শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


দু্ই দলে উত্তেজনা থাকলেও সংঘাতের ভয় নেই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

hasina-khaledaআওয়ার ইসলাম: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ৫ জানুয়ারি ঘিরে উত্তেজনা রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। তবে সংঘাতের আশঙ্কা নেই বলেই মনে করছেন প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরের নেতারা।

কারণ, এবার সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি আলাদা দিনে মূল কর্মসূচি দিয়েছে।

তবে ঢাকার বাইরে দুই দলেরই ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি আছে। দুই দলেরই দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, সংঘাত এড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে ৫ জানুয়ারিতে ঢাকায় দুটি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।

সারা দেশের জেলা ও উপজেলাতেও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে দলটি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটি বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে। আর মহানগর উত্তর কমিটির পক্ষ থেকে সমাবেশ হবে ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারে। কর্মসূচি সফল করতে দলটির মহানগর কমিটি একাধিক প্রস্তুতি সভা করেছে। দলের সাংসদদের নিজ নিজ এলাকা থেকে লোক এনে জমায়েত বড় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি গত দুই বছর দিবসটিকে ‘গণতন্ত্রের কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তবে সব কর্মসূচি ঢাকার বাইরে। এবার ৫ জানুয়ারি তারা কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া সব মহানগর ও জেলা সদরে কালো পতাকা মিছিল করবে বলে জানিয়েছে। আর ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের আয়োজন করেছে। তবে এখনো অনুমতি মেলেনি।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাজিরার তারিখ নির্ধারিত আছে। এ জন্যই দলটি সমাবেশের তারিখ দুই দিন পিছিয়ে দিয়েছে।

২০১৬ সালে ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার কিছুটা নমনীয়তা দেখায়। বিএনপিকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। আর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। কোনো রকম সংঘাত ছাড়াই দুই দলের কর্মসূচি শেষ হয়।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ৭ জানুয়ারি বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে শেষ মুহূর্তে কিছু শর্ত দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুমতি দেওয়া হতে পারে। আর বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, বিকল্প স্থানে হলেও তারা সমাবেশ করবে।

তবে সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির কর্মসূচিতে যাতে বেশি মানুষের জমায়েত না হয়, সে জন্য নানা প্রশাসনিক বাধা তৈরি করা হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিশ্চিত করারও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে গায়ে পড়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো রকম সংঘাতে জড়ানোর পরিকল্পনা নেই আওয়ামী লীগের।

আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারিতে বিএনপিকে ঢাকায় কোনো কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না—এই মনোভাব তারা আগেই নানাভাবে বিএনপিকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আর বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, তারাও সব ধরনের সংঘাত এড়িয়ে কর্মসূচি পালন করার পক্ষে। এ জন্যই ৫ জানুয়ারি ঢাকায় কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। তবে ঢাকার বাইরে দুই দলেরই কর্মসূচি রয়েছে ৫ জানুয়ারিতে। দুই দলই ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগরে সভা করার অনুমতি চেয়েছে পুলিশের কাছে। ফলে দুই দলের পক্ষ থেকেই সংযত হওয়ার নির্দেশনা থাকবে। তবে এরপরও একেবারেই সংঘাত হবে না—তা বলা মুশকিল।

 আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কেউ সমাবেশ করবে কি করবে না, সেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখবে। এখানে তাঁদের কিছু বলার নেই। আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী  বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য দুটি অনুমতি লাগে। একটি গণপূর্ত বিভাগের। অন্যটি পুলিশের। গণপূর্ত বিভাগ থেকে বলা হয়েছে পুলিশের অনুমতি পেলে তারা অনুমতি দেবে। অনুমতি পাওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। আর সমাবেশ করার জন্য বিএনপির সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে তিনি জানান।

 ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের শরিকেরা ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। ভোট গ্রহণের আগেই ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ভোট প্রতিহত করার লক্ষ্যে সারা দেশে হরতাল ডাকে। চলে জ্বালাও-পোড়াও। এরপর থেকে দিবসটিকে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আর বিএনপি দিনটিকে গণতন্ত্রের কালো দিবস হিসেবে পালন করে।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ