শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ২৫ নভেম্বর ‘আলেমদের নেতৃত্বেই কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন সম্ভব’ বইমেলায় ‘সঠিক নিয়মে হাতের লেখা প্রশিক্ষণ বাংলা’-এর মোড়ক উম্মোচন সিলেটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সমাবেশ শনিবার সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আলেম রাজনীতিবিদরা খালেদা জিয়াকে পেয়ে সেনাকুঞ্জ গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা লক্ষ্মীপুর মারকাযুন নূরে ১১ মাসে হাফেজ হল ১১ বছরের শিশু আফসার যেসব অভ্যাস নীরবে মস্তিষ্কের ভয়াবহ ক্ষতি করে বৈষম্য ও অন্যায় নির্মূলে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই: মজলিস আমীর আওয়ামীলীগকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান খেলাফত মজলিসের

চরমোনাই তাবলিগবিরোধী নয়; আমরা কাউকে নিরুৎসাহিতও করি না: ফজলে বারী মাসউদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

fajle-bari masud

চরমোনাই ও তাবলিগ। বাংলাদেশে দীনি খেদমতের দুটি বৃহৎ ধারা। কিন্তু অভিযোগ আছে, তারা পরস্পর থেকে বিমুখ। বিশেষত বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায়ও অংশগ্রহণ করেন না চরমোনাই তরিকার অনুসারীগণ। কিন্তু এ অভিযোগ কতোটা বাস্তব? আদৌ কী এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি আছে? নাকি গালগল্পে তা ছড়িয়ে পড়েছে সমাজে? আর যদি অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে তা কেনো? এসব প্রশ্ন নিয়ে আওয়ার ইসলাম মুখোমুখি হয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর উত্তর-এর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের। তার সঙ্গে কথা বলেন আতাউর রহমান খসরু

আওয়ার ইসলাম : চরমোনাই তরিকা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রচলিত আছে, তারা তাবলিগবিমুখ। তারা ইজতেমাসহ তাবলিগি অনুষ্ঠান-আয়োজনগুলো এড়িয়ে চলেন। বিষয়টা নিয়ে কিছু বলুন?

ফজলে বারী মাসউদ : বিষয়টি পুরোপুরি অবাস্তব। চরমোনাইয়ের মরহুম পীর হজরত মাওলানা ফজলুল করীম রহ. টঙ্গি বিশ্ব ইজতিমা একাধিকবার গিয়েছেন। তিনি নিজে এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে তাবলিগের মুরুব্বিদের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন যে, আপনারা চরমোনই মাহফিলে এসে আম বয়ান পেশ করুন আবার আমাদের পক্ষ থেকেও কাউকে আপনাদের ওখানে আলোচনার সুযোগ করে দিন। তাহলে মানুষের মাঝে যে ভুল ধারণা আছে তা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো হজরতের জীবদ্দশায় তাবলিগের মুরুব্বিদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে নূন্যতম আগ্রহও দেখা যায় নি। তারপরও তিনি নিজে এ ব্যাপারে চরমোনাই তরিকা ও ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান স্পষ্ট করে গেছেন।

তিনি বলতেন, চরমোনাই ও তাগলিগ একই গাছের দুই ফুল। উভয় তরিকার সূতিকাগার দারুল উলুম দেওবন্দ। দারুল উলুম দেওবন্দের দুই কৃতি সন্তান হজরত মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি রহ. ও মুফতি রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি রহ. এর হাত ধরে তাবলিগ ও চিশতিয়া সাবেরিয়া তরিকার প্রচলন হয়েছে উপমহাদেশে। তাই আমি প্রচলিত কথাগুলোর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি।

আওয়ার ইসলাম : তাহলে তাবলিগি অনুষ্ঠান-আয়োজনে আপনারা অংশগ্রহণ করেন না কেনো?
ফজলে বারী মাসউদ : দাওয়াত ও তাবলিগের প্রচলিত পদ্ধতি ও ইসলামী আন্দোলন দুটিই দীনি খেদমতের স্বকীয় দুটি ধারা। প্রত্যেক ধারাই আপন আঙ্গিকে দীনের খেদমত করে যাচ্ছে। নিজস্ব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তাই তারা পরস্পরের অনুষ্ঠান ও আয়োজনে খুব বেশি অংশগ্রহণ করে না বা তার খুব বেশি সুযোগও নেই। অংশগ্রহণের বিষয়টি ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে যেমন সত্য, তেমনি তাবলিগি ভাইদের ব্যাপারেও সত্য। তারাও তো আমাদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন না।

মূল বিষয় হলো, আমরা কাউকে তাদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করি না; বিরোধিতার তো প্রশ্নই ওঠে না। বরং উৎসাহিত করা হয়। কেবল তবলিগই নয়; বরং সঠিক ধারার ইসলামের সকল কাজে সহযোগিতা করতে হজরত পীর সাহেব হুজুরের এর স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে সংগঠনভূক্ত সকলের প্রতি।

আওয়ার ইসলাম : তাবলিগ সম্পর্কে আপনাদের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি বা মূল্যায়ন কী?
ফজলে বারী মাসউদ : আমরা মনে করি, দাওয়াত ও তাবলিগ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসারী একটি দল। দীনের সব শাখায় তারা কাজ না করলেও এ কাফেলার মাধ্যমে ইসলামের মৌলিক কিছু কাজের সাথে মানুষ সম্পৃক্ত হচ্ছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক।

আওয়ার ইসলাম : সাম্প্রতিক সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে প্রকাশিত ফতোয়া সম্পর্কে আপনার বা আপনাদের মূল্যায়ন কী?
ফজলে বারী মাসউদ : দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ মুসলিম উম্মাহর সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটি দীনি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল, প্রধান মুফতি, শায়খুল হাদিসসহ বড় বড় ওলামায়ে কিরাম মাওলানা সা’দ সাহেবকে যেসব বিষয়ে সতর্ক করেছেন, সেসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক বলেই আমরা মনে করি। আল্লাহ না করুন, নতুবা বৃহৎ এই দীনি কাফেলার পথ হারানোর ভয় রয়েছে।

আওয়ার ইসলাম : দাওয়াত ও তাবলিগের ব্যাপারে আজ যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তার কারণ কী মনে করেন আপনি?
ফজলে বারী মাসউদ : এখানে একাধিক কারণ থাকতে পারে। যেমন, উলামায়ে কেরামের ব্যাপক অংশগ্রহণের অভাবেই এমনটি হচ্ছে। দাওয়াত ও তাবলিগের কাজের যতোটা বিস্তৃতি ঘটেছে তাতে উলামায়ে কেরামের অংশগ্রহণ ততোটা বাড়ে নি। আবার দীর্ঘকাল একমুখী খেদমত করার কারণেও এই বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। কারণ মানুষ যখন একটি কাজে ডুবে থাকে, তখন সে পার্শ্বিক চিন্তা-চেতনার শিকার হয়। আল্লাহ ভালো জানেন।

আওয়ার ইসলাম : ইজতেমাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
ফজলে বারী মাসউদ : ইজতেমাকে আমি দীনি খেদমতের অংশ মনে করি। এর মাধ্যমে মানুষ দীনি বিষয়ে জানার সুযোগ পান। বহু মানুষ দীনি কাজের জন্য প্রস্তুত হন। যাদের পক্ষে সম্ভব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করা উচিৎ।

আওয়ার ইসলাম : আওয়ার ইসলামকে সময় দেয়ায় আপনাকে ধন্যবাদ।
ফজলে বারী মাসউদ : আমাকে কথার সুযোগ দেয়ায় আপনাকে, আওয়ার ইসলাম পরিবার এবং তার সব পাঠককে ধন্যবাদ।

আরআর

আরো পড়ুন ‘তাবলিগ দেওবন্দেরই একটি অঙ্গ; এরসাথে একতা পোষণ ও অংশগ্রহণকে আরো জোরালো করা আলেমদের জন্য খুবই জরুরি’

বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মেহমানখানায় যা হয়


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ