শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


মূর্তি ও অপসংস্কৃতি প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সময়ের দাবি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

khelafat15

আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান বলেছেন, আল্লাহ পৃথিবীতে শিরক তথা তার সাথে অংশিদারকে বিলুপ্ত করে একত্ববাদকে প্রতিষ্ঠার জন্য নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। প্রত্যেক নবী ও রাসূল মূর্তির বিরুদ্ধে দাওয়াত দিয়েছেন এবং মূর্তি ধ্বংসে তাদের কার্যকরী ভূমিকা ছিল।

বাংলাদেশে শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমান অথচ সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। এটা মুসলমানদের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিবিরোধী। খিস্টানদের দেশ আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের  প্রধান ফটকে সর্বশ্রেষ্ঠ আইন প্রনেতা হিসেবে হযরত মুহাম্মদ সা. এর নাম লেখা রয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সামনেও আইন প্রণেতা হিসেবে কোনো মূর্তি নেই। পৃথিবীর কোনো মুসলিম দেশের সুপ্রিম কোর্টের সামনেও মূর্তির কোনো অবস্থান নেই। তাহলে ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সামনে কেন গ্রীকনারীর মূর্তি থাকবে। তা বোধ গম্য নয়।

সুপ্রিমকোর্টের সামনে থেকে মূর্তি অপসারণ, শিক্ষা সিলেবাস ও অপসংস্কৃতি বন্ধের দাবীতে আজ বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে তিনি সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

দলের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায়  গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর মাওলানা ড. ঈসা শাহেদী, মাওলানা আব্দুল হামীদ পীর সাহে মধুপুর, জামিআ মুহাম্মদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, আর্ন্তজাতিক তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা এটি এম হেমায়েত উদ্দীন, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, নেজামে ইসলাম পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জিয়াউল হক মজুমদার, নয়াদিগন্তের সহ-সম্পাদক মাওলানা লিয়াকত আলী, জামিআ ওয়াহিদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা জোবায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কোরবান আলী, মাওলানা জি এম মেহেরুল্লাহ, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, সহপ্রচারও প্রকাশনা সম্পাদক মাওরানা হারুনুর রশীদ ভূইয়া, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ সাহাবুদ্দীন, হাফেজ শহীদুর রহমান,মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্দ আব্দুর রহীম সাঈদ, সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ রহমত আলী প্রমূখ।

হেফাজতের ঢাকা মহানগরের আমীর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নুর হুসেন কাসেমী বলেন, এদেশ থেকে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান আকীদা তাহযীব তামাদ্দুন ধংসের চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে। মুর্তি সংস্কৃতি আমাদের ধর্ম দেশ ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এসব চক্রান্তের মাধ্যমে দেমকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর লক্ষ্য নিয়ে তোড়জোড় চলছে। মতবিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামী দল ও নেতৃবৃন্দকে এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে কর্মসুচি নিতে হবে এবং হেফাজত সহ সকল ইসলামী দলকে আন্দোলনে নামতে হবে।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেন, মূর্তি ইসলামে সবছেয়ে বিরোধী অনুসঙ্গ। এটা মুসলমানদের ঈমান বিরোধী। সকল বাধা বিপত্তি প্রতিহত করে ঈমান বিরোধী মূর্তি স্থাপন প্রতিহত করতে প্রদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মূর্তি স্থাপনের চক্রান্ত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত না করলে ইসলামী দলসমূহ এবং নেতৃবৃন্দের আদর্শ ও উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ডক্টর ঈসা শাহেদী বলেন মুসলমানের দেশে সর্ব্বোচ্চ আদালতের সম্মুখে মুর্তি স্থাপন চরম অবমাননা। তিনি আরো বলেন, নতুন শিক্ষানীতিতে অষ্টম শ্রেণীর পর ইসলাম শিক্ষা বাদ দেয়া হয়েছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের সন্তানদেরকে ইসলাম থেকে সরিয়ে রাখার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ভারত নানাভাবে আমাদের দেশ, তরুণ ও যুব সমাজকে ধ্বংসের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সামাজিক ও ইসলামী রীতি নীতি সমূলে ধ্বংসের জন্য তাদের চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতি আমাদের উপর ছাপিয়ে দিচ্ছে। তাদের অধিকাংশ চ্যানেলের প্রোগ্রামাদি মানুষের পরিবারিক জীবনের ঘর ভাঙ্গার নয়া কারিগর। এদেশের মানুষের সভ্যতা ও কৃষ্টিকালচারের আলোকে সংস্কৃতি চলতে হবে। ভিনদেশী কৃষ্টি কালচার দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস করতে দেয়া যায় না। আমাদের আগামী প্রজন্মের নীতি নৈতিকতা ও আদর্শ ঠিক রাখতে বাংলাদেশে ভারতের সকল চ্যানেল বন্ধ করতে হবে। না হয় ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলা হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা সিলেবাসে এখনো শিরকী বিষয় রয়েছে। এগলোকে পরিবর্তন করে শিক্ষার সর্বক্ষেত্রে কুরআন ও হাদিসের শিক্ষাবে বাধ্যতামূলক করা দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের অধিকার।

মুসলিমলীগের মহাসচিব এডভোকেট কাজী আবুল খায়ের বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগের সামনে মূর্তি স্থাপন করে ইসলাম ও বিশ্ব স্বীকৃত আইন প্রণেতা রাসূল সা. এর অবমাননা করা হচ্ছে। মুসলমানদের সর্ব শ্রেষ্ঠ সম্পাদ ঈমার রক্ষার জন্যই ঐক্যবদ্ধ কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ন মহাসচিব বলেন, মুসলমানদের ঈমান বিরোধী সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে ঐক্যবদ্ধবাবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিলে ইসলাম বিরোধী মহল খরকুটার মত ভেসে যাবে।

নেজামে ইসলাম পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জিয়উল হক মজুমদার বলেন, বাংলাদেশকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার গভীর চক্রান্ত চলছে। এ চক্রান্ত প্রতিহত করতে তৌহিদী জনতাকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সূচনা করতে হবে।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ