শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


‘দাড়ি টুপি বোরকা দেখে দেখে উচ্ছেদ করা হচ্ছে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

asham

আওয়ার ইসলাম: আসাম সরকার বেছে বেছে দাড়ি-টুপি-বোরকা দেখে মুসলমানদের উচ্ছেদ করছে বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভি’র কাছে অভিযোগ জানিয়েছে জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দ। কাজিরাঙ্গা উদ্যান এলাকা থেকে মুসলমানদের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে ওই অভিযোগ করা হয়েছে।

রাজ্য জমিয়তের প্রধান ও সংসদ সদস্য মাওলানা বদরউদ্দিন আজমলের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল বুধবার এ ব্যাপারে মুখতার আব্বাস নাকভি’র হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন।

রাজ্য সরকার সন্দেহজনক ভোটার নামে সংখ্যালঘু মুসলমানদের একনাগাড়ে হয়রানি করছে বলে জমিয়তের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

মাওলানা বদরউদ্দিন আজমল গণমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রীয়মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভি সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন বলে তাদের আশ্বাস দিয়েছেন।

মাওলানা আজমল বলেন, রাজ্যে সাবেক সরকারের আমলে সন্দেহজনক ভোটারের সংখ্যা ছিল আড়াই থেকে ৩ লাখ। কিন্তু নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর অস্বাভাবিকভাবে সন্দেহজনক ভোটারের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ হয়েছে। সন্দেহজনক ভোটারের নামে পুলিশ গর্ভবতী নারীদের ওপরেও অত্যাচার চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

আসামের কাজিরাঙ্গা থেকে মুসলমানদের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মাওলানা আজমল বলেন, সেখানে টুপি-দাড়ি এবং বোরখা পরা মানুষদের টার্গেট করে উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

তিনি গুয়াহাটি মহানগরীতে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান না চালিয়ে কাজিরাঙ্গাতে কেন তা করা হল সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, কাজিরাঙ্গাতে উচ্ছেদ হওয়া মানুষদের ৪ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা থাকলেও ৪৫ দিন পার হলেও এক টাকাও দেয়া হয়নি। উচ্ছেদ হওয়া লোকেরা ১৯৫০/৬০ সাল থেকে কাজিরাঙ্গায় বাস করছিলেন বলেও তিনি জানান।

গত সেপ্টেম্বরে কাজিরাঙ্গা উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ বসতি উচ্ছেদ চালানো হলে সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলমানরা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে।

এদিকে, আসামের অর্থ-শিক্ষা-স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার একটি সাম্প্রদায়িক মন্তব্যকে ঘিরেও মুসলমানদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

আরো পড়ুন: আলহামদুলিল্লাহ আমার লিখিত কিতাব এখন দামেশ্কের ইউনিভার্সিটিতে পড়ানো হয়

গণমাধ্যমে প্রকাশ, গত মঙ্গলবার একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, এক লাখ হিন্দু বাংলাদেশি শরণার্থী আসামের শত্রু নয়। ৫৫ লাখ ধর্মীয় সংখ্যালঘু আসামের শত্রু। রাজ্যে ১১ টি জেলায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু বলে উল্লেখ করে ২০২১ সালে আরো ৬ টি জেলায় আসামিয়দের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে বলে হিমন্ত বিশ্বশর্মা মন্তব্য করেন।

মুসলিম আগ্রাসন থেকে আসামিয় জাতিকে রক্ষা করার জন্য হিন্দু বাঙালিদের নাগরিকত্ব দেয়া প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তার এ ধরনের মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলেও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে আসামের জিন্না বলে অভিহিত করে তিনি ধর্মের ভিত্তিতে আসামকে দুইভাগ করতে চাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিধায়ক পদ খারিজ করার দাবি জানানোর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এআইইউডিএফ নেতা আমিনুল ইসলাম।

রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী নজরুল ইসলাম বলেছেন, হিমন্ত বিশ্বশর্মা আরএসএসের শেখানো বুলিই আওড়াচ্ছেন। তার মন্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ