শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


নৌবাহিনীতে যুক্ত হলো দুটো সাবমেরিন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

submerin-2আওয়ার ইসলাম: সম্প্রতি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগ হতে যাচ্ছে  চীনের তৈরি দু’টি সাবমেরিন  । গত সোমবার চীনে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের কাছে সাবমেরিন দু’টি হস্তান্তর করেন চীনা নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল লিউ জিঝু।

এ উপলক্ষে চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওনান শিপইয়ার্ডে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশ ও চীনের নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

০৩৫ জি ক্লাসের সাবমেরিন দু’টি শিগগিরই বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে। আগামী বছরের শুরুতে বানৌজা ‘নবযাত্রা’ এবং বানৌজা ‘জয়যাত্রা’ নামের এ সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশের নৌবহরে যুক্ত হবে।

সাবমেরিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, ‘চীন থেকে দুটি সাবমেরিন সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে যাত্রা শুরু করলো।’ তিনি এই সাবমেরিন দু’টির নতুনভাবে সজ্জিতকরণ ও  ক্রুদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য চীনা নৌবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার নৌবাহিনীকে আধুনিক, ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।’

নৌবাহিনীর উন্নয়নে এমন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নৌপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এই কনভেনশনাল সাবমেরিন দু’টি ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন। এগুলো দৈর্ঘে ৭৬ মিটার এবং প্রস্থে ৭ দশমিক ৬ মিটার। সাবমেরিনগুলো টর্পেডো ও মাইন দ্বারা সুসজ্জিত, যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করতে সক্ষম। সাবমেরিন দু’টি বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য ইতোমধ্যে দুই দেশের নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের যৌথ তত্ত্বাবধানে বাস্তব প্রশিক্ষণ ও সি ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দু’টি সাবমেরিনের জন্য চীনকে ২০৩ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে বাংলাদেশ। পত্রিকাটি বলছে, এর মধ্য দিয়ে বেইজিং-এর সঙ্গে বাংলাদেশের বর্ধিত অর্থনৈতিক ও সামরিক বন্ধনের বিষয়টি ফের সামনে চলে এসেছে।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে এই প্রথম সাবমেরিন যুক্ত হলো। আগামী বছরের গোড়ার দিকে এ সাবমেরিনগুলো বাংলাদেশের নৌবহরে যুক্ত হবে। এর ফলে ত্রিমাত্রিক নৌশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। বঙ্গোপসাগরে নিজের বর্ধিত সমরশক্তির জানান দেবে বাংলাদেশ।

কর্মকর্তারা বলছেন, এ সাবমেরিনগুলোর মাধ্যমে সমুদ্রের এক লাখ ১১ হাজার ৬৩১ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত হবে। এটা বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের চেয়ে সামান্য কম।

সম্প্রতি প্রতিরক্ষা খাতে শক্তি বৃদ্ধিতে নজর দিচ্ছে বাংলাদেশ। একটি নতুন বিমানঘাঁটি তৈরি করা হচ্ছে। চালু হয়েছে নতুন ক্যান্টনমেন্ট। নৌবহরে যুক্ত হয়েছে নতুন ফ্রিগেট।

২০১৩ সালে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি হয়। চুক্তিতে রাশিয়ার কাছ থেকে ফাইটার ট্রেনিং জেট, হেলিকপ্টার ও ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মিসাইল কেনার কথা উল্লেখ আছে। ওই বছরই নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন ও বঙ্গোপসাগরে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে দুটি সাবমেরিন কেনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

এবিআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ