শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাণিজ্যে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

rohinga-returnআওয়ার ইসলাম: উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাণিজ্যে মেতেছে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেট। একদিকে দালালদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। অপরদিকে কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে টাকার বিনিময়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। এর নেপথ্যে রয়েছেন কুতুপালং বস্তির কথিত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক। টাকা দিয়ে ওই বস্তিতে প্রবেশ করানো হচ্ছে মিয়ানমার থেকে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের। ভাড়ার নামে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এর সবই করছে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেট।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী, পুলিশ ও রাখাইন সম্প্রদায়ের অমানবিক নির্যাতন ও বর্বরতার শিকার অধিকাংশ রোহিঙ্গাই কুতুপালং বস্তিতে আশ্রয় পাচ্ছে। কিন্তু আশ্রয় দেয়ার নামে বস্তির স্বঘোষিত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিকের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। তাদের দাবির টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে আশ্রয় মিলছে না। তাছাড়া রাতের বেলায় তরুণীদের তুলে নেয়ার হুমকিও দিচ্ছে ওই সিন্ডিকেটের লোকজন।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে ওই বস্তির চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড ডিপো জাফরের নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের জন্য ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। বন বিভাগের জায়গায় পুরনো বস্তির আশপাশে টিন, বাঁশ, কাঠ ও পলিথিন দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব ঘর। গাছপালা কেটে ও পাহাড় সমতল করে সেখানে এখনও শত শত ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। উজাড় করা হচ্ছে বন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ডিপো জাফরের তত্ত্বাবধানে সেখানে ঘর তৈরি করে নতুন রোহিঙ্গাদের ভাড়া দেয়া হচ্ছে।

কুতুপালং অনিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, শত শত ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে চেয়ারম্যান সিন্ডিকেটের ব্যবসার অংশ হিসেবে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘরের কোনোটি টিনের লম্বা কলোনি, আবার কোনোটা পলিথিন, বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি। এসব ঘরের জন্য রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন পরিমাণ টাকা দিতে হচ্ছে। পরিশোধ করতে হবে মাসিক ভাড়াও। ২৭ নভেম্বর কুতুপালং অনিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পে আসা রোহিঙ্গা আবুল ফয়েজ (৩০) জানান, তার বাড়ি মিয়ানমারের নাইশাপুরীতে। এখানে এসে তিনি এক স্বজনের ড্যারায় আশ্রয় নিলেও এখন চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিককে ১ হাজার টাকা দিয়ে এক চিলতে জমিতে বেড়ার ঘর নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে থাকছেন। অপর রোহিঙ্গা মো. আসাদ জানান, তার ছোট ভাই মো. নূর (১৮) ও বোন রেহেনা (১৬) সেখানকার সেনাবাহিনী ও পুলিশের গুলিতে ১৮ নভেম্বর নিহত হয়েছে। তার বোনকে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপর তিনি পরিবারের ৪ সদস্যকে নিয়ে এই ক্যাম্পে আসেন। পরে ডিপো জাফরকে ম্যানেজ করে ৫শ’ টাকা দিয়ে একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকছেন তারা। এমন শত শত অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও চেয়ারম্যান সিন্ডিকেটের ইশারায় বস্তিতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকেই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। এসব করে ক্যাম্প মাঝিদের অনেকে সম্পদের মালিক হয়েছেন।

এ ব্যাপারে কথিত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আমরা সহযোগিতা দিচ্ছি- এটা অপপ্রচার। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ আরমান শাকিল বলেন, রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গাদের বাইরে তার কিছু জানা নেই।

সূত্র: যুগান্তর

এম কে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ