শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


’বাংলাদেশি হজ এজেন্সিগুলোর মুনাফা অর্জনের গলাকাটা মানসিকতা বরাবরই লজ্জাজনক’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

hajj-picআওয়ার ইসলাম: হজ্ব এজেন্সিগুলোর অবহেলা ও বাণিজ্যিক মানসিকতা বরাবরই হাজীদেরকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। হজ্ব এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে অতিমুনাফা, প্রতারণা ও সেবার মান না থাকায় যার পর নাই কষ্ট করতে হয় হাজীদের। ইতিমধ্যেই ২০১৭ সনের হজ্বযাত্রীদের নিবন্ধনের প্রক্রিয়া নিয়ে মাঠে নেমেছে হজ্ব এজেন্সিগুলো। এ বিষয়ে কথা হয় কয়েকজন হজ্বসেবী এজেন্সি মালিকের সাথে। কথা বলেছেন আবিদ আনাম।

আওয়ার ইসলামের কাছে  হজ সেবা উন্নয়নের জন্য ৫টি পরামর্শ

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী, সত্ত্বাধিকারী, এম সেতারা ইন্টারন্যাশনাল।

হজ্ব এজেন্সির অধিকাংশ মালিকরা হজ্বসেবাকে সাধারণ ব্যবসার মতই মনে করে। অথচ হজ সেবা ইসলাম ধর্মে স্বীকৃত একটি ইবাদত। মক্কা মদিনায় আসা মুসলিম দেশের হজ্ব সেবকদের দেখেছি তারা কতটা আন্তরিকতার সাথে হাজীদের সেবা করে থাকেন।

হজের মানের ব্যাপারে যা করতে হবে তিন পক্ষেরই সমান প্রচেষ্টা করতে হবে। হজ্ব সেবার মান উন্নয়ন করতে মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী বলেন, হজ্ব মন্ত্রণালয় হজ্বমালিক সমিতি হাব এবং এজেন্সিগুলোর সব আন্তরিকতা লাগবে। তিনি ধোঁকা প্রতারণার হাত থেকে হাজীদের বাঁচানোর জন্য  সরকারকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন।

এক. হজ্ব প্যাকেজ ঘোষণা করতে দেরি না করা। যত দ্রুত সম্ভব হজ্বের প্যাকেজ ঘোষণা করে এজেন্সি মালিকদেরকে কাজ করার সুযোগ করে দেয়া।

দুই. প্যাকেজের পুরো টাকা নিবন্ধনের পর এজেন্সি মালিকের একাউন্টে জমা দেয়া। এবং হজযাত্রীর জমাকৃত টাকা যাতে এজেন্সি মালিকরা অন্য কাজে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য মন্ত্রণালয় দায়িত্বগ্রহণ করা। ব্যাংকগুলোর সাথে মন্ত্রণালয় একটি চুক্তি সম্পন্ন করা।

তিন. আমাদের আইটি ব্যবস্থা এবং অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া খুবই দুর্বল। সরকারকে অনুরোধ করবো আইটিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও দক্ষ জনবল গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা।

চার. নিবন্ধনের জন্য সারা বছর মন্ত্রণালয়ের সাইট উন্মুক্ত রাখা। নির্ধারিত কোটা শেষ হয়ে গেলে পরবর্তী বছরের জন্য নিবন্ধন শুরু হবে এই পথও খোলা রাখা। না হয় অনলাইনে পারদর্শীরা নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় অন্যদেরকে পিছনে ফেলে দেয় যা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর।

পাঁচ. টিকেট কালোবাজারি থেকে মুক্ত রাখার জন্য সরকারকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। এজেন্সি মালিকদের সাথে হজ্ব মন্ত্রণালয়ের একটি চুক্তি এমন থাকতে পারে যে যাত্রীদের অর্ধেক টিকেট বাংলাদেশ বিমান থেকে কিনবে বাকি অর্ধেক সৌদি এয়ার লাইন্স থেকে নিবে। ব্যতিক্রম হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাওলানা আজাদী এজেন্সি মালিকদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, যেভাবে এই পেশার প্রতি মানুষের আস্থা হারাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। সময় থাকতে অনিয়মের সমাধান করতে না পারলে সকলকেই এর খেসারত দিতে হবে।

বাণিজ্যিক নয়, সেবার মানসিকতা নিয়ে হজ্বের কাজ করা উচিত 

মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্রিটেনিয়া এভিয়েশন

দীর্ঘদিন হজ্ব সেবায় নিয়োজিত ব্রিটেনিয়া এভিয়েশন।আলেম ওলামাদের প্রত্যক্ষ পরিচালনায় পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে হজ্বসেবায় নিজেদেরকে নিবেদিত বলে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।

ব্রিটেনিয়া এভিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন হজ্ব সেবার অনিয়ম বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ার ইসলামকে বলেন, ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান হজ্ব। হাজ্বীদের সেবা ও বায়তুল্লাহর মুসাফিরদের যথাযথ মর্যাদা না দিয়ে বাংলাদেশী হজ এজেন্সিগুলোর মুনাফা অর্জনের গলাকাটা মানসিকতা বরাবরই লজ্জাজনক। এজেন্সিগুলো ধোঁকা প্রতারণা ও অতিমুনাফালোভী মানসিকতা পরিহার না করলে সুস্থ পরিচ্ছন্ন মানসিকতার কোনো লোক হজ্ব সেবায় আসবে না। তথা কথিত হজ্ব সেবকরা ব্যবসার মানসিকতা নিয়ে নানা সিন্ডিকেটও গড়ে তুলেছে। সবার প্রিতি বিনীত অনুরোধ হজ্বসেবার মত পবিত্র ইবাদতের প্রতি মানুষের খারাপ ধারণা সৃষ্টি করবেন না।

সেবার মানসিকতা নিয়ে এজেন্সি মালিকরা এগিয়ে আসবেন বলে আশা করি।

এফএফ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ