শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


খোলা আকাশের নিচে সন্তান প্রসব; বিশ্ব মানবতা আজ কোথায়?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা মাহমুদ হাসান সিরাজী
প্রিন্সিপাল, মাদরাসা ওসমান ইবনে আফফান রা.

mahmudul_hasan_sirajiমিয়ানমার এক সময় হয়তো স্বাধীন হবে। রোহিঙ্গারা আবার তাদের অধিকার ফিরে পাবে। নিজেরা নিজেদের মত করেই সব কিছু করবে। কিন্তু আজ যারা পথে ঘাটে, হাটে বাজারে মার খাচ্ছে, জাগায় জাগায় লাঞ্চনার শিকার হচ্ছে, তারা তখন শুধু ইতিহাস হয়ে থাকবে।

তবে আজ যে মা খোলা আকাশের নিচে তার সন্তান প্রসব করলেন সে কিন্তু ইতিহাস গড়তে বা স্বরণীয় হয়ে থাকতে এ পরিস্থিতির শিকার হননি। তিনি কোন খবরের শিরোনাম বা আলোচিত হওয়ার জন্য উন্মুক্ত ময়দানে সন্তান প্রসব করেননি। সময় তাকে এমনটা করতে বাধ্য করেছে। পরিস্থিতি তাকে এখানে নিয়ে এসেছে।

ourislam24.com এর মাধ্যমে খোলা আকাশের নিচে সন্তান প্রসবের সংবাদটি যখন চোখের সামনে এল, তখন চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রাখা ছাড়া কোন উপায় ছিল না।

একটা সম্প্রদায় কতটা অসহায় হলে এভাবে খোলা আকাশের নিচে শঙ্কা আর অবৈধ প্রবেশের হুলিয়া মাথায় নিয়ে সন্তান প্রসব করতে পারে! তাদের অবস্থা কতটা বিপন্ন হলে আমাদের জেলখানাগুলো তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করতে পারে!

কিন্তু আফসোসের কথা! এ দেশের আলেম ওলামা আর দীনদার শ্রেণি ছাড়া তাদের দুঃখের কথা শুনার মত লোক আজ নেই। তাদের এ বিপন্ন অবস্থার খোঁজ খবর নেওয়ার মত জাতি আজ নেই।

দেশের আলেম ওলামা ও দীনদার সাধারণ মানুষ নিজেদের উদ্যোগে যা করতে চায় তাও তাদের ঠিকভাবে করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে রোহিঙ্গারা কি আল্লাহর সৃষ্ট কোন মাখলুক নয়? পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার কি তাদের কোন অধিকার নেই?

আজ যারা মার খাচ্ছে, কাল হয়তো তারাই আবার প্রতিশোধ বা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে অশ্র হাতে নেবে। তারা আবার বিশ্ব মানবতার চোখে সন্ত্রাসী হয়ে যাবে না তো!

মানুষ যেখানে চূড়ান্তভাবে আটকে যায় সেখান থেকেই ঘুড়ে দাড়াতে চেষ্টা করে। আজ যেসব নির্যাতিত, নিপিড়িত ও অবহেলিত রোহিঙ্গা পরিবারের সন্তানরা জন্ম নিচ্ছে এবং বড় হচ্ছে তারা কিন্তু এসব দেখতে দেখতেই বড় হচ্ছে। একেই বলে প্রাকৃতিক শিক্ষা। এ শিক্ষা ওদের অন্তরে বসে যাচ্ছে। এটা অমোছনীয় শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। এসব দৃষ্য ওদের সদা সজাগ রাখবে। ওদের অন্তরে একটা চেতনা সৃষ্টি করে তুলবে। যে চেতনায় বলিয়ান হয়ে আমাদের মত মিয়ানমার সরকার থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনবে। নিজেদের অধিকার আদায় করে নিয়ে আসবে। তখন এসব শিশুরাই হয়ে উঠবে অপ্রতিরুদ্ধ।

আর ওরা স্রষ্টার অনুকম্পা যেমন পাবে তেমনি মানবীয় সমর্থনও পাবে। কারণ ওরা মজলুম। ওরা নির্যাতিত। ওরা নিপিড়িত। ওদের চোখের সামনেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল ওদের মা বাবাদের। ওদের সামনেই জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওদের আবাদ ও আবাসি বাড়ি ঘরগুলো। ওদের চোখের সামনে তখন অতীতের অগ্নিময় স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।

আরআর

http://ourislam24.com/2016/12/26/%E0%A6%96%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%99%E0%A7%8D/

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ