আলেমদের সম্পর্কে তরুণদের অশালীন সমালোচনা, মন্তব্য ইদানীং বেড়ে গেছে। ফেসবুক ছাড়িয়ে এই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ছে পুরো নেটজগতে। কওমি অঙ্গনের চিন্তাশীল তরুণদের বৈঠক বা বক্তব্যে এসব প্রবণতার বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ উঠেলেও কার্যক্ষেত্রে এই প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না। তাই দিনদিন বাড়ছে ব্যক্তিবিদ্বেষ। দূরত্ব বাড়ার পাশাপাশি বাড়ছে মতানৈক্য। গত ২৯ অক্টোবর শনিবার হযরত আল্লামা আহমদ শফী চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে তার হাতে বায়াত গ্রহণ করেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। বিষয়টি নিয়ে বিদ্বেষমূলক ভাবে কেউ কেউ অপপ্রচার ও অপসাংবাদিকতা করে। এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম ওমর গণি এম ই এস ডিগ্রী কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন ফারুক ফেরদৌস।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ফেসবুকের উঠতি কিছু তরুণ ও কিছু নিউজ পোর্টাল সাম্প্রতিককালে অপসাংবাদিকতার যে নজীর স্থাপন করছে এটা দুঃখজনক। নিউজপোর্টাল ও ফেসবুকে যেভাবে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ হচ্ছে তা এসব ওয়েবসাইটের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। চিন্তা ভাবনা ছাড়াই বড় বড় মানুষ সম্পর্কে অশোভন, অশালীন মন্তব্য করা হয় এসবে। আমাদের সবার সংযত আচরণ করা দরকার। ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার।
তিনি মনে করেন, এর বিরুদ্ধে সবাইকে অনলাইনেই সোচ্চার হতে হবে। শক্ত প্রতিবাদ করতে হবে।
আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী সম্প্রতি আহমদ শফীর হাতে বায়াত হয়েছেন, এটা খুবই ইতিবাচক ঘটনা। আল্লামা আহমদ শফী এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমে দ্বীন। বাংলাদেশের উম্মুল মাদারিসের হাটহাজারির শাইখুল হাদিস ও পরিচালক, সর্বোপরি তিনি শাইখুল ইসলাম হোসাইন আহমদ মাদানীর খলিফা। নূর হোসাইন কাসেমী দেওবন্দে হোসাইন আহমদ মাদানীর কাছে হাদিস পড়েছেন। তাই তিনি ওই সিলসিলার একজনের কাছে বায়াত হয়েছেন এটা খুবই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, মাওলানা কাসেমী এত বড় আলেম হয়েও, মুফতি মাহমূদ গঙ্গোহি রহ.-এর মাযাজ হওয়া সত্বেও আরেকজন আলেমের হাতে বায়াত হয়েছেন এটা অনুকরণীয় আদর্শ। এই বিষয়টাকেও নেতিবাচকভাবে দেখা যেতে পারে তা আমাদের বোধের বাইরে।
[caption id="attachment_15979" align="aligncenter" width="550"] মাওলানা কাসেমী এত বড় আলেম হয়েও, মুফতি মাহমূদ গঙ্গোহি রহ.-এর মাযাজ হওয়া সত্বেও আরেকজন আলেমের হাতে বায়াত হয়েছেন এটা অনুকরণীয় আদর্শ। এই বিষয়টাকেও নেতিবাচকভাবে দেখা যেতে পারে তা আমাদের বোধের বাইরে। [/caption]
মাঝে মাঝে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সম্পর্কেও বিরূপ মন্তব্য চোখে পড়ে উল্লেখ করে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, হতে পারে কিছু আলেমের সাথে তার এখতেলাফ আছে। তাই বলে অল্প বয়স্ক ছেলেরা যেভাবে তার সম্পর্কে মন্তব্য করে এটা দুঃখজনক। কোনো বিষয়ে তার ভিন্নমত, নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে তার সম্পর্কে এরকম মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, মন্তব্য করার সময় আরও শালীন ও মার্জিত হওয়া দরকার। ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বাংলাদেশের অন্যতম মেধাবী আলেম। দারুল উলুম দেওবন্দের কৃতী ছাত্র। হতে পারে আমার মতের সাথে তার মত মেলে না। তাই বলে তার চরিত্রহনন, দালাল বলা এজেন্ট বলা এগুলো কাম্য নয়। এই ধরনের উগ্রপন্থাকে আমাদের সম্মিলিতভাবে প্রত্যাখ্যান করা দরকার বলে মনে করেন অনলাইনে সক্রিয় এই বিদগ্ধ আলেমে দ্বীন।
আরআর
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী সম্পর্কে অযাচিত অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে আওয়ার ইসলামের প্রতিনিধি কথা বলেছেন আল্লামা কাসেমীর সঙ্গে, পড়ুন আগামী কাল...