বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


কিছু বুদ্ধিবেশ্যার মৌসুমি পশুপ্রেম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

our-islam-chintito-copyচিন্তিত চিন্তাফা : আপনার বাড়িতে মেহমান আসবে, গোস্তেরই আছে পাঁচরকমের আইটেম, যে ছুটা বুয়াটি সারাদিন আপনাকে খাবার প্রস্তুত করতে সহায়তা করছে, তাকে হয়তো রাতে খাইয়ে দেবেন কিন্তু ৯৯% ভাগ সময়ে আপনি ভাববেন না, বুয়াটির ছেলেমেয়ে ছাড়া আপনার বাড়ির পোলাও গোস্ত খেতে তার কেমন লাগে। কিন্তু কুরবানীর দিন, এই বুয়াটির জন্য এক পোটলা গোস্ত বরাদ্দ থাকে। সেদিন আপনার বাড়িতে যে গোস্ত রান্না হয়, তার বাড়িতেও সেই একই গরুর গোস্ত রান্নার বন্দোবস্ত হয়। আপনার গোস্তের প্যাকেট সহ যে বাজারটা দাড়োয়ান বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যায়, তার বাসায় হয়তো গোস্ত রান্নাই হয়না কখনও। কিন্তু কুরবানীর সময় কিন্তু আপনিই যেচে তার ব্যবস্থা করেন।

আপনি মাসে কয়েকবার দামী রেস্টুরেন্টে গিয়ে ফ্রাইড চিকেন আর বিফ কারি গিলেন। কখনও রাস্তার ভিখারীদের নিয়ে সেসব খাবার খাওয়ার কথা চিন্তা করেন না, কিন্তু এই ভিখারীগুলো কুরবানীর দিন অধিকার নিয়ে আপনার দরজায় আসে, আপনিও খুশী মনে আপনার টাকায় কেনা গরুর একাংশ এদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। আপনার বাসায় মাছে অরুচি লাগলেই গোস্ত রান্না হয়, কিন্তু সেসব খেতে গিয়ে গ্রামের গরীব লোকদের তরকারি ছাড়া ভাত খাওয়ার কথা আপনি ভাবেন না, কিন্তু কুরবানীর সময় অনেকেই গ্রামে কুরবানী দেন, গ্রামের গরীব মানুষগুলো গোস্ত খাওয়ার উপলক্ষ পায়।

আর কিছু শয়তান সারাবছর কবজি ডুবিয়ে গোস্ত খেয়েও কুরবানীর সময় পশু হত্যায় ত্যাগ খুজে পায়না। তাদের মনে পশুপ্রেম নিয়ে আচমকা আবেগের ঝড় বয়ে যায়। এইসব বুদ্ধিবেশ্যাদের অনেকের দুইদিনের মদ ও মেয়েমানুষের খরচে একটা পরিবারের মাসের খরচ উঠে যায় এও আমরা জানি। অথচ এরা কুরবানীর দিন উল্লাস দেখে ত্যাগ দেখেনা। দেখেনা এই কোটি কোটি মানুষের ঘরে সেদিন একদিনের জন্য হলেও আনন্দটুকু। আর একটা উপলক্ষ দেখান, যেখানে টন কে টন গোস্ত গরীবদের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে বিলানো হয়। আর একটা ধর্ম কিংবা সিস্টেম দেখান যেখানে বিত্তশালীদের সম্পদের একটা বিশাল অংশ বাধ্যতামূলকভাবে গরীবের মধ্যে বন্টন করা হয় জাকাতের মত।

তাই এদের কাছে আমাদের মানবতা ও পশুপ্রেম শিখার কিছুই নেই। আমরা যার কাছে মানবতা শিখেছি তিনি ছিলেন মানবতা ও দয়ার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। আর তিনি যাঁর কাছ থেকে মানবতা ও দয়ার ব্যাপারে নির্দেশাবলী পেয়েছেন, তিনিতো এই মানুষ ও পশু সৃষ্টিই করেছেন। প্রতিনিয়ত তাদের রিজিকের ব্যবস্থা করছেন। একটা মশা থেকে হাতীর, একটা পিপড়া থেকে মানুষের। তাঁর চেয়ে এদের ভালোবাসা বেশী হবে এমন ভাবাটাও বোকামী। কিন্তু আমাদের ঈমানের দুর্বলতার কারণেই হয়তো কিছুটা বিভ্রান্ত ও বিব্রত হয়ে যাই।

এফএফ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ