শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


ছোটগল্প: যে কবর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবু উবায়দাহ তামিম

abu_ubaidah_tamimপ্রায় ত্রিশ বছরের পুরোনো কবরে শুয়ে থেকেও নিজের ছেলেকে চিনতে কোনো ধরনের অসুবিধা হয় না মৃত রুস্তম আলীর৷ আরজ যে বছর গ্রামের স্কুল থেকে শহরের স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হয়, সে বছরই কুয়াশাবৃত এক শীতের সকালে রুস্তম আলী নীরব নিঃশব্দে পরজগতে পাড়ি জমায়৷ তখন বাপ মরে যাওয়া আরজ গোঁড়া নড়বড়ে গাছের মতোই হেলে পড়ে, এবং পড়ালেখা ছেড়ে দেয়৷

এদিকে মানুষের মুখে মুখে তখন আরজকে নিয়ে দুঃখমিশ্রিত বাণী ভাসতে শুরু করলে, মনভাঙ্গা আরজ জ্বলন্ত মোমবাতির মতো আরো গলে পড়ে৷ ...বাপই তো সব, বাপ না থাকলি কি আর কিছু ভাল্লাগে, আরও ওইটুকুন ছুড়া বাপ হারায়ছে৷ এ দুখখোর কি শ্যাষ আছে!

কিন্তু না, খুব দ্রুতই আরজের সে দুঃখের সমাপ্তি হয়৷ বাপ মারা যাওয়ার পরে প্রায় তিন মাস যাবত চট্টগ্রামে নানাবাড়ি গিয়ে ঘুরে আসার পর আরজ আলী বাপ হারানোর শোক অনেকাংশই ভুলে যায়৷ এবং আগের মতো সবকিছু স্বাভাবিকভাবে করতে শুরু করে৷ তারপর কতক বছরের ব্যবধানে, দিন রাত আর ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে মিলিয়ে মিলিয়ে সেই বালক আরজ এতদিনে হয়ে ওঠে বিয়াল্লিশ কিংবা তেতাল্লিশ বছরের একজন বয়স্ক আরজ আলী সাহেব৷ এখন তার বড়ো সংসার৷ এক ছেলে আর দুই মেয়ের বাপ সে৷

আজ সকাল থেকে আরজ আলীর মন ভালো নেই, মেজাজটা একেবারে খরখরা বালির মতো হয়ে আছে৷ আরজ বুঝতে পারে যে তার মন খারাপ হলেও তা দেখার মতো লোক এ বাড়িতে নেই৷ ছেলের মনটা সংকুচিত দেখে মৃত রুস্তম আলীর মনও খারাপ হয়ে যায় কবরে শুয়ে৷ পাকা বারান্দার এককোণে তামাটে মুখ করে, চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে থাকে আরজ আলী, তার কপালে গভীর চিন্তার তিনখান ভাঁজ লম্বালম্বী পড়ে আছে৷ এমন হতো যে, রুস্তম আলী বেঁচে থাকত তাহলে পুত্রের সমস্যার জন্য একটা উপায় বের করে দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল৷ কিন্তু সে রাস্তা যে বন্ধ, এখন রুস্তম আলীর দিনরাত শুধুই পুকুরপাড়ের গোরস্থানে শুয়ে শুয়ে, উপায়হীনভাবে ছেলের বিপদ-আপদ দেখে যেতে হয়৷

মাঝে মাঝে নিজের ছেলের উপর কোনো বিপদ দেখলে তার খুব মায়া হয়৷ সেই হিসেবে আরজ আলীর দিকে তাকালে নিজের বাপের প্রতি তার কতটুকু টান আছে, তা চাইলে কেউ সহজেই বুঝে নিতে পারে না৷ যেমন আরজ আলী এই সদ্যাতীত চার-পাঁচ বছর বাদে মাঝের পঁচিশ-ছাব্বিশ বছরের ভেতরে বাপের কথা মনেই করেনি একবার, কেমন যেন সে এটাও ভুলতে বসেছিল, একজন পিতার মাধ্যমে তার পৃথিবীর মুখ দেখা হয়েছে৷

কিন্তু একসময়, যখন আরজ আলী বাপের লাগানো বড় বড় মেহগনিগাছ বেচে তার ছেলে হাসানকে বিদেশ পাঠায়, এবং দুই মাস যেতে না যেতেই হাসানের বেতনে পুরো বাড়ি ঝলমল করে ওঠে৷ তখন আরজ আলীর মনে পড়ে, তার মৃত বাপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের কথা- সেইকালে যদি রুস্তম আলী মেহগনির চারাগুলো না পুঁতত, তাহলে কি আজীবনেও এমন সুখ পরিবার দেখার ভাগ্য হতো তার? এমন কথা মনে হতেই নিজের ভেতরে ধড়ফড়িয়ে পাপবোধ জেগে ওঠে আরজ আলীর৷ তারপর গ্রামের একজন মৌলভী সাবের পরামর্শ অনুযায়ী পুরো চার-পাঁচ বছর ধরে প্রতি শুক্রবার নামাজের পরে আধাশুদ্ধ দোয়া দরুদে রুস্তম আলীর কবর জিয়ারত করতে থাকে আরজ৷

আরজ আলীর বউ সুলতানা বেগম রান্নাঘর থেকে এসে ঘরের বারান্দায় উঠতে উঠতে দেখে, তার স্বামী কোনো দরবেশের সুরতে গভীর ধ্যানে কী যেন ভাবে৷ সুলতানার বুঝতে বাকি থাকে না আরজ আলীর চিন্তার বিষয় কী তা জানতে৷ সে একটু আবদারসূচক চেঁচানি দিয়ে বলে ওঠে, - দিন নেই রাত নেই, সারাদিন এরাম করে কী যে ছাতা ভাবো, তাছড়া এত টেনশন কল্লি কি মানুষ বাঁচে! বউয়ের কথায় ধ্যানভঙ্গ হয়ে ফ্যালফ্যাল চেহারায় তাকিয়ে থাকে আরজ আলী৷

বলে, - না, সিরাম কিছু না৷ ভাবছি মার কথা৷ ঐ সুমায় মা কী করে সহ্য করে নেবে এরাম কাজডা, তাই আরকি৷

- সে সুমার কথা সে সুমায়, এ্যাখন ঐ নিয়ে টেনশন করাত তো কোনো ইয়ে দেখছিনে৷ আসো, রুটি দিছি, মুরগির গোশতের ঝোল দিয়ে খেয়ে ন্যাও৷

আরজ আলী সকাল থেকে না-খাওয়া পেটে মুরগির ঝোল আর রুটির কথা শুনে একটু দ্রুতই উঠে দাঁড়ায়, এবং বউয়ের পেছন পেছন খাওয়ার ঘরের দিকে ঢোকে৷ রসুলপুর নামের এই ছোট্ট জনপদে একমাত্র আরজ আলীর ছেলেই বিদেশের টাকা ঘরে আনে, তা ছাড়া বাকি ঘরের প্রায় লোকই কৃষিকাজ করে৷ এই সব কৃষিকাজ করা লোকদের কাছে বিদেশে চাকরি করা মানে দুনিয়াতে বসে জান্নাতি সুখ উপলব্ধি করা৷ সুতরাং সমস্যা হলো, বাইরে থেকে আরজ আলীদের বাড়ির ভেতরে যে অতিরিক্ত জান্নাতি ফুর্তি দেখা যায়; এটা এই জনপদের মানুষ এত সহজে সহ্য করতে পারে না৷ তাদের খেটে খাওয়া প্রাণটা বরং বিষিয়েই ওঠে তখন৷

মানুষ রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে সামান্য দিনের খাবার জোগাড় করতে যেখানে হিমশিম খায়; সেখানে আরজ আলীর পরিবার খেয়ে-দেয়ে আরও নেচে-গেয়ে বেড়ানোরও সুযোগ পাচ্ছে৷ এই অন্যায় কীভাবে মেনে নিতে পারে অবুঝ রসুলপুরবাসী? প্রথম প্রথম তো আরজ আলীদের পেছন-বাড়ির হাসমতের মা প্রতিদিন অন্তত দুবার করে এসে সুলতানা বেগমের কাছে দাবি ভরে বলত, -ভাবি, হাসমত তো হাসানের আপন ভাইর মতো হয়েই গ্রামে থাকত৷ এখন কোনো কায়দা-মায়দা করে ওরেও বিদ্যাশ পাঠানি যায় না? দুই ভাই একসাতি থাকবি৷ দ্যাখো ভাবি৷ ইট্টু চেষ্টা করি দ্যাখো৷ সুলতানা বেগম অনেক সময় নিয়েও মনে করতে পারে না, হাসমত কবে আবার হাসানের সঙ্গে ভাইয়ের মতো আচরণ করেছিল৷ বরং তখন তার মনে পড়ে যায় সেই দিনের কথা, যেদিন নতুন বিহারিবাড়ির গাছ থেকে হাসান আর হাসমত লুকিয়ে লুকিয়ে সুপারি পাড়তে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছিল, সেদিন হাসমত ও হাসমতের মা চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে পুরো গ্রামে হাসানকেই চোর প্রমাণ করতে চেয়েছিল৷ কিন্তু সে আর কয় বছরের ব্যবধান, এর ভেতরে হাসমতের মায়ের কথা আমূল পরিবর্তন হয়ে যায়, সুলতানা তা ভেবে অবাকই হয় বারবার৷ এখন সুলতানা বেগম হাসমতের মায়ের কথায় খানিক্ষণ চুপ করে থেকে থেকে বলে,

- ঠিকাছে, ভাবি৷ আমি হাসানের সাতি কতা কয়ে দ্যাকপানে, আসলে ও অনেক ব্যস্ত থাকে তো৷

ধীরে ধীরে যখন হাসমতের মা বুঝে ফেলে যে, তার কথা সুলতানা বেগম রোজ রোজ এই সেই অজুহাতে এড়িয়ে যায়; তখন সে এই ছোটখাটো নাটকের অবসান করে দেয় একদিন৷ সে যাচ্ছে তাই বলে মুখ খারাপ করে যায় আরজ আলীর বাড়ির পরে এসে৷ এবং সেই সঙ্গে হাসানের পরে অভিশাপের বুলিও থুবড়ে যায় এই বলে৷

...তোর ছাওয়াল যেন বিমান ধইসে মরে... ছাওয়ালের মুখ যেন না দেকতি পাস তুই... আর তারপর থেকে আরজদের জন্য বড়সড় শত্রু হয়ে ওঠে হাসমত পরিবার৷

এভাবে নানারকম তাল-বাহানা করে করে আশপাশের আরও দু'চার ঘর আরজ আলীদের সঙ্গে সকাল সন্ধ্যা ফেতনা সৃষ্টি করার সূত্র খুঁজতে থাকে৷ একান্ত যদি কিছু খুঁজে না পায় তারা, তাহলে রাতের মধ্যভাগে এসে আরজ আলীদের পুকুর থেকে বড় বড় মাছ ধরে নিয়ে যায়৷ একদিন রাতে, আরজ আলী খেয়ে দেয়ে কেবল বউকে জড়িয়ে ধরে শোয় একটা আরামের ঘুম দেয়ার জন্য৷ আর তখনি ঘরের পেছন থেকে, পুকুরে জাল ফেলার ঝুপঝাপ একটা শব্দ আরজের কানে আসে৷ অমনি আরজ 'ওকেনি কারা রে' ‘ওকেনি কারা রে' বলতে বলতে যেই-না অন্ধকারে চোর ধরতে ছোটে৷ তখনই হয় হিতে বিপরীত কাণ্ড, বয়স অনুমান করা যায় না এমন পাঁচ-ছয়জন পুরুষ, মুখে গামছা জড়িয়ে আরজ আলীকে উল্টো ধাওয়া করে৷

চল্লিশোর্ধ্ব আরজ আলী মাছের মায়া ছেড়ে দিয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে বাড়ির দিকে দৌড়ালে আরজের বউসুদ্ধ বড় বাড়িটা আতঙ্কে যায় মুহূর্তেই৷ দিন যেতে যেতে আরজ আলীদের অবস্থা এরূপ দাঁড়ায় যে, তাদের কাছে রসুলপুরে প্রতিটা রাত যাপন করার আগে অন্তত একবার করে শরীরে কাঁপুনি ধরে যায়।

এরই মধ্যে হঠাৎ একদিন সিঙ্গাপুর থেকে আরজের ছেলে হাসান ফোন করে আরজকে বলে, - আব্বা, শহরে বাড়ি করার চিন্তা ভাবনা করো, সামনে আমি বিয়েশাদি কল্লি ওখানে থাকা যাবি না৷ গ্রামের মানুষ টিকতি দেবে না আমাগের৷ ছেলের এমন প্রস্তাবে আজন্ম গ্রামে থাকা আরজ আলীর মনেও শহরে বসবাসের প্রচণ্ড লোভ জন্মায়৷ ফলে সে রাতদিন, ঘুম-খাওয়া বাদ দিয়ে মনে মনে শুধু বুদ্ধি খুঁজতে থাকে, কিভাবে এইখানের জায়গাজমি বিক্রি করে শহরে বাড়ি করা যায়৷ তাহলে তাদের আর এই গ্রামের যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে না, সেই সঙ্গে তারা শহুরেও হয়ে যাবে। কিন্তু আরজ আলীর এই আইডিয়া তার বউ ছাড়িয়ে মা রাশিদা বানুর কানে পৌঁছালে অকস্মাৎ বাড়ি বিক্রির চিন্তা-ভাবনা যেন পাহাড়ধ্বসের মতো মাটিতে গেড়ে যায়৷ রাশিদা বানু ছাফ ছাফ জানিয়ে দেয় আরজকে,

- এই বাড়ি কোনোমতেই ব্যাচা যাবি না, ইডার সাতে আমার জান-পরান মিশে আছে৷ এই অলুক্ষনে বুদ্দি কোথায় পালি তুই, তোর আব্বার আত্মা যে কষ্ট পাবি৷ এইডা কি মাতায় আছে!

মা মান্য করা আরজ আলী বোকার মতো চুপ করে থাকে৷

ওদিকে পুকুর পাড়ের গোরস্থানে শুয়ে শুয়ে রুস্তম আলী রাশেদা বানুর কথার উপরে একটু হলেও মনে স্বস্তি ফিরে পায়, খুব সন্তুষ্ট হয় সে৷ কারণ রুস্তম আলী আরজের চিন্তা-ভাবনার কারণে খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল এই কদিন৷ দুঃখকে পাশ কাটিয়ে, রুস্তম আলীর মনে পড়ে যায় বেঁচে থাকাকালীন একটি ছবির মতো সংসারের কথা- একটি মাটির ঘর ছিল তাদের, ভাইবোনহীন আরজ হাফ প্যান্ট পরে ধুলোর উঠোনে খেলাধুলা করত প্রতিদিন৷

রুস্তম আলী সন্ধ্যার সময় হাট থেকে ফিরে আদর করে আরজকে তুলতে যেত, তখন আরজ জেদ করে কাঁদত আর উঠতে চাইত না মোটেও৷

রাশিদা বানু ছেলের পরে দরদ দেখিয়ে বলত, - থাক, ওর যখন উঠতি মন চায় ও ওঠপেনে৷ ফাউ কান্দায়ে না৷ রুস্তম আলী আবারও ধুলোয় ছেড়ে দিত আরজকে, আরজ ধুলো-বালি মেখে পুরো বিড়ালছানার মতো হয়ে যেত৷ এমন সব দৃশ্যের সাদাকালো অ্যালবাম মনের ওপরে ভেসে উঠলে সহসাই চোখের কোণে পানি জমে যায় মৃত রুস্তম আলীর৷ কিন্তু কী আর করবে সে। তার যে দোআঁশ মাটির সাথে মিশে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই এখন। তাই সে নীরব শরীরের উপরে আবারও নীরব হতে চেষ্টা করে যায়।

ঠান্ডা আবহাওয়া চারদিক, সুনসান নীরবতা বিরাজ করা একটি সকাল আজ৷ ভোরের আগে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে পুরো রসুলপুরের উপর দিয়ে৷ সেই সঙ্গে রুস্তম আলীর কবরেও কিছুটা ঠাণ্ডা নেমেছে৷ আজ রুস্তম আলী কাউকে দেখতে পাচ্ছে না বাড়ির ভেতরে৷ কোথায় তার ছেলে আরজ? বা কোথায় তার প্রিয় স্ত্রী রাশিদা বানু? নিজে মৃত বলে কাউকে ডেকেও জিজ্ঞেস করতে পারছে না ছেলে কিংবা বউয়ের কথা৷ কী এক বর্ণনাহীন ব্যাথা!

বহুদিন পর তার খুব খারাপ লাগতে শুরু করেছে আজ৷ হঠাৎ বাড়ির পেছনের দিকে তাকাতেই রুস্তম আলী চমকে উঠল, আরজ আলীর সঙ্গে আরও দু-তিনজন লোকের কী যেন জায়গা-জমি বিক্রির কথা চলছে!

রুস্তম আলী সেসব কথা কান পেতে খেয়াল করে শোনার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হল; সে শুনতে পেল না৷ সে ভাবল, তার মানে কি শেষ পর্ যন্ত আরজ আলী, রাশিদা বানু এই মৃত রুস্তম আলীকে ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যেতে শুরু করেছে! আর যাদের কোনো দিনও দেখেনি, চেনেনি৷ তারা রুস্তম আলীর কষ্ট করে কেনা জায়গার উপরে ঘরদোর তুলবে? হয়ত কখনো বাড়ি করার প্রয়োজনে রুস্তম আলীর কবরটাও তারা ভেঙ্গে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে৷ অসহায় রুস্তম আলী পলকহীন দৃষ্টিতে শুধু মাথার ওপরের মাটিটুকু দেখতে থাকে তখন, নিজ কবরটার অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আতঙ্ক নিয়ে...!

জেএম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ