বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

দেওবন্দে এসলাহি ও তাবলিগি জলসা অনুষ্ঠিত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাওলাদার জহিরুল ইসলাম
দেওবন্দ থেকে

deubondভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে গতকাল বাদ এশা এক এসলাহি ও তাবলিগি জলসা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া ওই জলসায় প্রথমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা রাখেন দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিম হজরত আল্লামা আবদুল খালেক সাম্ভলী৷ তিনি শিক্ষার্থীদের উন্নত চরিত্র গঠন, এখলাস-আমলে উন্নতি সাধন, মাদরাসার নিয়ম-কানুন মেনে চলা, দীনি দাওয়াত, দীনের জন্য মেহনত-মুজাহাদাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন৷

পরে দেওবন্দের সম্মানিত নাযেমে দারুল ইকামা, হজরত আল্লামা আফজাল কাইমুরী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ আলোচনা পেশ করেন৷ দীর্ঘ আলোচনায় তিনি দীনি ইলম অন্বেষণের গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও ফজিলত তুলে ধরেন৷

দীনে ইসলামের 'সার বুলন্দি'র জন্য প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবায়ে কেরামের ঐতিহাসিক ত্যাগ, কষ্ট স্বীকার, মেহনত মুজাহাদা, রাহে খোদায় অকাতরে জান-মালের নজরানা পেশ ইত্যাদি বিষয়গুলো অত্যন্ত আবেগময়ী ভাষায় তুলে ধরেন৷

তিনি বলেন, “মুসলমানদের ইতিহাস কেবল ত্যাগের ইতিহাস৷ যুগে যুগে মুসলিম জাতি ঐতিহাসিক ত্যাগ স্বীকার করে দীনের ঝান্ডা উঁচু রেখেছে৷ জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহ পাক মুসলমানদের জান মাল ক্রয় করে নিয়েছেন৷”

ভারত স্বাধীনতা আন্দোলনে আলেম-উলামা ও সাধারাণ মুসলমানদের ত্যাগের করুণ ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, “ভারতীয় মুসলমানদের অবর্ণনীয় ত্যাগের বিনিময়েই আল্লাহ পাক দারুল উলুম দেওবন্দের মতো একটি খালেস দীনি মারকায উপহার দিয়েছেন৷ দেওবন্দ শুধু ভারতীয় মুসলমানদের জন্যই নয় পুরো বিশ্বের জন্য একটি উপহার৷”

এরপর তিনি ছাত্রদেরকে নবীজী সা.এর বিদায় হজ্বের 'উপস্থিত ব্যক্তিরা যেনো অনুপস্থিতদের কাছে দীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়' বাণী স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবয়ে তাবেয়ীগণসহ যুগ যুগ ধরে সবাই পরবর্তীদের কাছে দীনি ইলম, দীনের বিধানসমূহ দাওয়াতের মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছেন৷ সেই ধারাবাহিকতায় দারুল উলুম দেওবন্দের সন্তানদেরও ইসলামের সঠিক পয়গাম নিয়ে দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়তে হবে৷ এটা দেওবন্দের সন্তানদের ওপর দীনি ও নৈতিক দায়িত্ব৷ যার যতো দিন সম্ভব দাওয়াতের কাজে সময় দেবে৷”

হজরত বলেন, “আজকাল দীন সম্পর্কে অজ্ঞ মানুষ দাওয়াতের কাজে জড়িয়ে পড়ায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে৷ এ জন্য পড়া-লেখা ঠিক রেখে ছুটির সময়গুলো দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে ছাত্রদেরকে অগ্রণী ভূমিকা রাখা প্রয়োজন৷”

“বানিয়ে তাবলিগ হজরত ইলিয়াস রহ. দেওবন্দেরই সন্তান ছিলেন৷ তিনি শায়খুল হিন্দ হজরত মাহমুদ হাসান দেওবন্দী রহ.এর বিশেষ শাগরেদও ছিলেন৷ তিনি মেওয়াতে প্রচলিত তাবলিগের কাজ শুরু করার পর মুসলমানদের ছোট ছোট জামাত তৈরী করে বিভিন্ন এলাকায় পাঠাতেন৷ এবং তাদেরকে বিশেষ দু'টি নির্দেশ দিতেন৷ ১৷ এলাকায় গিয়ে আলেমদের সাথে সাক্ষাত করে তাদের পরামর্শ নিয়ে দাওয়াতের কাজ করা৷

২৷ যে এলাকায় আলেম পাওয়া যাবে না সেখানে তোমাদেরকে দীনের যতোটুকু তালিম দেয়া হয়েছে ঠিক ততোটুকুই বয়ান করবে৷ এর বাইরে নিজেদের থেকে কোনো কথা বয়ান না করা৷
আজ আওয়ামদের(যারা আলেম নন) মাঝে হজরতের বানিয়ে তাবলিগের সেই নির্দেশ বজায় না থাকায় বিপত্তি দেখা দেয়৷”

হজরত আরো বলেন, “দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ দেওবন্দীদের-আমাদের সবার৷ এ জন্য উলামায়ে দেওবন্দ বহু আগ থেকেই দাওয়াতের কাজ আঞ্জাম দিয়ে আসছে৷ তরুণ আলেমদেরও এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখা প্রয়োজন৷

পরে বিশেষ তাশকিলের মাধ্যমে(কে কতো দিন সময় দিতে পারবে_উল্লেখসহ) ছাত্রদের নাম লিখিয়ে নেয়া হয় এবং তা 'শুবায়ে তাবলিগে'র যিম্মাদারের কাছে জমা করা হয়৷

এর আগে গতকাল সকালে এক জরুরী নোটিশ জারি করে দেওবন্দের সকল শিক্ষার্থীদেরকে বাদ এশা মসজিদে রশিদে জমায়েত হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়৷

উক্ত এসলাহি ও তাবলিগি মজলিসে দারুল উলুম দেওবন্দের সিনিয়র উস্তাদগণ উপস্থিত ছিলেন৷

এ দিকে ছাত্রদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে যে, অন্যান্য বছর দেওবন্দ থেকে বের হওয়া ছাত্রদের জামাতগুলো মারকায নিজামুদ্দিনে 'রুখ' নেয়ার জন্য গেলেও এ বছর আর সেটি বহাল থাকছে না৷ ছাত্রদের তাবলিগ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ দারুল উলুম দেওবন্দের 'শুবায়ে তাবলিগ' থেকে পরিচালিত হবে৷

বছরে শেষে (বার্ষিক পরীক্ষার কিছু দিন আগে) নিজামুদ্দিন থেকে একটি প্রতিনিধি দলের 'তাশকিল' করতে আসার বিষয়টিও থাকছে না৷ দেওবন্দই যাবতীয় কাজ দেখভাল করবে৷

তবে এ ব্যাপারে অফিসিয়াল কোনো বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি৷

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ