শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আব্দুল্লাহ আল মামুন

mamunইসলামী যুব আন্দোলনের প্রথম জাতীয় যুব কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৩১ মার্চ ২০১৭ তারিখে। কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কেএম আতিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নেছার উদ্দিন। তাদের উভয়কে মোবারকবাদ জানাই। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি ইসলামি আন্দোলনের মুহতারাম আমিন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমসহ বিচক্ষণ নেতৃবৃন্দের প্রতি। পাশাপাশি মহান রাব্বুল আল আমিনের দরবারে অশেষ শুকরিয়া জ্ঞাপন করি।

গোটা দেশের লাখো যুবকের প্রাণের সংগঠন ইসলামী যুব আন্দোলনের জাতীয় যুব কনভেনশন এমন একটা সময় অনুষ্ঠিত হলো যখন প্রিয় বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে এক চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। কোথাও শান্তি নেই, সস্তি নেই। চালকের আসনে বসে আছে সাক্ষাৎ উন্মাদরা। ক্ষমতার দাম্ভিকতায় তারা দিশেহারা। জাতীয়তাবাদের নামে তারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে অশান্তির বিষবাষ্প। দেশে দেশে রোপন করছে বিষবৃক্ষ। দালাল শ্রেণির ওইসব বিষবৃক্ষ তাদের প্রতিনিধিত্ব করছে। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশেও এমন বিষবৃক্ষের অভাব নেই। তারা ক্ষমতার মোহে, অর্থের লোভে বিশ্ব অশান্তির মোড়লদের গোলামি করছে। এদের রুখে দেয়া এখন সময়ের সব চেয়ে বড় দাবি।

বিশ্ব মোড়লরা অনেক দিন থেকেই ইসলাম ফোবিয়ায় ভুগছে। মুসলিম প্রধান কোনো দেশই আজ নিরাপদ নয়। একের পর এক তারা মুসলিম প্রধান দেশগুলোকে ভাগাড়ে পরিণত করছে। টন-কে টন বোমা ফেলে সোনার দেশগুলোকে শ্বশানে পরিণত করছে। একদিকে তারা অন্ত্র বিক্রি করছে, অন্যদিকে মুসলমানের কাঁধে বন্দুক রেখে মুসলমান হত্যা করছে।

সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। সত্যিকারের দেশপ্রেম নিয়ে রাসুল সা. এর আদর্শে ঘুরে দাঁড়াতে হবে যুবকদের। সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তথ্য প্রযুক্তিতে অগ্রসর হতে হবে। মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাগুতের মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না।

ঐক্যবদ্ধ মুসলিম বিশ্বের সূচনা বাংলাদেশ থেকেই হতে পারে। এদেশের মাটিতে ঘুমিয়ে আছেন শতশত আল্লাহর অলি, শহীদ, গাজী। এদেশে বিশ্বের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বৃহত্তম ইসলামি সম্মেলন হয়। সুতরাং মাটিকে আল্লাহর বিশেষ রহমতের মাটি বললে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না। বিশ্বাস করি কেউ দ্বিমতও করবেন না।

মুসলিম প্রধান কোনো দেশই আজ নিরাপদ নয়। একের পর এক তারা মুসলিম প্রধান দেশগুলোকে ভাগাড়ে পরিণত করছে। টন-কে টন বোমা ফেলে সোনার দেশগুলোকে শ্বশানে পরিণত করছে

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ইসলামি সমাবেশ হয় বরিশালের চরমোনাইর ময়দানে। গত বছর যাবৎ সেখানে সৌদি আরবসহ গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম প্রধান দেশসমুহের রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিগন আসছেন। তারা এই সমাবেশের সাথে ঐক্যমত প্রকাশ করছেন। মুসলিম বিশ্বের কাছে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ওলামায়ে কেরামগণ আসেন এবং তারাও দ্বিধাহীন কণ্ঠে চরমোনাইর তরিকা এবং সমাবেশের প্রতি নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করেন।

চরমোনাই তরিকা তথাকথিত খানকা নির্ভর কোনো পীরের দরবার নয়। এখানে দ্বীনের পরিপূর্ণ কাজ হয়। রাতের অন্ধকারে মানুষকে যেমন হেদায়েতের বাণী শোনানো হয়, তেমনি দিনের আলোয় সকল প্রকারের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে তৌহীদি জনতাকে সাথে নিয়ে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করা হয়। আল্লাহর দ্বীনকে রাষ্ট্রীয় ভাবে কায়েমের জন্য সঠিক পথে জিহাদের আহবান করা হয়।

ইসলামী যুব আন্দোলনের কর্মীচিন্তা

‘ইসলাম সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত’ : মদিনার ইমাম

মিডিয়া সন্ত্রাস এবং কিছু অতি আবেগি মানুষের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজজিহাদশব্দটা সম্পর্কে অনেক মানুষের মনের মধ্যে ভুল ধারনার জন্ম হয়েছে। আমি মনে করি এটা সম্ভব হয়েছে মানুষের অজ্ঞতার কারণে। জিহাদ মানে সন্ত্রাস নয়, বরং সন্ত্রাস রুখে দেয়া। জিহাদ মানে আত্মহত্যা বা নিরীহ মানুষ হত্যা করা নয়। জিহাদ মানে অন্যায় প্রতিরোধ করা। নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করা। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করা। আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের জন্য রাসুল সা. এর দেখানো পথে চেষ্টা করা। সর্বপরি আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করা।

ইসলামী যুব আন্দোলন একঝাক রাসুল সা. প্রেমিক তরুণ যুবকের সংগঠন। প্রত্যাশা করি এই সংগঠনই প্রিয় বাংলাদেশে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করবে। পৃথিবীর দেশে দেশে যুবকরা জেগে উঠবে, সত্যিকারের জিহাদি বলে বলিয়ান হয়ে।

লেখকঃ কেন্দ্রীয় সদস্য, ইসলামী যুব আন্দোলন।

Rokomari


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ