শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ফিলিস্তিনের বৈরী নেতাদের নজিরবিহীন বৈঠক: বড় পরিবর্তনের আভাস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

hamas-abbasআওয়ার ইসলাম: ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের শীর্ষ নেতা খালেদ মাশআল এবং ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কাতারের রাজধানী দোহায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তারা আগের জাতীয় সংহতি চুক্তির ধারাগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে একমত হয়েছেন।

অভাবনীয় এ বৈঠকে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরের প্রধান খালেদ মাশআল জাতীয় সংহতি চুক্তির ধারাগুলো বাস্তবায়নে আশাবাদ ব্যক্ত করে এটাকে তিনি ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এর আগে জাতীয় সংহতি চুক্তি বাস্তবায়ন দেখাশোনার জন্য ফাতাহ ও হামাসকে নিয়ে গঠিত যৌথ কমিটির সদস্যরা এ ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করেছেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দখলদার ইসরাইলের জুলুম নির্যাতনের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে গেছে। অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণ, ফিলিস্তিনিদের ওপর দমন-পীড়ন, হত্যা চলছেই। এ কারণে ফিলিস্তিনের সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠন ইসরাইলি আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য জাতীয় সংহতি বা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য হামাস ও ফাতাহ দু'পক্ষের প্রতিই আহ্বান জানিয়েছে। অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানের জন্য হামাস ও ফাতাহর মধ্যকার বিরোধের অবসান ঘটানোর দাবিতে বিভিন্ন শহরে ফিলিস্তিনের জনগণ সভা সমাবেশ করছে।

ঐক্যের জন্য এভাবে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসায় ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট ও ফাতাহ আন্দোলনের প্রধান মাহমুদ আব্বাস শেষ পর্যন্ত জাতীয় সংহতি বা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে হামাস নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন, একই সময়ে সংসদ ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠান, পিএলও'র গঠন কাঠামোয় সংস্কার সাধন, গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সব দলের অংশগ্রহণ, নিরাপত্তা বাহিনী গঠন প্রভৃতি বিষয়ে ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। এ মতবিরোধ অবসানের লক্ষ্যে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় ২০১৪ সালের এপ্রিলে হামাস ও ফাতার মধ্যে জাতীয় সংহতি চুক্তি সই হয়েছিল। এর পর ওই বছরেই জুনে জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের প্রতিনিধিরা স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে শপথ পাঠ করেন। কিন্তু ফাতাহ ও স্বশাসন কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ ও প্রভাবের কারণে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারায় শুরু হয় তীব্র অভ্যন্তরীণ সংকট।

যাইহোক, বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের ষড়যন্ত্র যখন চরম আকার ধারণ করেছে তখন কাতারে হামাস ও ফাতাহর শীর্ষ নেতাদের মধ্যকার সাক্ষাত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এর ফলে জাতীয় সংহতি চুক্তি বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  এ ছাড়া, বায়তুল মোকাদ্দাসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের আশাও অনেকখানি বেড়ে গেছে।

সূত্র: পার্স টুডে

এফএফ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ