শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ভাবছিলাম চামড়া বিক্রির টাকায় গরিব ছাত্রদের একটু ভালো খাওয়াবো তা আর হলো না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

niamatullahএবারের চামড়া শিল্পে ধ্বস দেশের কওমি মাদরাসাগুলোকে বড় রকমের চিন্তায় ফেলেছে। মাদরাসাগুলোতে বিনামূল্যে পড়ুয়া এতিম গরিব ছাত্রদের জন্য বেশ টেনশনে দিন পাড় করছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, অতীতের যে কোনো বছরের চেয়ে এবারের চামড়া শিল্পে ব্যাপক অবনতি হয়েছে। অথচ মাদরাসাগুলো কুরবানির চামড়ার অর্থে বছরের কয়েকটা মাস দিব্যি চালিয়ে দেয়। তাদের মতে অত্যন্ত কৌশলেই মাদরাসাগুলোকে চাপে ফেলার একটা উপায় হিসেবে এবারের চামড়া শিল্পের অবনতি ঘটানো হয়েছে।
 .
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ঢাকা’র উত্তরায় অবস্থিত বায়তুল মোমিন মাদরাসার প্রিন্সিপাল, গাওয়াইর জামিয়া ইসলামিয়া’র মুহাদ্দিস এবং মাসিক যুবকন্ঠের সম্পাদক মুফতি নেয়ামতুল্লাহ আমিনের সঙ্গে।
 .
তিনি বলেন, এবারের চামড়ার দাম নিয়ে বড় কষ্ট মনে। ভেবেছিলাম চামড়া কালেকশন করে গরিবদের একটু ভালো খাওয়াবো! তা তো আর হলো না। আমার মাদরাসার বোডিং এর অবস্থা ভালো না। একবেলা খাবার থাকলে আরেক বেলার জন্য রাস্তায় নামতে হয়। চিন্তা তো একটু বেড়েই গেল।
.
শুধু কি আপনার মাদরাসার অবস্থায় এমন নাকি অন্যরাও এ দুর্ভাগ্যের শিকার জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলোর অবস্থাই ভালো না। কিছু মাদরাসা যাদের অবস্থা একটু ভালো, তাদের ডোনারদের হয়রানি করা হচ্ছে। বারিধারা মাদরাসার ছাত্ররা ২২০০ টাকা করে খাবার বাবদ দেয়, বেতন বাবদ ৫০০। নিরুপায় হয়ে টাকা নিতে হচ্ছে। এমন রোম আছে যেখানে ২০ টা ফ্যান দরকার অথচ আছে ৪ টি। অবস্থা অনেক করুণ।
.
niamatএবার কতগুলো চামড়া সংগ্রহ করতে পেরেছেন? কত মুনাফা হলো জানতে চাইলে মুফতি নেয়ামতুল্লাহ বলেন, ১৫০ পিস চামড়া সংগ্রহ করেছি। বিক্রি করেছি তো ১১২৫ টাকা করে। কিন্তু চামড়া সংগ্রহের পেছনে আমাদের খরচ হয়েছে অনেক।
.
কী খরচ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পোস্টার ছাপানো ও লাগানোর খরচ প্রায় ১০ হাজার টাকা। ছুড়ি কেনা ১৫ পিস ৯ হাজার টাকা। গাড়ি ভাড়া ৩ হাজার টাকা। চামড়া কেনা গড়ে ৭/৮ শ টাকা। বিক্রি করলাম ১১২৫ টাকা তাহলে এখন থাকল কয় টাকা? আমার হিসাবে ১০০ জন ছাত্র ১০ দিন পরিশ্রম করে মোট লাভ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তাহলে একজন ছাত্রের ভাগে পড়ল ৫০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে ১০০ জন ছত্রের ১৫ দিনের খাবারের খরচ হবে।
.
এখন উপায় কী? কী ভাবছেন আপনারা?
তিনি বলেন, এখন আমার মনে হয়, চামড়ার উপর নির্ভরতা আমাদের কমিয়ে আনতে হবে। আমরা এটার উপর অনেক জোর দিয়েছিলাম। এতে আমাদের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের অন্য আয়ের উৎস বের করতে হবে।
.
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: রোকন রাইয়ান


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ