শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


ডিজিটাল ছবি কি জায়েজ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ছবি তোলা জায়েজ না জায়েজ এ বিষয়ে জনমনে নানারকম আলোচনা রয়েছে। সম্প্রতি সেখানে যোগ হয়েছে ডিজিটাল ছবি। এ ছবিকে অনেক আলেম জায়েজ মনে করলেও অনেকে আবার তা মনে করেন না। বিষয়টি নিয়ে সাধারণদের মধ্যে দোদুল্যমান অবস্থা কাজ করে।

তবে আজ রিববার শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ তার ফেসবুক পেইজে এক বিষয়ে একটি সমাধান পেশ করেছেন। ডিজিটাল ছবি সম্পর্কে একজন প্রশ্নকারীর উত্তরে তিনি ওই ফতোয়া পেশ করেন।

প্রশ্নটি ছিল- ‘বর্তমানে আমাদের মাঝে একটি কাজ খুব বেশি হচ্ছে যা আমাদের ক্ষতির কারণ বলে মনে হচ্ছে তা হলো যেখানে সেখানে যতখুশি মোবাইলে ছবি তোলা হচ্ছে। আরও মারাত্মক হচ্ছে এই ছবি ফেসবুকে আপলোড দেয়া হচ্ছে মানুষ এসবকে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে যাচ্ছে।

তাছাড়া ওয়াটসআ্যপ, ইমু, ভাইবারে ইচ্ছেমত পিকচার দেয়া-নেয়া হচ্ছে যা অনেক রকম গুনাহের পরিবেশ খুলে দিচ্ছে। প্রথমত জানার বিষয় হলো জরুরত ছাড়া এভাবে ছবি তোলা কি জায়েয হয়ে গেলো? কোন দলীলের ভিত্তিতে হলো?

কোন কোন আলেম জায়েয হওয়ার ফতোয়া দিয়েছেন? সর্বসম্মতিক্রমে জায়েয না-কি, না জায়েয। দ্বিতীয় হলো, ফেসবুক, ওয়াটসআ্যপ, ইমু, ভাইবার ইত্যাদিতে ছবি আপলোড ও ডাউনলোড ইত্যাদি জায়েয না-কি, না জায়েয? দলীল দিয়ে রাহনুমায়ী করবেন।

প্রশ্নের জবাবে মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ লেখেন, ইসলামি শরীয়ায় সন্দেহাতীতভাবে প্রাণীর ছবি তোলা ও অঙ্কন করা হারাম, একান্ত বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তা তোলার অনুমতি নেই। তবে বর্তমানে ডিজিটাল ছবি প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভূক্ত কি-না এতে কিছুটা গবেষণার অবকাশ রয়েছে।

ভারতবর্ষের সিংহভাগ আলেম এ ধরনের ছবিকে হারাম বললেও আল্লামা রফি উসমানী সাহেব দা.বা. ও আল্লামা তাকী উসমানী সাহেব দা.বা. এর মত কিছু মুহাক্কিক ফকীহর দৃষ্টিভঙ্গিতে এগুলো নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভূক্ত হবে না।

কেননা ছবি হওয়ার জন্য স্থীরতা ও স্থায়ীত্বের গুন থাকা শর্ত। আর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত যে, ডিজিটাল ছবির স্থীরতা ও স্থায়ীত্ব নেই। এজন্য তাদের মতে ডিজিটাল ছবি মূলত ছবিরই অন্তর্ভূক্ত নয়।

এ ব্যাপারে আমাদের মত হলো, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ডিজিটাল ছবি বাস্তব ছবির অন্তর্ভূক্ত না হলেও এতে যেহেতু ছবির রূপ পাওয়া যায় এবং এর দ্বারা ছবির উদ্দেশ্য আদায় হয়, পাশাপাশি জমহুর উলামায়ে কেরাম এটাকে এখনও অবৈধ বলে মনে করেন, বিধায় নিশ্চিত করে হারাম বলা না গেলেও ঢালাওভাবে একে জায়েয বলারও অবকাশ নেই।

তবে যেখানে শরয়ী জরুরত বিদ্যমান বলে উলামাগণ মনে করেন সেখানে দ্বীন সুরক্ষার বিশেষ প্রয়োজনে ছবি ধারণ নিষেধ নয়।

বর্তমানে ফেসবুক, ওয়াটসআ্যপ, ইমু ইত্যাদিতে যেসব ছবি আপলোড দেয়া হয়, যেহেতু এগুলোর অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয়, তাই ঢালাওভাবে এগুলোর অনুমোদন দেয়া যায় না।

একান্ত প্রয়োজনে ব্যবহার করা শরয়ী দৃষ্টিতে আপত্তিকর নয়। দ্বীনি প্রয়োজনে বর্তমান বিশ্বের গবেষক উলামারা এটাকে হারাম ছবির অন্তর্ভূক্ত মনে করেন না তাদের ফাতাওয়া অনুযায়ী আমল করার অবকাশ রয়েছে।

সর্বাবস্থায় একেবারে হালাল মনে করে প্রয়োজন অপ্রয়োজনে এসব ছবির ছড়াছড়ি শরয়ী দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। অন্তরে আল্লাহর ভয় বিদ্যমান রেখে সে অনুযায়ী আমল করা দরকার।

আরআর


সম্পর্কিত খবর