোন থেকে কল করেন বা কোনও অ্যাপস ব্যবহার করে প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে জড়িয়ে পড়েন বা যোগাযোগ করে থাকেন, তাহলে তা খুঁজে বের করতেই ফোন নম্বর সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। শিক্ষা বোর্ডের সংগ্রহ করা ফোন নম্বর সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দেওয়া হবে তা খতিয়ে দেখার জন্য। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসেহ সংশ্লিষ্টদের ফোন থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করবে শিক্ষা বোর্ড।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারির মোবাইল নম্বর (controller@dhakaeducation.gov.bd) ইমেল ঠিকানায় জমা দিতে বলে। চলতি বছর ২ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরুর পর ফেসবুক ও হোয়টসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস না হয় সে লক্ষ্যে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার আগেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারও করে। গ্রেফতার হওয়া প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের তথ্যও পায় পুলিশ।

চলতি এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর চারদিন আগে গত ২৮ মার্চ সাভারের আশুলিয়ার গাজিরচট এ এম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোজাফফর হোসেন, এ এম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক মো. আতিকুল ইসলাম, অফিস সহকারী মো. আব্দুল মজিদ এবং ছাত্র মো. আরিফ হোসেন আকাশ ওরফে আদু ভাই, মো. সাইদুর রহমান, মো. রাকিব হোসেন ও তানভীর হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া টঙ্গীর কোনিয়া কোচিং সেন্টারের শিক্ষক মো.হামিদুর রহমান ওরফে তুহিন, সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিতের শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

গত ২৯ মার্চ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা সংক্রান্ত্র আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার শেখ নামমুল আলম জানান, দুইজন অধ্যক্ষ, তিনজন শিক্ষকসহ মোট ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফেসবুকে প্রশ্নফাঁসের একটি গ্রুপে ২৫ হাজার সদস্য রয়েছে। দুইটি অ্যাডমিনে সক্রিয়দের মধ্যে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও ছাত্রও রয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া প্রশ্নফাসে জড়িতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে পুলিশ জানতে পরেছে ফেসবুক ছাড়াও বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার শুরু করেছে প্রশ্ন ফাঁসকারীরা। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডও প্রশ্নফাস ঠেকাতে তৎপর হয়।

এসএস


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ