মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসননীতির প্রতিবাদে নিউইয়র্কে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
রোববার বিকালে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে ‘টুডে আই অ্যাম এ মুসলিম টু’ (আমিও মুসলিম) শিরোনামে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। ওই বিক্ষোভ র্যালিতে ডেমোক্রেটিক দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের কন্যা চেলসি ক্লিনটনও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে খুব শিগগিরই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশ জারি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা।
তিনি জানান, নতুন ওই আদেশে আদালতের রায়ে স্থগিত হওয়া আগের সেই সাত মুসলিম দেশও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অন্যদিকে ট্রাম্পের এক জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টাকে নিয়ে এক নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়েছে। বরখাস্ত করার একদিন পরই ফের ওই উপদেষ্টাকে স্বপদে বসানো হয়েছে। খবর সিএনএন, এপি ও ইউএসএ টুডের।
‘যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ কোনো ধর্মের বা বর্ণের নয়। যেখান থেকেই আগমন ঘটুক, যুক্তরাষ্ট্র সব বর্ণ-ধর্মের মানুষের দেশ। আমিও মুসলিম, তুমিও মুসলিম, আমরা সবাই মানুষ। দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করো, অভিবাসী নিষেধাজ্ঞা নয়। ঘৃণাকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রে ভালোবাসার জয়যাত্রা ঘটবে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসননীতির প্রতিবাদে নিউইয়কের্র প্রতিবাদ সমাবেশে এমন সব স্লোগান দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
সঙ্গীত প্রযোজক এবং ব্যবসায়ী রাসেল সায়মনের আহ্বানে আয়োজিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে শহরের মেয়রসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও বলেন, ‘আজকের দিনে আমি নিজেকে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিচ্ছি। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, নিউইয়র্ক শহর সব ধর্মের, বর্ণের ও বিশ্বাসের।’
আয়োজক রাসেল সায়মনস বলেন, মুসলিমরা আজ নিজেদের অরক্ষিত ও হুমকির সম্মুখীন বলে মনে করছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘৃণা ও বিদ্বেষের উদাহরণ তৈরি করছেন। আমেরিকা তা প্রত্যাখ্যান করে ভালোবাসার জয়গান গেয়ে যাবে। ঘৃণা নয়, ভালোবাসাই টিকে থাকবে।’ ওই সমাবেশে অভিনেত্রী সুসান সেরান্ডন ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং হিলারি ক্লিনটনের কন্যা চেলসি ক্লিনটনও মুসলিম সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে তিনি তার দুই বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারে অন্য বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন চেলসি। চেলসি এবং শার্লটের জন্য এ ধরনের বিক্ষোভে অংশ নেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। সাবেক এ ফার্স্ট ডটার বিক্ষোভ সমাবেশে
অংশগ্রহণের ছবি টুইটারেও প্রকাশ করেছেন। সাতটি মুসলিম দেশের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেই ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। যারা এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন চেলসি। সে সময় তিনি হিজাব পরা এক নারীর ছবিসহ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের ছবি টুইট করেছেন।
বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমোক্রাটিক লীগের সভাপতি ও ডেমোক্রাটিক ন্যাশনাল কমিটির সদস্য খোরশেদ খন্দকার বলেন, ইসলাম শান্তি, ন্যায় ও সহনশীলতার ধর্ম। ইসলাম জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদকে কখনও সমর্থন করে না। কোন ধর্মই সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থাকে সমর্থন করে না। এ বিষয়টি জোরালোভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে হবে। প্রতিবাদ আর সংহতির মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের চলমান অভিবাসন বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদসহ প্রচুর সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশ উপস্থিত ছিলেন।
আরআর