শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

মুখস্ত ও অনুশীলনে জোর দিতে হবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

taisir jamatপরীক্ষার নাম শুনলে কম বেশি সবারই হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় কয়েক গুণ । তাই বলে পরীক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে তো ‍আর হবে না। নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ কিন্তু এখানেই।পরীক্ষায় নিজের সেরাটা দিলেই অর্জন করা যায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। এজন্য পরীক্ষার প্রস্তুতিও হওয়া চাই সেরা। আর শুধু প্রস্তুতি দিয়েই হয় না। দরকার হয় কৌশলেরও। কিছু কৌশল মনে রাখল আপনার প্রস্তুতিটি আরও সহজ ও পরিপূর্ণ হয়ে ‍উঠবে।

কওমি সিলেবাসে তাইসির প্রথম জামাত। জীবনের প্রথমেই যদি ভালো করা যায়, তবে মনোবল বেড়ে যাবে বহুগুণ। আর যদি শুরুতেই হোচক খেতে হয়, তবে পরবর্তী জীবনে পড়ালেখার আগ্রহ নষ্ট হয়। তাছাড়া তাইসির জামাতে ফলাফল ভালো করতে হলে এবং বেফাকের সিরিয়ালে যেতে হলে অনেক বেশি প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়।

পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকাও তাইসির জামাতে ভালো ফলাফলের পথে একটি বাধা। তাই এ জামাতের প্রস্তুতিতে থাকতে হবে পূর্ণ মনোযোগ ও অনুশীলন।

উর্দু ও ফার্সি কিতাবগুলো : তালিমুল ইসলাম, উর্দু তেসরি, তাইসিরুল মুবতাদি ও ফার্সি কি পেহলি কিতাব দুটি কীভাবে পড়লে কিতাবের বিষয়বস্তু আয়ত্ব করা যায় ও কীভাবে ভাল ফলাফল করা যায় এ ব্যাপারে আলোচনা করতে গেলে মৌলিকভাবে যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখতে হবে তার উপর সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো।

মুখস্ত করার পাশাপাশি বুঝে পড়া  : সাধারণত ছোট ও প্রাথমিক ছাত্রদের পড়ালেখা মুখস্তনির্ভর হয়ে থাকে। এরপর যতই উপরের ক্লাসে উঠতে থাকে মুখস্তনির্ভরতা কমেতে থাকে। এর স্থলে বেশি প্রয়োজন হয় বুঝ ও বুদ্ধির। তাই উপরের কিতাবাদিতে মুখস্ত করার তুলনায় কিতাব বুঝার প্রতি বেশি গুরুত্বারূপ করতে হয়। সে হিসাবে আলোচ্য কিতাব দুটিও মুখস্তনির্ভর হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু বাস্তবতা এমন হয়েছে যে, এ কিতাব দুটি শুধু মুখস্তনির্ভর নয়, এতে রয়েছে বুঝার অনেক বড় দখল। তাই ছাত্রদের শুধু বিষয়গুলো মুখস্ত করলেই চলবে না, বরং কিতাবের বিষয়গুলো বুঝার উপরও যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে অনুশীলন করা  : আরবী ভাষার বুঝার ক্ষেত্রে আমরা মৌলিকভাবে দুটি শাস্ত্র পড়ে থাকি। একটি হলো নাহু, অপরটি হলো সরফ। এ শাস্ত্র দুটি আয়ত্ব করার জন্য সুদীর্ঘ ৩/৪ বছরে এ বিষয়ের ৭-৮টি কিতাব পড়ানো হয়। পক্ষান্তরে ফার্সি সরফ শাস্ত্র ও ফার্সি নাহু শাস্ত্র একই সাথে একটি মাত্র কিতাব এক বছরে পড়ানো হয়! তাইসির কিতাবের প্রথম অধ্যায় ফার্সি সরফ তথা শব্দ গঠনপ্রণালী সর্ম্পকে এবং দ্বিতীয় অধ্যায় ফার্সি নাহু তথা বাক্য গঠন প্রণালী সর্ম্পকে। যদিও ফার্সি নাহু-সরফ পড়ার গুরুত্ব আমাদের জীবনে কতোটুকু এবং এ শাস্ত্র পড়ার আদৌ কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কি না সেটি ভিন্ন বিষয়, কিন্তু আরবির সাথে-এর বিষয়বস্তু তো এক ও অভিন্ন। তাই আরবি নাহু-সরফের ক্ষেত্রে বুঝে পড়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ  অনুশীনল করা যেমন গুরু ত্বপূর্ণ ঠিক একই কথা ফার্সি নাহু ও সরফের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই কাওয়াইদ পড়ার পাশাপাশি তার যথেষ্ট পরিমাণ তামরীন করা চাই এবং পরস্পরে পর্যাপ্ত তাকরার ও মুযাকারা করা চাই।

শুধু মুখস্ত নয়, চাই লিখিত অনুশীলন : এ কিতাব দুটি মুখস্ত করা এবং বুঝার গুরুত্ব যতোটুকু ঠিক ততোটুকুই লিখার গুরুত্ব। ছাত্ররা প্রাথমিক হওয়ায় তারা লিখার বিষয়ে খুবই দুর্বল হয়ে থাকে। তাই যা কিছুই পড়া হলো তা বার বার লিখে এবং সংশ্লিষ্ট উস্তাদকে দেখিয়ে লেখার বানান ও উপস্থাপন পদ্ধতি ঠিক করে নেওয়া চাই।

বাংলা :

ভাষা অর্থাৎ বাংলা ভাষার ওপর ভাল দখল থাকা। এজন্য পাঠ্যবই পড়ার সময় শব্দের প্রয়োগ ও বানান শুদ্ধ করার প্রতি বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখবে। প্রয়োজনে কঠিন বানানগুলো লিখেলিখে মুখস্ত করা।

গদ্য, প্রবন্ধ এবং কবিতার পুরো বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ব করা। এজন্য মনোযোগের সাথে একাধিকবার পড়তে হবে এবং লেখক বা কবি কি বোঝাতে চেয়েছেন তাঁর সারসংক্ষেপ বের করে খাতায় লিখে অনুশীলন করতে হবে।

প্রতিটি কবিতা কবির নামসহ কমপক্ষে ১০-১২ লাইন মুখস্ত করা।

মুখস্ত করার সময় প্রতিটি লাইনের দাড়ি, কম, আশ্চর্যবোধক চিহ্ন, জিজ্ঞাসা চিহ্নের মধ্য থেকে যেখানে যেটা দেয়া হয়েছে তা খেয়াল করে মুখস্ত করা। পাশাপাশি কবি পরিচিত পড়া।

আরও যা করতে হবে : 

১. শব্দার্থসমূহ মুখস্ত করা।

২. বিভিন্ন শব্দ দিয়ে বাক্যরচনা ও বিপরীত শব্দ লেখার অনুশীলন করা।

৩. বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন সামনে রেখে অনুশীলন করা।

৪. পাঠ্য বইয়ের রচনাগুলো মুখস্ত করা। সবগুলো মুখস্ত করা সম্ভব না হলে যেগুলো মুখস্ত হবে না সেগুলো বার বার পড়ে সারসংক্ষেপ বুঝে রাখা।

৫. মুখস্ত করার পর প্রতিটি জিনিস অবশ্যই লেখা। তাহলেই বাংলায় ভাল ফলাফল করা যাবে। ইনশাআল্লাহ।

৬. দরখাস্ত ও চিঠি মুখস্ত করা এবং এক পৃষ্ঠায় লেখা শেষ করতে হবে।

ইতিহাস ও ভূগোল

ইতিাস ওপর ভাল দখল থাকা দরকার। কেননা ইতিহাস হলো এক টি প্রয়োজনীয় বিষয়। এজন্য পাঠ্যবই পড়ার সময় সন তারিখ, নাম স্থান ইত্যাদির প্রতি বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখবে। প্রয়োজনে কঠিন স্থানেরনামগুলো লিখেলিখে মুখস্ত করা।

এজন্য মনোযোগের সাথে একাধিকবার পড়তে হবে এবং ইতিহাসবিদ বোঝাতে চেয়েছেন তাঁর সারসংক্ষেপ বের করে খাতায় লিখে অনুশীলন করতে হবে।

১. প্রথমে ভালোভাবে পাঠ রিডিং পড়বে, নিজে নিজে বুঝার চেষ্টা করা।

২. প্রশ্নের আলোকে পড়া সে অনুযায়ী খাতায় লেখা।

৩. নৈবিত্তিক প্রশ্নগুলো এমন ভাবে পড়া যাতে এসব উত্তর ঠোটে থাকে।

৪. সত্য মিথ্যা পড়ার সাথে সাথে অপর সহপাঠীর সাথে তাকরার মুযাকার করা।

৫. ভূগোলের বিভিন্ন পরিভাষা গুলো ভালভাবে মনে রাখার চেষ্টা থাকা ও সংজ্ঞা মুখস্ত করা।

৬. প্রশ্নোত্তর আকারে শিখবে এবং পাশাপাশি খাতায় লিখে অনুশীলন করবে।

গণিত

অনেক পরীক্ষার্থী গণিত ভীতিতে ভোগে। যার নেতিবাচক প্রভাব পরীক্ষায় পড়ে। গণিতটাকে একটা সহজ খেলা ভাববে। নিয়ম জানলে এ ভয়ে উত্তীর্ণ হওয়া কোনো ব্যাপার নয়। থিওরির দিকে একটু বেশি জোর দিবে। অনেক সময় জানা প্রশ্ন একটু ঘুরিয়ে এলে পরীক্ষার্থী ভয় পেয়ে যায়। এজন্য এখন থেকেই গণিতের সংখ্যা পাল্টিয়ে তোমরা চর্চা করবে। তাহলে প্রশ্নে গণিতের সংখ্যা পাল্টালেও উত্তর দিতে পারবে খুব সহজে। এছাড়াও গণিত সংক্রান্ত কিছু পরামর্শ দেয়া হলো :

১. প্রথমত অংকের প্রশ্ন বা ডাক ভালভাবে পাঠ করা। একাধিকবার পাঠ করা।

২. একটি অংক একবারে না হলে তা আবার করার চেষ্টায় থাকা।

৩. প্রতিদিন নিয়মিত  অংকের অনুশীলন করা।

৪. ভাল ধারণা আসার জন্য একই অংক বারবার  করা।

৫. সূত্রনির্ভর অংকের ক্ষেত্রে প্রতিদিন কমপক্ষে একবার করে সূত্রগুলো পড়া।

৬. অনুশীলনের পূর্বে বইতে যে উদাহরণ দেওয়া থাকে তা বোঝার চেষ্টা করা। মনে রাখবে গণিত কোনো মুখস্ত করার বিষয় নয়, বোঝার বিষয়।

৭. সবশেষে পরীক্ষকের দৃষ্টিতে ভাল ফলাফলের জন্য পরীক্ষার খাতায় অংকটি সঠিক-সুন্দর ও স্পষ্ট ভাবে উপস্থাপন করা।

৮. অংকের ফলাফল পাওয়ার পর তা উত্তর আকারে উপস্থাপন করা।

ইংরেজি

ভাষা অর্থাৎ ইংরেজী ভাষার ওপর ভাল দখল থাকা চাই। এজন্য পাঠ্যবই পড়ার সময় শব্দের প্রয়োগ ও বানান শুদ্ধ করার প্রতি বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখবে। প্রয়োজনে কঠিন বানানগুলো লিখেলিখে মুখস্ত করা।

গদ্য, প্রবন্ধ এবং কবিতার পুরো বিষয়বস্তু ভালোভাবে আয়ত্ব করা। এজন্য মনোযোগের সাথে একাধিকবার পড়তে হবে এবং লেখক বা কবি কি বোঝাতে চেয়েছেন তাঁর সারসংক্ষেপ বের করে খাতায় লিখে অনুশীলন করতে হবে।

১. পাঠ ভালভাবে রিডিং পড়া যে শব্দ কঠিন লাগে তা বানান করে পড়লে মনে থাকবে বেশী দিন।

২. শব্দার্থ পড়ার ক্ষেত্রে ভালোভাবে মনযোগ দিয়ে পড়বে। শব্দার্থ ভালোভাবে শিখলে পাঠ বুঝতে সহজ হবে।

৩. অনুশীলন করা বারবার পড়া প্রশ্ন উত্তর পরে খাতা লেখা প্রথমে দেখে দেখে তারপর মুখস্ত লেখলে সহজে ভুলবে না।

৪. কবির নামসহ কবিতার ৮/১০ লাইন মুখস্ত করবে, প্রখমে দুই লাইন করে।

৫. দরখাস্ত ও চিঠি মুখস্ত করা এবং এক পৃষ্ঠায় লেখা শেষ করতে হবে।

৬. প্যারাগ্রাফ ও রচনা ভালো ভাবে মুখস্ত করা যাতে ২/৩ টি শিখলে আরো কয়েকটি এমনিতেই পারা যায়।

ইনশাআল্লাহ এভাবে মেহনত করলে আশাতীত ফলাফল পাওয়া যাবে। মানুষের অসাধ্য কোন কিছু নেই চেষ্টা কর ফল আসবে।

-এআরকে

বেফাকের প্রস্তুতি এখন থেকেই


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ