শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


ট্রাম্প এসেছেন, তারপর?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুসা আল হাফিজ
কবি, কলামিস্ট ও গবেষক

musa_al_hafizএক।

ট্রাম্পের সামনে দুটি পথ। হয় ইম্পিচমেন্টের কবলে পড়ে মেয়াদ শেষ হবার আগেই অপমানজনক বিদায়, নয় অব্যাহতভাবে রাশিয়া ও ইসরাইলের স্বার্থ সংরক্ষণ করে যাওয়া। তার এমন সব গোপনীয়তা উভয় রাষ্ট্রের হাতে রয়েছে, যা তাকে সব সময় তাড়িয়ে বেড়াবে। অবাক হচ্ছি, আমেরিকানরা এমন একজনকে ক্ষমতায় আনলো, যে আমেরিকার হয়ে কাজ করতে চাইলে নিজের সংকট, আর পুতিন-নেতানিয়াহুর লাঠিয়াল হয়ে কাজ করতে থাকলে আমেরিকার সংকট।

দুই।

আমেরিকার ভালো বন্ধু ইউরোপ। আমেরিকার শক্তিতে ইউরোপ অন্যরকম ভয়ঙ্কর, ইউরোপের শক্তিতে আমেরিকা অন্য রকম ভয়ঙ্কর। ট্রাম্প এ জায়গায় কিরিচ চালাচ্ছেন। ফলে উভয়েই হারাচ্ছে এমন কিছু, যা তাদের বিশ্বশাসনের জায়গা থেকে সরিয়ে দেবে। ধীরে ধীরে বিশ্বশক্তি নয়, তারা হতে থাকবে পশ্চিমা শক্তি। আমেরিকা যা চায়, তা-ই, পৃথিবীটা আর সেই জায়গায় থাকবে না।

তিন।

তাহলে? বহু আঞ্চলিক শক্তির সমাহারে পরিচালিত হবে পৃথিবী। বিশ্বনেতৃত্বে আসতে চাইবে রাশিয়া। সে মুরোদ তার নেই। আবার তাকে বাদ দিয়ে হবে না কিছুই। এককেন্দ্রিক বিশ্ব আর থাকছে না। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বরাজনীতির হাওয়া বুঝা এবং ভবিষ্যতের গতিমুখ ধরতে পারার সচেতনতা দেখছি মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কের কৌশলে।

রাশিয়ার সাথে কৌশলগত যৌথতা দিয়ে তুরস্ক কয়েকটি কাজ করলো এক সাথে। আমেরিকার পরিকল্পিত মধ্যপ্রাচ্যের রুপরেখা তছনছ হয়ে গেছে।আবার ইরানের স্বপ্নের মধ্যপ্রাচ্য শক্ত হোচট খেয়েছে।

চার।

ইরান আসলে অতিজাতীয়তাবাদের শিকার। রুহানী একটা ফালতু মৌলভী। রাজনীতি বুঝে না, বুঝে শিয়াবাদ। রাজনীতি ফেরকা-টেরকা দিয়ে হয় না। বিশ্বরাজনীতিতে বিশেষ শক্তি হতে চাইলে তুরস্ককে বন্ধু হিসেবে নিতে হবে ইরানকে। উভয়েই নানা দিক দিয়ে দুর্বল। কিন্তু একজনের শক্তি আরেকজনকে সংহত করবে। তখন সৌদির সাথে তার প্রতিযোগিতাও কমবে। মধ্যস্ততা করবে তুরস্ক। সেটা সম্ভব। ফলত মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ করবে মধ্যপ্রাচ্য। আমেরিকা বা রাশিয়া নিজস্ব ছকে একে সাজাবার খেলা থেকে পিছু হটবে। ইসরাইল হবে একেবারেই একঘরে। ফিলিস্তিনসহ বহু সমস্যার সমাধান তখন দুয়ে দুয়ে চারের মতো সহজ অঙ্কে পরিণত হবে।

পাঁচ।

চীন উঠে আসার আগে আগে মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ মধ্যপ্রাচ্যের হাতে আসার একটি সুন্দর প্রেক্ষাপট এখনই। কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে জাতীয় বোধ ও চেতনার পাশাপাশি রাষ্ট্রসমূহের আভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, সুদৃঢ় প্রতিরক্ষা ও শক্ত অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড অপরিহার্য। এ তিনটি সক্ষমতা না থাকতে কোনো রাষ্ট্রই আপন ভীতের উপর দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু মুসলিম রাষ্ট্রসমূহে এ তিন জিনিসের অভাবই সবচে বেশি। কাজে কাজেই বিশ্বশক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার লড়াইয়ে পারস্পরিক ঐক্যের পাশাপাশি এসব সক্ষমতা হোক মুসলিম বিশ্বের অগ্রাধিকার।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ