বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


চট্টগ্রামে হচ্ছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

police_12872 copyআওয়ার ইসলাম: ঢাকার আদলে চট্টগ্রামেও কাউন্টার টেররিজমের একটি ইউনিট স্থাপন করছে পুলিশ প্রশাসন।

পুলিশের কমান্ডো দল, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ও সোয়াত মিলে এই ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এ ইউনিটটি গঠন করা হচ্ছে বলে পুলিশ প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে।

 

চট্টগ্রামে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের নেতৃত্বে থাকবেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের দুজন এবং সহকারী পুলিশ সুপার পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা। এর বাইরে পরিদর্শক, উপপরিদর্শক থেকে পুলিশের অন্য পর্যায়ের সদস্যরাও থাকবেন।

পুলিশের সোয়াত ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অধিকতর প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে। সর্বশেষ ১৪ দলের একটি কমান্ডো দল ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে। তাদের সবাইকে চট্টগ্রামে রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার এ প্রসঙ্গে বলেন, কাউন্টার টেররিজমের একটি ইউনিটের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। সেখান থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, যে দলটি ভারত থেকে কমান্ডো প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে, তাদের ভারতের ‘ব্ল্যাক ক্যাট কমান্ডো’র আদলেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শিখদের হাতে খুন হওয়ার পর ১৯৮৪ সালে এই ‘কমান্ডো ইউনিট’ গঠন করা হয়। বিভিন্ন প্রদেশে গুরুতর অপরাধ দমনের লক্ষ্যে তাদের ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দলেও এক বা একাধিক ইউনিট কাজ করে। এটি ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনএসজি) অধীনে একটি বিশেষ বাহিনী হিসেবে কাজ করে। সন্ত্রাস দমন বাহিনী হিসেবে কেবল বিশেষ সময়ে এই দলের সদস্যদের ব্যবহার করা হয়। জার্মানির এক বিশেষ বাহিনীর আদলে ভারত ওই দলটি গড়ে তুলেছিল।

বাংলাদেশেও জঙ্গি দমনের কাজে কাউন্টার টেররিজমের সদস্যরা ইতিপূর্বে কাজ করেছেন। ভৌগোলিক কারণে চট্টগ্রামের গুরুত্ব বিবেচনা করে এখানে কাউন্টার টেররিজমের ইউনিট প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ডিবি) হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্ব ১৪ পুলিশের একটি দল ভারত থেকে কমান্ডো প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। এ মাসের শেষ দিকে তিন ইউনিটের সমন্বয়ে কাউন্টার টেররিজমের ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবির জানান, মূলত কমান্ডো, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ও সোয়াত দলের সমন্বয়েই এ কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গঠনের পরিকল্পনা হয়েছে।

জানা গেছে, সোয়াত দলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাত পুলিশ সদস্য বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করছেন।

ধরা না পড়া জঙ্গিরা : প্রায় ছয় বছর আগে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের সোনাপাহাড় গ্রাম থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে জেএমবির কার্যক্রম শুরু হয়। ওই গ্রামের যুবক হারুন অর রশিদ ওরফে রুবেল আর এমরান হোসেন শিহাব চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেএমবির শীর্ষ নেতা। পুলিশ তাদের এখনো ধরতে পারেনি।

এ ছাড়া আকবর শাহ থানায় ধরা পড়া জেএমবি সদস্য এরশাদ হোসেন মামুন জবানবন্দিতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে সক্রিয় যে কজন জেএমবি নেতার কথা উল্লেখ করেছিলেন, তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সামরিক কমান্ডার ফুয়াদসহ বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তবে মামুনের জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হাফেজ আবু রায়হান ও রাজীব গান্ধীর সন্ধান পায়নি পুলিশ। ঢাকার হলি আর্টিজানের ঘটনায় রাজীব গান্ধীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি কাউন্টার টেররিজম ইউনিট নিশ্চিত হয়।

নগরীর মাঝিরঘাট সাহা করপোরেশনে ডাকাতির সময় খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার জঙ্গি সদস্য মিনহাজুল জবানবন্দিতে বলেন, রুবেলের বাড়ি তাদের একই গ্রামে। তার মাধ্যমে জেএমবিতে আসেন মিনহাজুল। রুবেলের পরামর্শে সাহা করপোরেশনের হিন্দু ব্যবসায়ী সত্য গোপালকে খুন করে টাকার ব্যাগ লুটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ডিএস


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ