বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

৫ দাবি জানিয়ে মিয়ানমার দূতাবাসে হেফাজতের চিঠি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

hathajariআওয়ার ইসলাম: গত ১ মাস ধরে মিয়ানমারে মুসলিমদের উপর অমানসিক নির্যাতন বন্ধে ৫ টি দাবি জানিয়ে মিয়ানমার দূতাবাসকে একটি চিঠি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ১ ডিসেম্বর সংগঠনটির ঢাকা মহানগরির উদ্যোগে মিয়ানমার দূতাবাস অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের কথা ছিল। তবে মিছিলটি পুলিশের বাধার মুখে আটকে পড়ে।

পরে হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর মিয়ানমার দূতাবাস বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেন। আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি দল এ চিঠি প্রেরণ করেন। চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

বরাবর,
রাষ্ট্রদূত, মিয়ানমার দূতাবাস

বিষয়ঃ রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের পূর্ণনাগরিক অধিকার নিশ্চিত করণসহ অমানবিক অত্যাচার নির্যাতন প্রসঙ্গে।

জনাব! আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন যে, শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে আরাকানের মুসলমানরা মিয়ানমারের নাগরিক হিসাবে বসবাস করে আসছে। সমাজ-রাষ্ট্র ও সংস্কৃতিতে মুসলমানরা অনস্বীকার্য অবদান ও প্রভাব রেখে আসছে। ২০০ বছরেরও বেশি সময় আরাকানে মুসলিম রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিলো।সতের শতকের প্রায় শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গা রাজ্যে মুসলিম বৌদ্ধ মিলে মিশে শান্তিপূর্ণভাবে স্বাধীনতা ভোগ করছিলো। অথচ ১৯৮২ সালে মিয়ানমারের তৎকালীন সামরিক সরকার নাগরিকত্ব আইন করে তাদের নাগরিক স্বীকৃতি বাতিল করে দেয়। অথচ রোহিঙ্গারা এক হাজার বছর ধরে এখানকার বৈধ অধিবাসী।

http://ourislam24.com/2016/12/01/%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%8B-%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%E0%A6%95/

আজ মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় নির্যাতনে রোহিঙ্গাদের উপর মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।জনপদের পর জনপদ পরিণত করা হচ্ছে পুড়া ভূমিতে। রাখাইন মগদস্যু এবং সামরিক বাহিনীর যৌথ বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী আরাকানে নিরস্ত্র,নিরীহ মুসলমান ধ্বংস উৎসবে মেতে উঠেছে। ভয়াল গণহত্যা চালানো হচ্ছে। পুড়িয়ে, গলাকেটে, গুলি করে, লোমহর্ষক নানা নির্যাতনে হত্যা করা হচ্ছে অসংখ্য রোহিঙ্গাকে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা কেউই বাদ পড়ছে না অমানবিক নিপীড়ন থেকে। জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, জ্যান্ত মানুষের উপর দলবদ্ধ মগদস্যুরা পৈশাচিক নৃত্য করছে। মানুষ নামের পশুরা ধর্ষণ করছে এবং হত্যা করছে অসহায়, নিরীহ মা-বোনদের। হাত-পা বেঁধে ফেলে দিচ্ছে সাগরে। মসজিদসমূহ ধ্বংস করে দিচ্ছে। কাঁচা-পাকা ঘরসমূহ মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে, সাজানো জনপদগুলো বধ্যভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে। ফসলের ক্ষেত, বাগান আগুনে জ্বালিয়ে ছাই করে দিচ্ছে। মুসলমানদের সবুজ নিঃসর্গে বইছে রক্তগ্রোত। অমানবিকতা ও নৃশংসতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শিত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জীবনকে করে তোলেছে অসহনীয়, যন্ত্রণাদায়ক।

রোহিঙ্গারা হারিয়ছে সব ধরণের মানবিক অধিকার।তারা হয়ে আছে নিজদেশে পরবাসী। তারা বঞ্চিত নাগরিক অধিকার থেকে। প্রতীয়মান হচ্ছে,শা‌ন্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুচির নেতৃত্বে পরিচালিত মিয়ানমারের প্রশাসনই মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা এবং অমানবিক সন্ত্রাসী কার্যকলাপের হোতা।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পরিচালিত রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞ ও বর্বরতা নিকট প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিকদেরকে স্পর্শ করেছে। তাছাড়া মুসলমান হিসাবে আমরা অন্য মুসলমান ভাই বোনদের কঠিন বিপদে নিশ্চুপ থাকতে পারি না। আমাদের দাবী,

এক- রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা বন্ধ করুন। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করুন।

দুই- রোহিঙ্গাদের জন্য নিজ দেশ মিয়ানমারে স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।যাদেরকে দেশ থেকে
বিতাড়িত করা হয়েছে এবং যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে পূর্ণ নাগরিক
অধিকার নিশ্চিত করুন।

তিন- রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষার নিশ্চয়তা বিধানকল্পে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

চার- রোহিঙ্গাদের গণহত্যায় জড়িত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্ষায় বলিষ্ঠ পদ‌ক্ষেপ নিন।

পাঁচ- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সেখানে নির্বিঘ্নে কাজ করার সুযোগ দিন।

(আল্লামা শাহ) আহমদ শফী (দা.বা.)
আমীর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ